নিজস্ব প্রতিবেদন : ভ্রমণপিপাসু পর্যটকরা বছরের বিভিন্ন সময় পাড়ি দেন পাহাড়ের দেশ দার্জিলিংয়ে (Darjeeling)। শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষা সব মরশুমেই বিভিন্ন জায়গা থেকে পর্যটকদের এই শৈল শহরে আসতে দেখা যায়। তবে মরশুমের নিরিখে পর্যটকদের ভিড়ের ক্ষেত্রে তারতম্য থাকেই। পাহাড়ের প্রাকৃতিক শোভা ছাড়াও আরও বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানের টানে পর্যটকদের দার্জিলিং আসতে দেখা যায়। এবার এই দার্জিলিংকে পর্যটকদের কাছে আরও আকর্ষণীয় করে তুলতে নতুন এক পদক্ষেপ নিচ্ছে নবান্ন (Nabanna)।
বিভিন্ন পাহাড়ি এলাকায় পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হলো রোপওয়ে (Ropeway)। দার্জিলিংয়ের ক্ষেত্রেও তাই। আগে দার্জিলিংয়ে রোপওয়ে পরিষেবা থাকলেও পরবর্তীতে তা বন্ধ হয়ে যায়। এবার এই রোপওয়ে পুনরায় চালু করার জন্য পদক্ষেপ নিচ্ছে সরকার। যাত্রী সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করে সরকারি এবং বেসরকারি সংস্থার সহযোগিতায় নতুন করে রোপওয়ে চালু করা হবে।
কোথায় চালু হবে রোপওয়ে পরিষেবা? দার্জিলিংয়ে কেবলমাত্র প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য রোপওয়ে ব্যবহার করা হতো এমন নয়। এছাড়াও স্থানীয় বাসিন্দারাও বিভিন্ন কারণে এই রোপওয়ে ব্যবহার করতেন। ১৯৬৮ সালে এমন রোপওয়ে পরিষেবা চালু হয়েছিল চকবাজার থেকে সিংলাবাজার পর্যন্ত। রাজ্য বনদপ্তরের উদ্যোগে এই পরিষেবা চালু হওয়ার পর রক্ষণাবেক্ষণের জন্য তার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল ওয়েস্ট বেঙ্গল ফরেস্ট ডেভেলপমেন্ট সার্ভিস এর হাতে।
প্রথমদিকে এই রোপওয়ে চলত সিঙ্গেল ট্র্যাক জিগ ব্যাক সিস্টেমে। পরে ১৯৯৫-৯৬ সালে ওই সিস্টেমের পরিবর্তন করে চালু করা হয় মনোমেবল গন্ডোলা সিস্টেম। রাম্মাম নদী ও রাম্মাম উপত্যকার উপর দিয়ে যাওয়া এই রোপওয়েতে ২০০৩ সালে একটি দুর্ঘটনা ঘটে। যে দুর্ঘটনায় চারজন পর্যটকের মৃত্যু হয় এবং তারপর থেকেই আট বছর এর পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়েছিল। এরপর ২০১২ সালের ২ ফেব্রুয়ারি পুনরায় এই রোপওয়ে চালু করা হয়, তবে রুট কাটছাঁট করে করা হয় ২.৩ কিলোমিটার।
এবার এই বন্ধ হয়ে যাওয়া রুটে পুনরায় রোপওয়ে চালু করতে উদ্যোগ নিচ্ছে বনদপ্তর। এর জন্য কোন বেসরকারি সংস্থাকে দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে বলে জানা যাচ্ছে। আমুল সংস্কার করে এই রুট পুনরায় চালু করা হবে। তৈরি করা হবে নতুন টার্মিনাল। এছাড়াও মধ্যবর্তী স্টেশনের সংখ্যা বাড়ানো হবে এবং লাগেজ রাখার জন্য তৈরি করা হবে ক্লক রুম। এর পাশাপাশি যাত্রীদের সুবিধার জন্য করা হবে পার্কিং প্লট। পাশাপাশি পুরো পথ সিসিটিভি ক্যামেরায় মুড়ে ফেলা হবে। বিপদ সংকেত পাঠানোর জন্য থাকবে অ্যালার্ম। এছাড়াও দুর্ঘটনায় কেউ হতাহত হলে থাকবে বিমার ব্যবস্থা।