‘কেউ কাঁচা বাদাম কিনছে না’, জানালেন খোদ ভাইরাল গানের স্রষ্টা ভুবন বাদ্যকর

Laltu Mukherjee

Updated on:

নিজস্ব প্রতিবেদন : ‘আমার কাছে নাইকো বুবু ভাজা বাদাম, আমার কাছে আছে শুধু কাঁচা বাদাম…’, এই দুটি লাইন গেয়ে বাদাম বিক্রি করার সময় ভাইরাল হন বীরভূমের বাদাম বিক্রেতা ভুবন বাদ্যকর। এরপর এই বাদাম বিক্রেতাকে এখন দেখে কে?

ফেসবুক থেকে শুরু করে যে কোন জায়গায় কান পাতলেই এখন শোনা যাচ্ছে ভুবন বাদ্যকরের এই কাঁচা বাদাম গান। শুধু শুনতে পাওয়াই নয়, এর পাশাপাশি এখন তার দুবরাজপুরের লক্ষী নারায়ণপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের কুড়ালজুড়ি গ্রামে রীতিমত ঢল নামছে সেলিব্রেটিদেরও। সম্প্রতি হাস্যকৌতুক ভিডিও ক্রিয়েটর স্যান্ডি সাহাও তার বাড়িতে এসে ভিডিও তৈরি করে গিয়েছেন।

এসবের মাঝেই পশ্চিম বর্ধমানের আসানসোলের বার্নপুরের কয়েকজন তরুণ-তরুণী ভুবন বাদ্যকরের সঙ্গে দেখা করেন। একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সদস্য হিসাবে তারা তার সঙ্গে দেখা করেন এবং তার হাতে একটি পিয়ানো তুলে দেন। এছাড়াও ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার তরফ থেকে শাল, কম্বল, ফুল ও মিষ্টি দিয়ে ভাইরাল এই বাদাম বিক্রেতাকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়।

বাদাম বিক্রি করে জীবনযাপন করতে হলেও বীরভূমের এই বাদাম বিক্রেতার মধ্যে রয়েছে শিল্পসত্তা। যে কারণে তিনি রোজগারের তাগিদে যে কোন পেশা বেছে নিলেও সেই শিল্পস্বত্ত্বাকে বাঁচিয়ে রেখেছিলেন। বাদাম বিক্রির মাঝেই রচনা করেছিলেন গান এবং তাতে নিজেই সুর দিয়ে বাদাম বিক্রির ফাঁকে ফাঁকে সেই গান গেয়ে ফেলতেন।

তবে এই সোশ্যাল মিডিয়ায় এত প্রচার হয়েও তার কোনো লাভ হয়নি বলেই তিনি এবং তাঁর প্রতিবেশীরা দাবি করেছেন। বরং লাভের পরিবর্তে তাদের এই মুহূর্তে আয় হারাতে চলেছে। আয় হারানোর কারণ হিসাবে প্রথমেই রয়েছে ব্যবসায় বের হতে না পারা। এছাড়াও স্থানীয়রা ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কাছে আরও একটি বড় অভিযোগ করেছেন।

স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কাছে তারা অভিযোগ করেছেন, “ভাইরাল হওয়ার পর ভুবন বাদ্যকর ইউটিউবার ও ব্লগারদের দৌরাত্ম্যে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন। এই ব্লগাররা তার বাড়িতে প্রতিদিন জড়ো হচ্ছেন, তাকে দিয়ে গান করাচ্ছেন, এই ভিডিও তারা তুলে চলে যাচ্ছেন। কিন্তু গানের স্রষ্টার ভাঁড়ার শূন্যই থেকে যাচ্ছে। এমন কি গান গাইতে গাইতে ভুবন বাদ্যকরে গলার অবস্থা খারাপ হয়ে যাচ্ছে। আমরা চাই এই অত্যাচার বন্ধ হোক।”

অন্যদিকে এই পরিস্থিতিতে সুরের ভুবন বাদ্যকর জানিয়েছেন, “আমাকে অনেকে ব্যবহার করছে। ব্লগারদের অত্যাচারে গলা বসে গিয়েছে। অসুস্থ হয়ে পড়েছি। ভাইরাল হওয়ার পর একদিন বাদাম বিক্রি করতে গিয়েছিলাম (তখন উনি নিজেই জানতেন না ভাইরাল হয়েছেন)। কেউ কিনলই না। সবাই বলল কাকু আপনি তো ভাইরাল হয়ে গিয়েছেন। গান শোনান। তারপর থেকে আর বাদাম বিক্রি করতে পারিনি।”