নিজস্ব প্রতিবেদন: গাছ না কেটেই, গাছ নষ্ট না করেই চলছে কাজ। কংক্রিটের বড় বড় বাড়ি হোক অথবা কোন উন্নয়নমূলক প্রকল্পের কাজ, একটা সময় ছিল যখন এই সকল কাজের ক্ষেত্রে বলিদান দেওয়া হতো একের পর এক গাছেদের। তবে এবার যুগ বদলেছে, বদলেছে গাছেদের বলিদান দেওয়ার সময়ও। এখন আর গাছেদের সরাসরি বলিদান না দিয়ে সেই গাছকে অন্যত্র সরিয়ে প্রতিস্থাপন করার মধ্য দিয়েই চলছে উন্নয়নমূলক কাজ। ঠিক সেই রকমই বীরভূমের ডেউচা পাঁচামি কয়লা খনি এলাকায় গাছেদের প্রতিস্থাপন করার মধ্য দিয়ে কয়লা উত্তোলনের প্রাথমিক কাজ শুরু হয়েছে।
ডেউচা পাঁচামি প্রস্তাবিত কয়লা শিল্পকে বাস্তবায়িত করার জন্য প্রথম পর্যায়ে ৩২৬ একর জমির নিচ থেকে ব্যাসল্ট শিলা অর্থাৎ কালো পাথর উত্তোলনের কাজ শুরু হয়েছে। এই প্রস্তাবিত এলাকায় মোট ৯৮০ টি গাছ রয়েছে। যে সকল গাছের মধ্যে বহু গাছ রয়েছে যেগুলি অনেক প্রাচীন। মহুয়া, সাল, সেগুন, অর্জুন, সিরিস সহ বিভিন্ন ধরনের গাছ রয়েছে। তবে এই সকল একটি গাছকেউ নিধন না করেই চলছে প্রকল্পের কাজ।
আরও পড়ুন: Uttarkanya: নেই বৈদ্যুতিক পরিদর্শক, ৩০০ কোটির উত্তরকন্যা এখন শুধুই ভাওতা?
এই সকল গাছগুলিকে একে একে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে তাদের জায়গা থেকে অন্ততপক্ষে এক কিলোমিটার দূরে। যেখানে ইতিমধ্যেই বড় বড় গর্ত করে রাখা হয়েছে। অত্যাধুনিক বিভিন্ন মেশিনের মাধ্যমে প্রথমে গাছগুলির চারদিকের মাটি সরিয়ে ফেলা হচ্ছে। তারপর শিকড়ের 75% কেটে ফেলা হচ্ছে। গাছের ডালপালাও কেটে অনেকটাই পরিষ্কার করা হচ্ছে। এরপর সেই সকল গাছের চিকিৎসা অর্থাৎ যাতে নতুন করে শিকড় গজায় তার জন্য প্যারাব্যানজানিক হাইড্রোক্সি এসিড ও ইন্ডোল এসিড দেওয়া হচ্ছে। এরপর হাইড্রোলিক ক্রেনের মাধ্যমে সেগুলিকে তুলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে প্রতিস্থাপনের জায়গায়।
জেলাশাসক বিধান রায় জানিয়েছেন, গাছগুলিকে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গা সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে প্রতিস্থাপন করার সময় তারা পূর্বের জায়গায় যেভাবে ছিল অর্থাৎ যার মুখ যেদিকে ছিল ঠিক সেই ভাবেই প্রতিস্থাপন করা হচ্ছে।