রেশন নিয়ে মাতব্বরি নয়, দলের জেলা সভাপতিদের কড়া বার্তা মুখ্যমন্ত্রীর

নিজস্ব প্রতিবেদন : লকডাউন যত দীর্ঘ হচ্ছে তত নিম্ন মধ্যবিত্ত মানুষ ও খেটে খাওয়া মানুষদের মুখ বিবর্ণ হয়ে উঠছে। কারণ পুঁজি শেষ! কাজ বন্ধ! খাবে কী? এই চিন্তা যখন একমাত্র চিন্তা হয়ে দাঁড়িয়েছে সেই সময় কিছু রেশন ডিলাররা শুরু করেছেন কালোবাজারি করে চলেছেন। দুর্নীতির ফলে সাধারণ মানুষ ভাগের ভাগ পাচ্ছেন না! বাধ্য হয়ে পেটের দায়ে পথে নামছেন মানুষ! একে করোনা, অন্যদিকে খিদে, এই দ্বৈরথ যুদ্ধে লড়তে লড়তে তারা ক্লান্ত। তবে অভিযোগ শুধু রেশন ডিলারদের নিয়েই নয়, অভিযোগ দলের রয়েছে দলের কর্মীদের বিরুদ্ধেও। বারবার যা নিয়ে সরব হয়েছে বিরোধীরা। এই দুর্নীতির জন্যই রেশন দফতরের প্রধান সচিবকে সরিয়ে দেওয়া হয়। রাজ্যের নানা প্রান্তে ক্ষুব্ধ জনতা রেশন ডিলারদের বাড়ির সামনে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে।

রেশন দুর্নীতির খবর মুখ্যমন্ত্রীর কানেও পৌঁছেছে। এ নিয়ে তিনি রীতিমতো ক্ষুব্ধ। শুক্রবার তিনি এই নিয়ে দলীয় বৈঠক ও করেন ভিডিও কনফারেন্সে। সেখানে তিনি স্পষ্ট বলে দেন, রেশন নিয়ে মাতব্বরি তিনি একদম সহ্য করবেন না। দলীয় সূত্রে খবর এদিন মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট নির্দেশ দিয়ে বলেন, “সরকারের পয়সায় মাতব্বরি করা বন্ধ কর! রেশন দিতে হলে নিজেদের পয়সায় দাও। যে দলেরই হোক না কেন রেশন নিয়ে কেউ বেয়াদপি করলে সরকার তাকে ছাড়বে না।”

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এইদিন আরও বলেন, “ত্রাণ দিতে হলে নিজেদের পয়সায় দিন। রেশন দেওয়া সরকারের কাজ। সরকারের রেশন সামগ্রী দলীয় ত্রাণ তহবিলে লাগাবেন না।”

মুখ্যমন্ত্রী এদিন আরও বলেন, করোনা সংক্রমণ রুখতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখুন কিন্তু জনগণের সাথে দূরত্ব তৈরি করবেন না। দূরত্ব বজায় রেখেই করুন জনসংযোগ। বিজেপি রেশন দুর্নীতি নিয়ে রেশন ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার মত অভিযোগ করে। এই অপপ্রচার রুখতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করার পাশাপাশি মানুষের পাশে দাঁড়ানোর কথা ও বলেন মমতা।বিজেপির একটানা সমালোচনা মূলক অপপ্রচারের বিরুদ্ধে মমতা বলেন, “আপনারা এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান। কেন্দ্রের চালের গুনগত মান আমাদের চালের থেকে খারাপ। কেন্দ্র কিছুই দিচ্ছে না ঠিকমত, সেটা মানুষকে বোঝাতে হবে। তবু টানা রেশন নিয়ে নেগেটিভ প্রচার করছে বিজেপি।” সূত্রে থেকে পাওয়া খবর অনুযায়ী ইতিমধ্যেই দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত রেশন ডিলারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এদিন ভিডিও কনফারেন্সে তিনি আরও বলেন, পরিযায়ী শ্রমিকদের মধ্যে যারা ফিরেছেন তারা যেন কোয়ারেন্টাইনে থাকে তা নজর রাখতে হবে।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গতকালের দলীয় বৈঠককে কটাক্ষ করে রাজ্য বিজেপির অন্যতম সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু বলেছেন, “গোটা তৃণমূল পার্টিটা দখল করে আছে লুঠেরারা। দেড় মাসের চাল, গম লুঠ হয়ে যাওয়ার পর দিদির টনক নড়েছে! বাংলার মানুষ যেন কিছু বুঝতে পারছেন না! কারা লুঠ করেছে আর কার নির্দেশে করেছে।”