Tuhin Dey: হুইলচেয়ারে বসে আকাশছোঁয়ার স্বপ্ন, অসম্ভবকে সম্ভব করলেন এই যুবক

Prosun Kanti Das

Published on:

Advertisements

Tuhin Dey: হাত নয়, লেখার সময় চলে মুখ। কাঠ বা প্লাস্টিকের চেয়ার নয়, বসার সময় লাগে হুইলচেয়ার। পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়্গপুরের তুহিন দে (Tuhin Dey) নামক এক উজ্জ্বল প্রাণ একটি বিরল সেরিব্রাল পলসি রোগে আক্রান্ত। যার নাম আর্থ্রোগ্রিপোসিস মাল্টিপ্লেক্স কনজেনিটাল ডিজঅর্ডার, যা জয়েন্ট এবং পেশীর মুভমেন্টকে সীমিত করে। তবে, এই বিরল রোগ দেশের শীর্ষ কলেজে পড়ার স্বপ্নকে কখনও বাধা দেয়নি তুহিনকে। তুহিন ৪২৮ র‍্যাঙ্ক পেয়ে PWD বিভাগে জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষার মেইন পাশ করে ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ ইঞ্জিনিয়ারিং সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি, শিবপুরে কম্পিউটার সায়েন্স ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ভর্তি হন।

Advertisements

স্টিফেন হকিংয়ের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে, তিনি অক্ষমতা সত্ত্বেও মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসেছিলেন এবং মুখে কলম ধরে তার পরীক্ষায় লিখেছিলেন। কিন্তু এইভাবেই পরীক্ষা দিয়ে তিনি ৮৮% শতাংশ স্কোর করেছেন। তুহিন হকিং-এর মতো একজন পদার্থবিদ হওয়ার স্বপ্ন দেখে এসেছেন এবং তার আরও পড়াশোনার জন্য আইআইটি-তে ভর্তি হতে চেয়েছেন। তাকে সর্বদা খাইয়ে দিতে হতো। এমনকি পড়ার সময় বইয়ের পাতা উল্টে দেওয়া থেকে শুরু করে মুখের সামনে পেন-পেনসিল রেখে দেওয়া পর্যন্ত করিয়ে দিতে হতো। কিন্তু এসব তার কাছে সর্বদাই তুচ্ছ মনে হয়েছে।

Advertisements

আরো পড়ুন: মাসে মাসে ৫০০ টাকা, এবার স্কুল পড়ুয়াদের জন্য রইল এক দুর্দান্ত স্কলারশিপের ঘোষণা

তুহিন (Tuhin Dey) কারোর সাহায্য ছাড়াই বা প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের প্রাপ্য অতিরিক্ত সময় ব্যবহার না করে তার ২০১৭ সালে দশম শ্রেণীর পরীক্ষা দেন। তার ব্যতিক্রমী প্রতিভার জন্য দুবার পুরস্কৃত হয়েছেন। তিনি ২০১২ সালে ব্যতিক্রমী কৃতিত্বের জন্য জাতীয় শিশু পুরস্কার এবং ২০১৩ সালে রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির কাছ থেকে প্রতিবন্ধীদের সেরা সৃজনশীল শিশু পুরস্কারে ভূষিত হন। ১৯৯৯ সালে জন্মের পর থেকে তুহিনের ২০টিরও বেশি অস্ত্রোপচার হয়েছে। কিন্তু তা এই ছেলেকে পড়ালেখা থেকে বিরত রাখতে পারেনি।

Advertisements

আরো পড়ুন: কোটি কোটি টাকা মাত্র ২০ বছর বয়সে, কে এই মডেল

৯০ শতাংশ প্রতিবন্ধী তুহিনের জন্য স্কুলে যাওয়া এবং দশম শ্রেণির পরীক্ষা দেওয়া খুব সহজ ছিল না। স্কুলটি তাদের বাড়ি থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরে ছিল এবং তার বাবা-মা তাকে তার বাবার মোটরসাইকেলে করে নিয়ে যেতেন। তার বাবা সমীরণ দে-র রিয়েল এস্টেটের ব্যবসা রয়েছে। তার মা তার ছেলের দিকে মনোযোগ দেওয়ার জন্য তার সরকারি চাকরি ছেড়ে দেন। তারপর দম্পতি আগামী দুই বছর কোটায় থাকার পরিকল্পনা করেন কারণ তাদের একমাত্র সন্তান আইআইটি প্রবেশের জন্য প্রস্তুতি নেবে। অ্যালেন ক্যারিয়ার ইনস্টিটিউট, কোটা তুহিনের কোচিং ফি হিসাবে ১.১৮ লক্ষ টাকা ছাড়ও দেয়।

তুহিন দে (Tuhin Dey) তার দুর্দান্ত একাডেমিক রেজাল্ট এবং পারফরম্যান্সের উপর ভিত্তি করে তিনি সদ্য একটি বিদেশে কোম্পানিতে চাকরি পান। কিন্তু তিনি এখানে থমকে থাকতে চান না। আরো পড়াশোনা করবেন। খড়গপুর থেকে এম.টেক, পিএইচডি সমস্ত কিছু সম্পন্ন করবেন বলেই এই চাকরিটি ছেড়ে দেন। গত ৩ রা ডিসেম্বর, মঙ্গলবার ছিল ‘বিশ্ব প্রতিবন্ধী দিবস’। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন এই উপলক্ষ্যে তার হাতে ‘অ্যাকাডেমিক এক্সেলেন্সি অ্যান্ড ক্রিয়েটিভ ওয়ার্কস্’ সম্মান তুলে দেন।

Advertisements