Howrah Station: যাতায়াতের লাইফ লাইন বলা হয় রেলপথকে। যে মাধ্যমের উপর প্রায় প্রতিদিন ভরসা করে থাকে বহু সাধারণ মানুষ। দেশের বিভিন্ন রেলস্টেশন থেকে ট্রেন ধরে মানুষ দূরদূরান্তে ছুটে চলে। আর এই রেলস্টেশনগুলির মধ্যে অন্যতম রেলস্টেশন হলো হাওড়া রেল স্টেশন। যা ভারতের প্রাচীন বৃহত্তম এবং ব্যস্ততম রেলস্টেশন। এবার সেই রেলস্টেশন নিয়েই একগুচ্ছ নয়া সিদ্ধান্ত নিল পূর্ব রেল। রেললাইন বাড়াতে পদক্ষেপ নিল দুই রেল ব্রিজ ভেঙে দেওয়ার। কিন্তু কেন? কোন দুই প্রাচীন রেল ব্রিজ ভেঙে ফেলা হবে? এতে সাধারণ মানুষ কি সুবিধা পাবে?
গেট ওয়ে অফ ইস্ট হিসেবে পরিচিত হাওড়া রেলস্টেশন (Howrah Station)। যে স্টেশনের ওপর দিয়ে আপ-ডাউন এক্সপ্রেস, লোকাল, মেল সমস্ত মিলিয়ে চলাচল করে প্রায় ৬০০এর বেশি ট্রেন। প্রায় প্রতিদিন এই স্টেশনের উপর দিয়ে দূরদূরান্তে রেল মাধ্যমে ছুটে চলে লাখ লাখ যাত্রী। তবে বর্তমানে জনসংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি যাত্রীসংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে হাওড়া রেলস্টেশনে। যার ফলে নানান সমস্যা তৈরি হচ্ছে হাওড়া স্টেশনে। তাই যাত্রী সামাল দিতেই বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করল পূর্ব রেল।
সাম্প্রতিক পূর্ব রেল তরফে জানানো হয়েছে, হাওড়া স্টেশনে নতুন এবং পুরনো কমপ্লেক্সের প্ল্যাটফর্ম সংখ্যা কম থাকায় ট্রেনের আসা যাওয়ায় সমস্যা দেখা দিচ্ছে। যার ফলে সময়মতো ট্রেন চলাচল হচ্ছে না হাওড়া স্টেশনে। যার ফলে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে যাত্রীদের। আর এই সমস্যা এড়াতেই পূর্ব রেল সিদ্ধান্ত নিয়েছে শতবর্ষ প্রাচীন দুই রেল ব্রিজ ভেঙে ফেলার। আর সেই দুই রেল ব্রিজ হল চাঁদমারি ব্রিজ এবং বেনারস ব্রিজ। মূলত ট্রেনলাইন সম্প্রসারণের জন্যই এই পদক্ষেপ পূর্ব রেলের। ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে কাজ।
খবর রয়েছে চাঁদমারি ব্রিজের তলায় রেললাইন সম্প্রসারণ করা হবে ৬০ মিটার থেকে ১৩৪ মিটার। অপরদিকে বেনারস ব্রিজের নিচে রেললাইন ৩৬ মিটার থেকে বাড়িয়ে সম্প্রসারণ করা হবে ৬৬ মিটার পর্যন্ত। স্টেশনে আসা যাওয়ার রেল লাইনের সংখ্যা এবং সিগন্যালের পয়েন্ট সংখ্যা বৃদ্ধির জন্য ভেঙে ফেলা হবে পুরনো ব্রিজগুলি। তবে যাতায়াতের সুবিধার্থে এই ব্রিজগুলি ভেঙে ফেলার কারণে চাঁদমারি ব্রিজের পাশে তৈরি করা হচ্ছে চওড়া কেবল ব্রিজ।
তবে এখানেই শেষ নয়, পূর্ব রেল তরফে আরো বিশেষ কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে পূর্ব রেলের হাওড়া ডিভিশনের ডিআরএম সঞ্জীব কুমার বলেছেন, যাত্রীদের সুবিধার কথা মাথায় রেখে হাওড়া স্টেশনে ট্রেন সমান প্ল্যাটফর্ম বাড়ানো হচ্ছে। যাতে প্ল্যাটফর্মের বাইরে ট্রেন বেরিয়ে না যায়। তবে ঐতিহ্যবাহী হাওড়া বিল্ডিং অপরিবর্তিত রেখেই তা করা হচ্ছে। এর পাশাপাশি ইন্টারলকিং সিগনাল সিস্টেমের জন্য স্টেশনের রেল ইয়ার্ডের কাছে চারতলা বিল্ডিং বানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে পূর্ব রেল। কবচ সিস্টেম চালু করা হবে বলেও জানিয়েছেন ডিআরএম সঞ্জীব কুমার। এই সমস্ত কিছু খুব তাড়াতাড়ি চালু করার জন্য যুদ্ধকালীন পর্যায়ে কাজ চলছে হাওড়া স্টেশনে (Howrah Station)। যার ফলে আশা করা যাচ্ছে খুব শীঘ্রই যাত্রীদের সমস্যা মিটবে। তবে এই একাধিক পদক্ষেপে যাত্রীরা কতটা সুবিধা পায় সেটাই দেখার।