Cooch Behar: চাকরির পরীক্ষায় সফল হয়ে নজির গড়েছে কোচবিহারের দুই বোন

Prosun Kanti Das

Published on:

Advertisements

Cooch Behar: এপিজে আবদুল কালামের বিখ্যাত উক্তি নিশ্চয়ই মনে আছে সকলের। সূর্যের মতো উজ্জ্বল হতে গেলে আগে নিজেকে পড়তে হবে সূর্যের মতোই। কোচবিহারের (Cooch Behar) পুণ্ডিবাড়ি (Pundibari) গ্রামের পিয়ালী দে এবং সুপ্রিয়া দে’এই কথাটিকেই জীবনের মূল মন্ত্র হিসাবে ধরে নিয়েছে। অভাব এবং দারিদ্রতা কখনোই তাদের স্বপ্নকে নষ্ট করতে পারেনি। দুই বোন অবশেষে নিজেদের স্বপ্নপূরণ করতে সক্ষম হয়েছে। অভাবের আগুনে পুড়ে তারা নিজেদেরকে অনেক বেশি কঠোর করেছে।

Advertisements

দুই বোন সফলতার সঙ্গে পাশ করেছে কেন্দ্রীয় সরকারের স্টাফ সিলেকশন কমিশনের জিডি কনস্টেবল পরীক্ষায়। গ্রামের (Cooch Behar) নাম উজ্জ্বল করেছে এই দুই বোন। পিয়ালী সিআরপিএফ বাহিনীর জন্য এবং সুপ্রিয়া সিআইএসএফ বাহিনীর জন্য নির্বাচিত হয়েছেন। পিয়ালী বলেছে যে, কঠোর পরিশ্রম করলে যে কোন স্বপ্ন অবশ্যই পূরণ হবে। ছোটবেলা থেকে অনেক পরিশ্রম করতে হয়েছে। অবশেষে সেই পরিশ্রমের ফল তারা পেয়েছে।

Advertisements

অভাবকে হারিয়ে পিয়ালী এবং সুপ্রিয়ার এই সাফল্যের পথ মোটেই সহজ ছিল না। অনেক বাধা-বিপত্তি অতিক্রম করে তবেই তারা আজকের এই সাফল্য পেয়েছে। একচালা টিনের ঘরে কোনওরকমে বসবাস পিয়ালীদের। পরিবারে অর্থ উপার্জন করে একমাত্র তাঁদের বাবা রতন দে। পেশায় তিনি হলেন কৃষক এবং এভাবেই সংসারের হাল ধরেছেন তিনি। বাড়িতে সেলাইয়ের কাজ করে কিছুটা সাহায্য করেন পিয়ালীদের মা শান্তি দে। দুই বোনের মা শান্তি দেবী মেয়েদের এই সাফল্যে খুবই খুশি। তিনি বলেন, দুই মেয়ে বরাবর অনেক কষ্ট করেছে এই সফলতা অর্জনের জন্য। পয়সার অভাবে কখনো ভালো টিউশনি তাদের দিতে পারেনি। তবে এলাকার অনেকে বিভিন্ন সময়ে সহযোগিতা করেছেন। কোচবিহার জেলার (Cooch Behar) নাম উজ্জ্বল করেছে পিয়ালী এবং সুপ্রিয়া।

Advertisements

আরও পড়ুন:DubrajpurDubrajpur: উপহার দেওয়ার ইচ্ছেটাই আসল কথা! নতুন বছরের আগেই যা করলেন এই ব্যক্তি

পিয়ালী এবং সুপ্রিয়া দুজনে পার্শ্ববর্তী পুণ্ডিবাড়ি জিডিএল উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করেছেন। পিয়ালী কোচবিহার (Cooch Behar) বিটি অ্যান্ড ইভনিং কলেজ থেকে স্নাতক পাশ করেছেন। সুপ্রিয়া বর্তমানে কোচবিহার আচার্য ব্রজেন্দ্রনাথ শীল কলেজের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী। শুধুমাত্র পড়াশোনাতেই তারা সীমাবদ্ধ ছিল না পাশাপাশি দুই বোনই পুণ্ডিবাড়িতে দুটি মেডিকেল ল্যাবরেটরিতে কাজ করতেন। সেখানকার আয় করা টাকা দিয়েই নিজেদের পড়াশোনার খরচ চালাতেন এই দুই বোন। বাবার উপর চাপ কমানোর জন্যই এই সিদ্ধান্ত তাদের। পড়াশোনা, চাকরি এবং তার সাথে সমানতালে চলত সরকারি চাকরির পরীক্ষার প্রস্তুতি। সাফল্য পাবার এই লড়াই সহজ ছিল না কিন্তু তারা হার মানেনি কখনো। পিয়ালী এবার দ্বিতীয়বার চাকরির পরীক্ষায় বসেছিলেন। অন্যদিকে, বোন সুপ্রিয়া প্রথমবারেই বাজিমাত করে দিয়েছেন।

কোচবিহারের এই গোটা গ্রাম এখন একই পরিবারের দুই বোনের সাফল্যে কাভি খুশি। এলাকায় এর আগেও সরকারি চাকরি পেয়েছে বহু মানুষ। তবে শত প্রতিবন্ধকতাকে উপেক্ষা করে এই দুই বোন যেভাবে লড়াই করেছে তা সত্যি অনুপ্রেরণা দেয় সকলকে। স্থানীয় কিশোরী রুম্পার কথায়, একসঙ্গে চাকরি পেয়েছে এই দুই দিদি এবং মা-বাবা বলত, ওরা সারাদিন কেমন পরিশ্রম করছে। মন দিয়ে পড়াশোনা করলে সবরকম বাধা বিপত্তি অতিক্রম করা সম্ভব। পরিশ্রম করলেই তো মিলবে দুই বোনের মতো সাফল্য, এমনটাই বক্তব্য প্রণীতা, কৃতিকাদের।

Advertisements