অ্যাম্বুলেন্স নেই তো কি হয়েছে! মাকে কাঁধে নিয়ে হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরলেন রাম লক্ষণ

নিজস্ব প্রতিবেদন : অর্থাভাবের পাশাপাশি বুলবুলের দাপট, জোড়া ফলায় সদ্য হাসপাতাল থেকে ছুটি পাওয়া মাকে গাড়িতে চাপিয়ে নিয়ে বাড়ি ফেরা সম্ভব হয়নি দুই সন্তানের। কিন্তু তাতে কি হয়েছে! ইচ্ছা, ভক্তি আর ভালোবাসা সমস্ত বাঁধাকে দূর করে দেয় তা আবার প্রমাণিত।

মাকে বাঁশের সাথে দড়ি দিয়ে দোলনা করে কাঁধে নিয়ে ট্রেনে চড়ালেন সুন্দরবনের দুই সন্তান রাম ও লক্ষণ। তারপর আবার নদী পেরিয়ে কাঁধে চাপিয়ে বাড়ি নিয়ে গেলেন তারা। মাকে এইভাবে হাসপাতাল থেকে বাড়ি নিয়ে এসে দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করলেন গ্রামের এই দুই যুবক। এখন তারা গ্রামের নয়নমণি, গ্রামের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু।

কলকাতার নীলরতন হাসপাতালে গত ১৫ দিন ধরে ভর্তি ছিলেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার রাধানগর গ্রামের বাসিন্দা রমণী মন্ডল। মায়ের চিকিৎসার খরচ যোগানোর পর বুধবার যখন তাদের মা হাসপাতাল থেকে ছুটি পায়। তখন আর তাদের অ্যাম্বুলেন্স অথবা গাড়ি ভাড়া করে মাকে বাড়ি নিয়ে যাওয়ার মতো সামর্থ্য ছিল না। আবার সদ্য সুস্থ হয়ে ওঠা মাকে পায়ে হাঁটিয়ে বাড়ি নিয়ে যাওয়াটাও শোভা দেখায় না। তারপর দুই সন্তান মিলে ভাবনা চিন্তা করে দোলনা করে মাকে বাড়ি নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনামাফিক দোলনাতে করেই তারা মাকে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে আসেন।

রমণী মন্ডলের দুই সন্তান রাম ও লক্ষণের কাছ থেকে জানা গেছে, হাসপাতাল থেকে দোলনা চাপিয়ে তারা আমাকে কাঁধে করে শিয়ালদা স্টেশনে নিয়ে আসেন। তারপর মোটর ভ্যান, নৌকায় করে নদী পার হওয়ার পর আবার কাঁধে চাপিয়ে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে আসেন তারা। সদ্য সুস্থ হয়ে ওঠা মাকে একটুও হাঁটতে দেয়নি তারা।

বর্তমান আত্মকেন্দ্রিক যুগে ইঁদুর দৌড়ের ছোটাছুটি মাঝে মা বাবার প্রতি এমন শ্রদ্ধা ভালোবাসা অনন্য নজির সৃষ্টি করেছে বলেই মত নেটিজেনদের। আর ছেলেদের এমন কর্মকাণ্ডে অত্যন্ত খুশি রমণী মন্ডল।