১০০ বছর আগে ভারত কিভাবে মহামারির সামাল দিয়েছিল, উত্তর খুঁজতে গবেষণা

নিজস্ব প্রতিবেদন : অতীত থেকে মানুষ বরাবরই শিক্ষা নেয়। অতীত অপ্রয়োজনীয় নয়। অতীত ভীষণ রকম প্রয়োজনীয় বলেই আমরা ইতিহাস পড়ি। কারণ অতীতের শিক্ষা, ইতিহাসের শিক্ষা ভবিষ্যতে কাজে লাগে। একজন ব্যক্তি যেমন অতীতে করা ভুল থেকে শিক্ষা নেয়। সমাজও ঠিক তেমনি ইতিহাসে হওয়া কোনো ঘটনা থেকে শিক্ষা নেয়। তাই মাঝে মাঝে অতীতচারী হওয়া ভালো। ব্যক্তি ও সমাজের ক্ষেত্রে অতীত ইতিহাস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

আজ থেকে ১০০ বছর আগে মহামারী আকারে স্প্যানিশ ফ্লু দেখা গিয়েছিল। আর ১০০ বছর পর করোনাভাইরাস। স্প্যানিশ ফ্লু’র সময় ভারত কতকগুলি পদক্ষেপ গ্রহণ করে সেই মহামারীকে সামাল দিয়েছিল। সেই সকল পদক্ষেপগুলি কি এই মহামারীর ক্ষেত্র কাজে লাগানো সম্ভব? জানতে সেই সময়কার ইতিহাস ঘাটাঘাটি করে দেখছে কেন্দ্র।

ইউজিসি বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে শতবর্ষ আগের স্প্যানিশ ফ্লু ও তার প্রভাব নিয়ে গবেষণা করার কথা বলেছে।তারা বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলিকে অনুরোধ করেছে যে প্রত্যেকে যেন ১৯১৮ সালের মহামারীর সময় নিয়ে গবেষণা করে।

সেই সময় তারা কেমন করে পরিস্থিতি ও অর্থনীতি সামাল দিয়েছিল এই দুটি বিষয় লক্ষ্য রেখে এই সময়েও হয়তো পরিস্থিতিকে সামাল দেওয়া সম্ভব। যে সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলি এই সকল বিষয়ে আগ্রহী তারা যেন ৩০ জুনের মধ্যেই একটি গবেষণা দল তৈরি করে সে বিষয়েও আবেদন জানায় ইউজিসি।

শুধু আমাদের রাজ্যে নয় পুরো দেশেই সেই মহামারির উপর গবেষণার কাজ অনেক কম রয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। নানা রকম গবেষণা থেকে যেটুকু জানা যায় ১৯১৮ সালে মুম্বাইতে প্রথম এই ফ্লু দেখা যায়। এরপর এই ফ্লু গোটা দেশে ছড়িয়ে পড়েছিলো।
সেই সময় স্যানিটারি কমিশনার এই মহামারীকে জাতীয় বিপর্যয় বলেছিল। ভারতের তখন এই ফ্লুয়ের ফলে প্রায় ১ কোটি ৮০ লক্ষ মানুষের মৃত্যু হয়। সেই সময় মে-জুলাই মাসে অপর্যাপ্ত বৃষ্টির ফলে আবার দারিদ্র ও দুর্ভিক্ষ তৈরি হয়। একে দুর্ভিক্ষ অপরদিকে মহামারি, দেশের উপর নেমে এসেছিল চরম আর্থিক সংকট। সেই সময় ভারতবর্ষ কি করে মহামারিকে সামলে ছিল তা জানতে পারলে এই সময় অনেকাংশেই উপকার হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ। তাই অতীত ইতিহাস খুঁজে দেখা হচ্ছে, কে বলতে পারে আজকের এই করোনাভাইরাসকে হারানোর চাবি হয়তো লুকিয়ে আছে অতীতের কোনো গর্ভে!

প্রসঙ্গত, ভারতে করোনাতে ৩ লাখ ৩২ হাজার ৪২৪ জন সংক্রামিত এখনো পর্যন্ত। ৯ হাজার ৫২০ জন ইতিমধ্যেই প্রাণ হারিয়েছেন। চীনের উহান থেকে শুরু করে বৃটেনের মতো দেশকে ছাপিয়ে বিশ্বের মধ্যে ভারতে স্থান চতুর্থ হয়েছে করোনা সংক্রমণের নিরিখে।