নিজস্ব প্রতিবেদন : ভারতীয় নাগরিকদের কাছে গণপরিবহনের মেরুদন্ড হয়ে দাঁড়িয়েছে ভারতীয় রেল (Indian Railways)। রেলের উপর আমজনতার ব্যাপক নির্ভরশীলতা, প্রতিদিন দেশের হাফ কোটির বেশি মানুষ ট্রেনের ওপর নির্ভর করে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যাতায়াত করে থাকেন। ভারতীয় রেলের তরফ থেকেও আমজনতার চাহিদার কথা মাথায় রেখে প্রতিনিয়ত নানান পরিবর্তন আনা হচ্ছে।
ভারতীয় রেল প্রতিনিয়ত পরিকল্পনা গ্রহণ করছে কিভাবে যাত্রীদের আরও বেশি সুযোগ-সুবিধা এবং স্বাচ্ছন্দ দেওয়া যায়। ভারতীয় রেল পরিকল্পনা করছে কিভাবে দেশের কোনায় কোনায় রেল নেটওয়ার্ক পৌঁছে দেওয়া যায়। এসব নিয়েই উত্তরবঙ্গ এবং পূর্বভারতের পাহাড়ি এলাকায় রেল পরিষেবা পৌঁছে দেওয়ার জন্য বিরাট এক পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে রেল।
সেবক থেকে রংপো (Sevok Rongpo Rail Project) পর্যন্ত রেল পরিষেবা পৌঁছে দেওয়ার জন্য ভারতীয় রেলের তরফ থেকে তৎপরতার সঙ্গে কাজ করা হচ্ছে। এই দুই স্টেশনের মধ্যে দূরত্ব হলো ৪৫ কিলোমিটার। ৪৫ কিলোমিটারের দীর্ঘ এই লাইনে মোট পাঁচটি রেলস্টেশন থাকবে। এর পাশাপাশি এই লাইনে থাকছে ১৪ টি টানেল এবং ২২ টি ব্রিজ। উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো ৪৫ কিলোমিটার লাইনের মধ্যে ৩৮ কিলোমিটার লাইন যাবে টানেলের ভিতর দিয়ে।
৪৫ কিলোমিটার লাইনের মধ্যে ৩৮ কিলোমিটার লাইন মাটির নিচ দিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি একটি স্টেশন মেট্রো স্টেশনের মতোই মাটির নিচে থাকবে। রেল সূত্রে যা জানা যাচ্ছে তাতে তিস্তা বাজার রেলস্টেশনটি মেট্রো রেলস্টেশনের মত মাটির নিচে থাকবে। এই রুটের ৭৬ শতাংশ কাজ ইতিমধ্যেই ভারতীয় রেল সমাপ্ত করতে সক্ষম হয়েছে এবং বাকি কাজ খুব তাড়াতাড়ি শেষ হবে বলে জানা যাচ্ছে।
সেবক থেকে রংপো পর্যন্ত রেল পরিষেবা চালু হওয়ার পর আবার রেলের তরফ থেকে দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ শুরু হয়ে যাবে। দ্বিতীয় ধাপে এই রেল লাইনের সঙ্গে জুড়ে যাবে সিকিমের গ্যাংটক এবং তারপর সেই লাইন চলে যাবে নাথুলা সহ চীন সীমান্ত পর্যন্ত। রেল কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে দাবি করা হয়েছে, প্রতিকূল পরিবেশের মধ্যেও সারা বছর এই রেললাইন এবং রেল পরিষেবা সমান ভাবে চালু থাকবে।
বর্তমানে ৪৫ কিলোমিটার দীর্ঘ যে রেললাইন তৈরি হচ্ছে তার মধ্যে ৪১.৫৪ কিলোমিটার দীর্ঘ রেলপথ পড়ছে পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিং এবং কালিম্পং জেলার মধ্যে। বাকি পথ অর্থাৎ ৩.৪৪ কিলোমিটার রাস্তা পড়বে সিকিমের মধ্যে। ভারতীয় রেলের এই উদ্যোগের ফলে একদিকে যেমন পর্যটকরা উত্তরবঙ্গ ঘোরার জন্য বিশাল সুবিধা পাবেন ঠিক সেই রকমই প্রতিরক্ষার দিক দিয়েও দেশ আরও শক্তিশালী হবে।