বেসরকারিকরণ থেকে ভাইরাস হাসপাতাল-অনলাইনে পড়াশুনা, কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর একগুচ্ছ ঘোষণা

নিজস্ব প্রতিবেদন : করোনা মোকাবিলায় দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দেশকে আত্মনির্ভর করে তোলার জন্য ২০ লক্ষ কোটি টাকার একটি আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণা করেন। সেই ২০ লক্ষ কোটি টাকার প্যাকেজ গত চারদিন ধরে ব্যাখ্যা করছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। আর রবিবার আর্থিক প্যাকেজের পঞ্চম তথা শেষ দফার ঘোষণা করলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। পঞ্চম দফার এই ঘোষণায় উঠে এলো বেসরকারিকরণ, জেলায় জেলায় ভাইরাস সংক্রান্ত হাসপাতাল তৈরি করা, অনলাইনে পড়াশোনায় জোর ইত্যাদি নানান বিষয়।

এদিনের ঘোষণায় যে সকল বিষয়গুলি উঠে আসে

১) ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে আরও ৪০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করবে কেন্দ্র সরকার। পরিযায়ী শ্রমিকদের কাজের সুযোগ করে দিতে এই পদক্ষেপ কেন্দ্র সরকারের।

২) ভবিষ্যতে অন্য কোন মহামারী রুখতে এবার সমস্ত জেলায় ভাইরাস সংক্রান্ত একটি হাসপাতাল তৈরি করবে সরকার। পাশাপাশি গ্রামীণ এলাকায় প্যাথলজি ল্যাবের অভাবকে মাথায় রেখে সরকার এবার প্রত্যেক ব্লকে সরকারি ও বেসরকারি চেষ্টায় পাবলিক হেলথ ল্যাব তৈরি করবে। মনরেগাতে বাজেট ৬১,০০০ কোটি টাকার সঙ্গে অতিরিক্ত ৪০,০০০ কোটি টাকা বৃদ্ধি করা হচ্ছে।

৩) লকডাউনকে মাথায় রেখে পড়াশোনার ক্ষেত্রে বড় পরিবর্তন আনছে কেন্দ্রীয় সরকার। রবিবার অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন বলেছেন, ‘আগে তিনটি চ্যানেল ছিল, এখন আরও ১২টি চ্যানেল যোগ করা হবে পড়াশোনার ক্ষেত্রে। গ্রামের পড়ুয়াদের জন্য প্রযুক্তিকে আরও সহজ করা হচ্ছে। সরকার টাটা স্কাই ও এয়ারটেলের সঙ্গে চুক্তি করে পড়াশোনার ভিডিও চালানোর জন্য। ই-পাঠশালাতে নতুন সিলেবাসের সব ক্লাসের বই যােগ করে দেওয়া হবে।’

৪) সংস্থার দেউলিয়া সংক্রান্ত আইন বদল আনল কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রক। অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন জানিয়েছেন, এতদিন ১ লক্ষ টাকার লোন শোধ করতে পারলে সংস্থার বিরুদ্ধে মামলা শুরু হত। সেই সীমা বাড়িয়ে ১ কোটি করা হল। পাশাপাশি করোনা সংক্রান্ত ধারকে এই আইনের মধ্যে ধরা হবে না। নতুন করে কোন সংস্থার বিরুদ্ধে আগামী এক বছরে দেউলিয়া আইনে মামলা হবে না।

৫) এবার গোটা কেন্দ্রীয় সরকারি ক্ষেত্রগুলিকে বেসরকারি হাতে তুলে দেওয়ার পলিসি নিলো কেন্দ্রীয় সরকার। অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন জানিয়েছেন, কিছু বিশেষ ক্ষেত্রে ন্যূনতম একটি সরকারি সংস্থা থাকবে, বাকিগুলি বেসরকারি সংস্থার হাতে দিয়ে দেওয়া হবে। এই বিশেষ ক্ষেত্রগুলির নামের তালিকা পরে ঘোষণা করা হবে। তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই ঘোষণার ফলে বেশিরভাগ সরকারি চাকরিতে আর কোনো অস্তিত্ব থাকবে না।

৬) বিরোধীদের সঙ্গে কাজ করতে চায় সরকার। পরিযায়ী শ্রমিকদের ব্যাপারে বিরোধী দলগুলোর সঙ্গে একত্রে কাজ করতে চায় কেন্দ্রীয় সরকার। এমনটাই জানান অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। তিনি বললেন, ‘আমি সমস্ত বিরোধী দলকে জানাতে চাই, পরিযায়ী শ্রমিকদের ব্যাপারে আমাদের সকলের একসঙ্গে কাজ করা উচিত। এব্যাপারে আমরা সব রাজ্য সরকারের সঙ্গে মিলে কাজ করি। আমি সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে এব্যাপারে কথা বলতে চাই। আরও গুরুত্ব দিয়ে। এই সমস্যার সমাধান করতে হবে।’

৭) লকডাউনের মধ্যে কেন্দ্রীয় সরকারের কাজের খতিয়ান দিলেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। তিনি বললেন, ‘১৬ মে পর্যন্ত ৮.৯১ কোটি কৃষক পিএম কিষাণ স্কিমের পরিষেবা পেয়েছেন। ৬.৮১ কোটি গ্যাস সিলিন্ডার পিএম উজ্জ্বলা স্কিমের। মাধ্যমে বিনামূল্যে পেয়েছেন। পাশাপাশি ১২ লক্ষ ইপিএফও সদস্য নন-রিফান্ডেবল অ্যাডভান্স সুবিধা পেয়েছেন।’ এছাড়া অর্থমন্ত্রী চাল-ডাল দেওয়ার জন্য খাদ্য দফতরকে ধন্যবাদ দিয়েছেন।