রাম সেতুর আর কী কী নাম রয়েছে! না জানলে মিস করবেন

Antara Nag

Published on:

অন্তরা নাগ : রামায়ণের বর্ণনা অনুযায়ী রামচন্দ্র স্ত্রী সীতাকে রাবণের হাত থেকে উদ্ধার করার জন্য লঙ্কা আক্রমণ করেছিলেন। কিন্তু ভারতবর্ষ এবং লঙ্কার মাঝখানে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল সমুদ্র কিভাবে সেই সমুদ্র পেরিয়ে রামচন্দ্র তার এত বড় সৈন্যদল নিয়ে রাবণের দেশে পৌঁছবেন উপায় বলে দিলেন স্বয়ং সমুদ্র তিনি বানর দলের স্থপতি নলকে সমুদ্রের উপর পাথর দিয়ে সেতু তৈরির নির্দেশ দিলেন। কিন্তু সমুদ্রের জলে পাথর ভাসবে কিভাবে পাথরের উপর রাম নাম লিখে ভাসিয়ে দেওয়া হলো সমুদ্রে। তৈরি হলো সেতু, যার উপর দিয়ে হেঁটে লঙ্কা পৌঁছলেন রাম-লক্ষ্মণ, সুগ্রীব, হনুমান, জাম্বুবানরা।

সেই সেতু আজও নাকি ভারত মহাসাগরের জলে ভাসমান।বিখ্যাত সেই সেতুর নাম, রাম সেতু নামে। তবে নল দ্বারা তৈরি হওয়াতে একে নল সেতুও বলা হয়ে থাকে। তাছাড়া একে আদম সেতুও বলা হয়। এই সেতু তামিলনাড়ুর পামবান দ্বীপকে শ্রীলঙ্কার মান্নার দ্বীপের সাথে যুক্ত করেছে। এই সেতু নিয়ে অনেক বিতর্ক রয়েছে। বিশেষ করে এই সেতুর তৈরি নিয়ে এই সকল বিতর্ক আছে। বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে এই সেতু নাকি প্রাকৃতিক উপায়ে সৃষ্ট। রামের সাথে এর কোনো সম্পর্ক নেই। সত্যিই কি তাই! যদিও আসল কাহিনী নিয়ে আজও রয়েছে বিস্তর রহস্য। রহস্য আছে বলেই আজও মানুষ এই সেতু নিয়ে সমানভাবে কৌতূহলী। তাহলে জানা যাক, রাম সেতু সংক্রান্ত কিছু রোমহর্ষক তথ্য।

জিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া ‘প্রোজেক্ট রামেশ্বরম’ নামে একটি সমীক্ষা চালায়। সমীক্ষায় উঠে আসে যে, রামেশ্বরম এবং শ্রীলঙ্কার অস্তিত্ব আজ থেকে প্রায় পৌনে এক লক্ষ বছর আগেও ছিল। কিন্তু রেডিও কার্বন পরীক্ষা করে দেখা যায় মাত্র ৭০০০ থেকে ১৮০০০ বছর আগে এই সেতু তৈরি হয়। আর ধনুশকোডি থেকে রাম সেতুর মধ্যেকার বালিয়াড়িটি তৈরি হয়েছে মাত্র ৫০০-৬০০ বছর আগে। এই রাম সেতুর দৈর্ঘ্য ৪৮ কিলোমিটার।

বিখ্যাত রাম সেতুর নাম সর্বপ্রথম উল্লিখিত হয় বাল্মীকির রামায়ণে। এই সেতুর কার্বন পরীক্ষা করে দেখা গেছে যে, সেতু খ্রিস্ট পূর্ব ৫০০০ বছর আগে তৈরি যা রামায়নের রচনা কালের সাথে পুরোপুরি মিলে যায়। তবে এটিও সত্যি যে এই সেতু মানবসৃষ্ট তার কোনও পোক্ত বৈজ্ঞানিক প্রমাণ আজও মেলেনি। খ্রিস্টীয় ১৫ শতক পর্যন্ত, এই সেতু পায়ে হেঁটেই পর হয় যেত। রেকর্ড অনুযায়ী, ১৪৮০ সাল পর্যন্ত এই সেতু সমুদ্রপৃষ্ঠের উপরে দৃশ্যমান ছিল।

এর পর থেকে গ্লোবাল ওয়ার্মিং এর কারণে সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা বেড়ে যাওয়ার কারণে এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের সেতুটি বসে গিয়ে সেতুটি পুরোপুরি সমু্দ্রের জলে তলিয়ে যায়। এই কারণেই বলা হয় যে রাম সেতুটি চুনাপাথরের তৈরি ছিল।