স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের উপভোক্তাদের জন্য সুখবর, যুক্ত হলো দেশের দুটি বড় হাসপাতাল

নিজস্ব প্রতিবেদন : কথায় আছে ‘স্বাস্থ্যই সম্পদ’। যদি স্বাস্থ্য ভালো থাকে তাহলে মন ভালো থাকে আর যদি মন ভাল থাকে তাহলে কাজ করার ইচ্ছাও আমাদের বহুগুণ বেড়ে যায়। আর কর্মই লক্ষ্মীকে আহ্বান করে নিয়ে আসে। তাই স্বাস্থ্যই সবকিছুর মূল। আর এই স্বাস্থ্য যখন ভেঙে পড়ে তখন আমরা এক জায়গা থেকে অপর জায়গা ছুটে বেড়ায় নিজেদের সুস্থ করতে। যেখানে চিকিৎসার উন্নত পরিষেবা পাবো বলে নিশ্চিত জানি, সেখানেই ছুটে যাই, অর্থের খরচের কথা মাথাতেই আনি না।

গোটা দেশ থেকেই বহু মানুষ প্রতিবছর চিকিৎসার জন্য ভেলোরের সিএমসিতে যান। ভেলোরের সিএমসি অর্থাৎ ক্রিশ্চিয়ান মেডিকেল কলেজের উন্নত চিকিৎসা পরিষেবা কথা সকলেই কম বেশি জানেন। আমাদের রাজ্যের চিকিৎসা পরিষেবা উন্নত হলেও এখনো রাজ্যের একটা অংশের মানুষ ভেলোরে যান চিকিৎসা করাতে। চিকিৎসার জন্য যারা ভেলোরে পাড়ি দেন তাদের জন্য একটি সুখবর পাওয়া গেল রাজ্য সরকারের তরফ থেকে।

রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্য বীমা প্রকল্প স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের আওতায় এবার চলে এলো দেশের দুটি বড় হাসপাতাল ভেলোরের সিএমসি ও দিল্লির এইমস। লকডাউনের সময় বহু মানুষই ভেলোরে চিকিৎসা করতে গিয়ে আটকে পড়েন। বিশেষ ট্রেনে করে তাদের ফিরিয়ে আনা হয় রাজ্যে। এরপর গত শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাংবাদিক বৈঠকে দিলেন সুখবরটি।

মুখ্যমন্ত্রী জানান, “স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের আওতায় আমরা আরও দুটি হাসপাতালকে যোগ করেছি, সেখানেও এই রকম সুযোগ-সুবিধা পাবেন স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের হোল্ডাররা। একটি হলো ভেলোরের সিএমসি এবং অপরটি হল দিল্লির এইমস।”

স্বাস্থ্যসাথী কার্ড থাকলে ভেলোর সিএমসি-তে ও দিল্লির এইমস-এ এবার মানুষ বিনামূল্যেই চিকিৎসা ব্যবস্থা পাবেন। স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পের আওতায় কারা কারা আছেন?

এই প্রকল্পের আওতায় মূলত সেই সকল মানুষরা পড়েন যারা সরকারি পরিষেবার সঙ্গে স্বল্প বেতনে অস্থায়ী ভাবে যুক্ত। আশা কর্মী, আইসিডিএস-এর কর্মী, স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্য, সিভিক ভলেন্টিয়ার, গ্রীন পুলিশ। হোম গার্ড, কলেজ ভলেন্টিয়ার ইত্যাদি মানুষজন স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের আওতার অন্তর্ভুক্ত।

কেন এই স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্প?

স্বল্প বেতনের এই সকল কর্মীরা চিকিৎসার খরচ চালাতে পারছিলেন না অপরদিকে তারা যেহেতু দারিদ্র্যসীমার নিচের বাসিন্দা নন সেই কারণে রাষ্ট্রীয় বিমার সুবিধাও পাচ্ছিলেন না তারা।তাদের কথা ভেবেই স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্প করা হয়।

এই প্রকল্পের মাধ্যমে কারা কারা সুবিধা পাবেন?

স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের কার্ড যার নামে থাকবে তিনি, তার স্বামী অথবা স্ত্রী, তাদের নাবালক সন্তান, যার নামে এই বীমা থাকবে তার বাবা-মা এবং শ্বশুর-শাশুড়িও এই সুযোগ পাবেন।প্রথমদিকে বীমাকারীর শ্বশুর-শাশুড়ি এই সুযোগ সুবিধা পেতেন না পরবর্তীকালে পরিবারকে বৃহত্তর অর্থে দেখা হয়েছে এবং বীমাকারীর শ্বশুর-শাশুড়িও এই সুবিধার অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।

বর্তমানে এই প্রকল্পের নতুন করে কাদের সংযোজন করা হয়েছে?

স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পের ফলে বিনামূল্যে চিকিৎসা পরিষেবা পাওয়া যায়। এই পরিষেবা ২০১৭ সাল থেকেই চালু আছে। বর্তমানে এই পরিষেবার সাথে উপরিউক্ত দুটি হাসপাতালকেও যোগ করা হলো। তবে গত শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “বাসের চালক ও বাস কন্ডাক্টররাও এবার থেকে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের আওতাভুক্ত হবেন।”

আর রাজ্যের হাসপাতালগুলি প্রসঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “কেউ যদি স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের পরিষেবা না দেন তাহলে তাদের লাইসেন্স নিয়ে তারা সমস্যায় পড়বেন।সরকারের কাছে লাইসেন্স নিয়েই হাসপাতালগুলি চলে। তাই সে সকল ক্ষেত্রে কড়া পদক্ষেপ ও জরিমানা করা হবে। লাইসেন্স আবার পুনর্নবীকরণ করা হবে কিনা সে বিষয়টিও ভেবে দেখা হবে।”