হিট পুষ্পা হিট পিছনে ছিল মালদার এই যুবকের হাত, পাড়ি দিচ্ছে হলিউডে

SHARMISTHA CHATTERJEE

Updated on:

Advertisements

এ কোন গল্প কাহিনী নয়, বাংলার তরুণের এক অবিশ্বাস্য নজির সৃষ্টি করা সফলতার কাহিনী। স্বপ্ন জয়ের ইতিহাস বললেও খুব একটা ভুল হবে না। স্বপ্ন দেখার সূচনা ঘটে ছিল ১০ ফুট বাই ৭ ফুট দৈর্ঘ্য প্রস্থের একটি বাড়িতে বসে। সেই স্বপ্নের সূচনা যে একদিন তাকে হলিউড পর্যন্ত পৌঁছে দেবে এ কথা কিন্তু ওই তরুণ এক্কেবারে কল্পনাও করতে পারেনি। মালদার ছেলে সাগর পাশওয়ান নিজের সঙ্গী বলতে একটি ছোট রুম আর তার ভেতরে একটি ডেস্কটপকে সঙ্গী করে নিয়ে লড়ে চলেছে তার স্বপ্নের লড়াই।

Advertisements

হলিউডে প্রতিটি দৃশ্যাবলীকে আরও বেশি করে প্রাণবন্ত করে তুলতে তার এই লড়াই প্রতিনিয়ত চলছে। গত কয়েক মাস ধরে পুষ্পা জ্বরে আক্রান্ত সারা দেশবাসী। আরিফ বিখ্যাত এই সিনেমায় ভিএফএক্স, এখানেই রয়েছে সাগরের হাতের ছোঁয়া। মালদহের মত ছোট শহরে যেখানে ভিএফএক্স কি জিনিস তাই বোধহয় অর্ধেকের বেশি মানুষ জানেন না সেখান থেকে সাগর তাক লাগিয়ে দিয়েছে সবাইকে। তাইতো সাগরের এই স্বপ্নের যাত্রা কেবল মালদহের নয় সারাদেশের কাছে অত্যন্ত গর্বের বিষয়।

Advertisements

সাগর মালদহের ইংরেজবাজার পৌরসভার সানি পার্কের বাসিন্দা। ইতিমধ্যেই সে কাজের দিক থেকে বলিউড ও বেশ কিছু দক্ষিণী ছবি ছাপিয়ে হলিউডের দরজায় পৌঁছে গিয়েছে। হলিউডের ক্ষেত্রে বেশ বড়সড় ব্যানারে কাজ পেয়েছে সাগর। তাইতো আপাতত বলিউড বা দক্ষিণী ছবির ক্ষেত্রে কাজ বন্ধ রেখে একেবারে জোরকদমে হলিউডের জন্য লেগে পড়েছে সাগর। জেলার ছেলের হলিউডের জার্নি তোলপাড় ফেলে দিয়েছে সারা জেলাজুড়ে।

Advertisements

সাগরের এই জগতে আসার জার্নিটা শুরু হয়েছিল একটু অন্যভাবে। সাগর তখন সপ্তম শ্রেণীর ছাত্র তখনই বাবার সাথে একটি ছবি দেখতে দেখতে হঠাৎ তার মনে প্রশ্ন জাগে এই ছবিতে কিভাবে তৈরি হয়। সাগরের বাবা রামকুমার একজন বেসরকারি সংস্থার কর্মী হওয়ার কারণে ছোট থেকেই অভাব-অনটন নিত্যসঙ্গী। তাই নিজের পড়াশুনার খরচ চালাতে মাত্র নবম শ্রেণী থেকেই সাগর বিভিন্ন বিয়ের ভিডিও রেকর্ডিং করতে শুরু করে। এভাবে চলতে থাকে সাগরের পড়াশুনার যাত্রা মাধ্যমিক উচ্চমাধ্যমিক তারপর গৌড় মহাবিদ্যালয় থেকে মাস কমিউনিকেশনে পাস করে। তারপরই তার জীবনে একটা টার্নিং পয়েন্ট আসে।

বাহুবলি ছবির ক্ষেত্রে ব্যবহৃত ভিজুয়াল ইফেক্ট দেখে সাগর নিজেকে আর ধরে রাখতে পারেনি। মাথায় যেহেতু এসেছে তাই থেমে থাকার পাত্র সে নয়। তারপর থেকেই ইউটিউব ঘাঁটাঘাঁটি করে চলতে থাকে তার শিক্ষালাভ। তারপরই হিসেব কাজ শেখার পরে মুম্বই হায়দ্রাবাদে বিভিন্ন স্টুডিওতে যোগাযোগ করতে থাকে। দক্ষিণী ছবি পুষ্পাতে সাগরের তৈরি ভিজুয়াল এফেক্ট একেবারে কামাল করে দিয়েছে। ‘শর্মাজি নমকিন’ ছবির ক্ষেত্রে ভিসুয়াল সাগরেরই তৈরি। সাগরের স্বপ্নের দৌড় কিন্তু এখানেই থেমে নেই, মালদহের মতো ছোট্ট শহরের ছেলে সাগরের ইচ্ছে একদিন নিজের তৈরি ব্যানারে ভিজুয়াল ইফেক্টের কাজ করা। পরিশ্রম আর ইচ্ছে শক্তি দিয়ে সাগর এভাবেই নিজের স্বপ্নের লক্ষ্যে পৌঁছানোর দিকে এগিয়ে চলেছে।

Advertisements