অমরনাথ দত্ত : বিশ্বভারতীর মেলার মাঠে পাঁচিল দেওয়াকে কেন্দ্র করে কি কান্ড না ঘটেছে! আর এই সাত কান্ড রামায়ণের পর অবশেষে মেলার মাঠ ঘিরে ফেলার কাজ শুরু করলো বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। তবে সূত্র মারফত জানা গিয়েছে এবার পাঁচিল হবে না, বরং ফেন্সিং করে ঘিরে ফেলা হবে মেলার মাঠকে।
মেলার মাঠকে ঘিরে ফেলার জন্য আগস্ট মাসে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। এরপর সিদ্ধান্ত মত ইট, বালি, পাথর পড়ে কাজও শুরু হয়ে গেছিল। কিন্তু সেই কাজে বাধা দেয় স্থানীয় ব্যবসায়ী সমিতি এবং বাসিন্দারা। মেলার মাঠকে পাঁচিল দিয়ে জেলখানার মতো ঘিরে ফেলা হবে না বলে দাবি তুলে আন্দোলন শুরু করেন তারা। এর পাশাপাশি এই আন্দোলনের সাথে যুক্ত হন বিশ্বভারতীর কয়েকজন আশ্রমিক। যার পর আন্দোলন এতটাই গতি পায় যে পাঁচিল দেওয়ার কাজ চলাকালীন উত্তেজিত জনতারা ভেঙে দেয় বিশ্বভারতীর একটি ঐতিহ্যবাহী গেট।
আর এই গেট ভাঙ্গা নিয়ে শুরু হয় রাজনৈতিক চাপানউতোর। বিজেপির তরফ থেকে অভিযোগ করা হয় তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা বুলডোজার নিয়ে এই গেট ভেঙে দিয়েছে। বিশ্বভারতীর তরফ থেকে তৃণমূলের দুবরাজপুরের বিধায়ক নরেশ বাউরির সহ বেশ কয়েকজন তৃণমূল নেতার নামে শান্তিনিকেতন থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। এরপর মামলা গড়ায় আদালতে।
কলকাতা হাইকোর্টের তরফ থেকে বিশ্বভারতীর যেকোনো ধরনের ভাঙ্গা এবং গড়ার অর্থাৎ নির্মাণের জন্য চার সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে দেয়। এরপর ২৬ শে সেপ্টেম্বর ওই কমিটির সদস্যরা বিশ্বভারতীতে আসেন এবং বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ, বিশ্বভারতীর পড়ুয়া, আশ্রমিক এবং স্থানীয়দের সাথে কথা বলেন। যদিও সেই আলোচনায় কোনো সুরাহা সূত্র পাওয়া যায়নি বলে জানা যায়। এরপর আবার ২৭ তারিখ ওই কমিটির সদস্যরা বিশ্বভারতীতে পৌঁছান।
যার পরেই সোমবার থেকে ফের একবার নতুন করে পৌষ মেলার মাঠ ঘিরে ফেলার কাজ শুরু করলো বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। অজস্র শ্রমিক নিয়োগ করে নিজেদের নিরাপত্তা রক্ষী মোতায়েন করে এই ঘিরে ফেলার কাজ শুরু করা হয়েছে। বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ চাইছে দ্রুত সমস্যার সমাধান করতে এই কাজ তাড়াতাড়ি সমাপ্ত করা। যদিও স্থানীয় বাসিন্দা, স্থানীয় ব্যবসায়ী এবং অন্যান্যদের দাবি ফেন্সিং হোক অথবা পাঁচিল কোনভাবেই মেলার মাঠকে ঘিরে ফেলা যাবে না।