Poushmela 2024: নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের বাড়ির দেওয়ালে অযাচিত শ্যাওলা একপ্রকার আম বিষয়। কারো কারো বাড়িতে আবার রঙের কোনো বালাই দেখা যায়না। সামান্য চুন দিয়েই বাড়ীর দেওয়াল মেরামত করে নেন অনেকে। তবে ব্যতিক্রম কিছু কিছু ক্ষেত্রে লক্ষ্য করা যায়। কেউ কেউ নিজেদের সাধ পূরণ করে রঙের ছোপ দিয়ে। কিন্তু কখনো শুনেছেন কি দেওয়াল সজ্জার জিনিসের দাম ৩৩ লক্ষ? সেটাই বিক্রি হচ্ছে শান্তিনিকেতনের পৌষমেলায়।
মমতা বেগম নামে এক শিল্পী শান্তিনিকেতনের পৌষমেলায় (Poushmela 2024) বিক্রি করছেন ৩৩ লক্ষের ওয়াল হ্যাঙ্গিং। তার কাছে রয়েছে দেওয়াল সজ্জার একাধিক জিনিস এবং রয়েছে হরেক রকমের শাড়িও। তার হাতের কাজে ফুটে উঠেছে সীতা হরণ থেকে শুরু করে মহাভারতের কাহিনি। অদ্ভুত বিষয় হলো রাজ্যের কন্যাশ্রী থেকে সবুজ সাথী প্রকল্পের উপরেও শাড়ি তৈরি করেছেন তিনি। এই শাড়িগুলি তৈরি করে রীতিমত তাক লাগিয়ে দিয়েছে মমতাজ বেগম। তিনি বীরভূমেরই বিখ্যাত শিল্পী এবং জেলাস্তরে ছ’বার পুরস্কার পেয়েছেন। আমেরিকার প্রদর্শনীতে তিনি দুবার অংশগ্রহণ করেছেন সরকারি সহায়তায়। তিনি একটি ‘নব দুর্গা’ ওয়াল হ্যাঙ্গিং তৈরি করেছেন যার দামই ৩৩ লক্ষ।
মমতাজ বেগম হলেন বোলপুরের নতুন পুকুরের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। এমনকি মমতাজের একটি নিজস্ব ওয়ার্কশপও রয়েছে। সেই ওয়ার্কশপে মোট ২২০০ মহিলা কাপড় বোনার কাজ করেন। এখানেই তিনি ক্ষান্ত হননি বরং বহু মহিলাকে হাতের কাজ শিখিয়ে তাঁদের প্রতিষ্ঠিত করার জন্যও সাহায্য করেন মমতাজ। তার হাতের কাজ এখন পৌষমেলার (Poushmela 2024) সবথেকে বড় আকর্ষণ।
মমতাজ বেগম তার ৩৩ লক্ষ টাকার ওয়াল হ্যাংগিং সম্পর্কে বলেছেন যে, নব দুর্গা ওয়াল হ্যাঙ্গিংটি মোট চারজন মহিলা মিলে তারপর তৈরি করা হয়েছে। চারজন শিল্পীর এই কাজটি সম্পূর্ণ করতে সময় লেগেছে ৪ বছর ৪ মাস। রামায়ণ, মহাভারতের কিছু অংশও তুলে ধরা হয়েছে একাধিক শাড়িটির প্রিন্টে। রামায়ণের উপর যে ওয়াল হ্যাঙ্গিংটি রয়েছে তার দাম দেড় লক্ষ টাকা। এত বেশি দাম হওয়ার মূল কারণ হলো এটি তৈরি করতে লেগেছে অনেক সময় এবং এটির কনসেপ্ট একেবারেই অভিনব। তাই এগুলির এত দাম।
আমজনতা শাড়ি কিংবা ওয়াল হ্যাংগিং এর দাম শুনে রীতিমতো অবাক। সাধারণ মধ্যবিত্তের পক্ষে এত টাকা দিয়ে কোন কিছু কেনা সম্ভব নয়। তেত্রিশ লক্ষ টাকা শুধুমাত্র একটা শাড়ি এবং দেওয়াল সজ্জার জিনিসের পিছনে খরচ করার মত মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবে না। স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, বেশিরভাগ মানুষের সারাজীবন এর আয় ৩৩ লক্ষ টাকা নয়। সাধারণ মধ্যবিত্তের একেবারে হাতের নাগালের বাইরে। তবে তাঁর শিল্পের কদর ঠিক মিলবে, আশায় মমতাজ। তবে তিনি হতাশ হননি কারণ মেলাতে (Poushmela 2024) শুধুমাত্র কেনার জন্য মানুষ আসে তা নয়, হাতের কাজ দেখার জন্য অনেকে আসে। এই কাজ দেখে সকলেই হতবাক।