নিজস্ব প্রতিবেদন : ঘনঘন নিম্নচাপের কারণে গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই দক্ষিণবঙ্গে বেড়েছে বৃষ্টি। কোথাও মাঝারি, কোথাও ভারী, তো কোথাও আবার অতিভারী। এমন পরিস্থিতিতে রাজ্যের অধিকাংশ নদ নদীর জল উপচে পড়ছে। এরপর আবার নিম্নচাপের কারণে রবিবার রাত থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টিতে প্লাবিত হয়েছে দক্ষিণবঙ্গের কলকাতা সহ পার্শ্ববর্তী একাধিক জেলা।
তবে হাওয়া অফিসের পূর্বাভাস, বর্তমানে যে সকল প্রতিকূল পরিস্থিতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে তা কেবলমাত্র ট্রেলার। আগামী ১০ দিনের মধ্যে এর থেকেও ভয়ঙ্কর নিম্নচাপের কবলে পড়তে পারে বাংলা ও ওড়িশা। পুজোর মুখে এই দুশ্চিন্তা বাড়াচ্ছে চলতি মাস ফুরানোর আগেই দু-দুটি ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এই দুটি ঘূর্ণাবর্তের অভিমুখ হতে পারে পশ্চিমবঙ্গ এবং ওড়িশা।
আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, সম্প্রতি যে দুইটি ঘূর্ণাবর্ত আশঙ্কা তৈরি করছে সেই দুটি ঘূর্ণাবর্ত সরাসরি বঙ্গোপসাগরে তৈরি না হয়ে সুদূর দক্ষিণ চিন সাগরের জঠরে জন্ম নেবে। তারপর তা সাগর থেকে ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ড, মায়ানমার হয়ে আগমন হবে বঙ্গোপসাগরে। এই ঘূর্ণাবর্ত দুটির গন্তব্য হবে পূর্ব উপকূল। আর সেই গন্তব্যে পৌঁছানোর পথে প্রভাব ফেলবে পশ্চিমবঙ্গ এবং ওড়িশায়। এর জেরে আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর থেকে ফের বৃষ্টি বাড়বে।
আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, দক্ষিণ চীন সাগর থেকে টাইফুন অথবা নিম্নচাপের অংশবিশেষ বঙ্গোপসাগরে প্রায়শই চলে আসে। আসলে বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া ঘূর্ণিঝড়গুলি দক্ষিণ চীন সাগরের কোন ঝড়ের অবশিষ্টাংশ। আর এই সকল ঝড়ের অবশিষ্টাংশ থাইল্যান্ড অথবা ভিয়েতনামের স্থলভাগের প্রবেশ করার পর শক্তি হারালেও কোন ঝড়ের অংশ বঙ্গোপসাগরে প্রবেশ করলে পুনরায় তা শক্তি সঞ্চয় করার সুযোগ পায়। আগামী ১০ দিনের মধ্যে এমন ঘটনারই পুনরাবৃত্তি ঘটতে পারে।
মৌসম ভবনের পূর্বাঞ্চলীয় প্রধান, উপমহানির্দেশক সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, “দক্ষিণ চিন সাগরের টাইফুনের প্রভাবে মাঝে মাঝেই বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণাবর্ত সৃষ্টি হয়। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে তেমন সম্ভাবনা রয়েছে। আমরা নজর রাখছি। সময়মতো নির্দিষ্ট করে পূর্বাভাস দেওয়া হবে। উপকূলে ঢোকার আগে অনেকটা পথও পাবে ঘূর্ণাবর্ত। তাই শক্তি বাড়ানোর সম্ভাবনাও থাকবে। যদিও শেষমেশ নিম্নচাপ হবে কি না, তা এখনই স্পষ্ট নয়।”