নিজস্ব প্রতিবেদন : বাংলাদেশ লাগোয়া এলাকাগুলির উপর ঘূর্ণাবর্ত সৃষ্টি হওয়ার কারণে রাজ্যের বিভিন্ন অংশে মাঝারি থেকে ভারী বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টিপাত ও বেশ কিছু অঞ্চলে ঝড়ের দাপট চলবে সপ্তাহ জুড়ে। এমনটাই জানিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া অফিস। বৃহস্পতিবার এর জেরে নদিয়া, মালদা ও বীরভূমের বেশ কিছু অঞ্চলে বিক্ষিপ্ত বৃষ্টির পূর্বাভাস ছিল। সাথে ছিল ৩০-৪০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ো হওয়ার পূর্বাভাস। তবে এদিন তেমনটা হতে দেখা যায়নি।
তবে আগামীদিনগুলিতে পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলিতেও ঝড়ো হাওয়ার সাথে মাঝারি ও ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস আছে। পশ্চিমবঙ্গের উপকূলবর্তী জেলাগুলিতেও বিক্ষিপ্ত বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। দক্ষিণবঙ্গের বেশ কিছু জেলায় মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টি হতে পারে। তবে আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে যে ঝড় বৃষ্টি ক্ষণস্থায়ী।
শুক্রবার বৃষ্টির পরিমাণ বাড়বে দক্ষিণবঙ্গে। বৃষ্টি কমবে উত্তরবঙ্গে। দক্ষিণবঙ্গের বীরভূম, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, পশ্চিম বর্ধমান, মুর্শিদাবাদ জেলায় ৭০ থেকে ১১০ মিলিমিটার অর্থাৎ ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা। দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টি চলবে শনিবার পর্যন্ত।
বাংলাদেশ লাগোয়া অঞ্চলে যে ঘূর্ণাবর্ত সৃষ্টি হয়েছে তার শক্তি বৃদ্ধি হলে আগামী দিনগুলিতে ঝড় বৃষ্টি আরও বাড়ার সম্ভাবনা আছে। সেক্ষেত্রে আগামী সপ্তাহ পর্যন্ত এই অবস্থা স্থায়ী হতে পারে বলেই জানিয়েছে আলিপুর হাওয়া অফিস।
ঘূর্ণাবর্তের সাথেই পশ্চিমবঙ্গের তাপমাত্রাও প্রভাব ফেলছে আবহাওয়ার ওপর। বৃহস্পতিবার দক্ষিণবঙ্গের তাপমাত্রা ছিল ৩৪ ডিগ্রি এবং ২৫ ডিগ্রির মধ্যে। আজকে শহর কলকাতার তাপমাত্রা স্বাভাবিকের থেকে ৩ ডিগ্রি বেশী (৩২.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস) এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২৫.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অন্যদিকে বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ সর্বোচ্চ ৮৯ শতাংশ এবং সর্বনিম্ন ৫৩ শতাংশ।
বাতাসে আপেক্ষিক আর্দ্রতা স্বাভাবিকের থেকে বেশী থাকায় ভ্যাপসা গরমে নাজেহাল হতে হচ্ছে শহরবাসীকে। এর ফলে রাতের দিকে ঝড় বৃষ্টি হতে পারে যার ফলে তাপমাত্রা আবারও কিছুটা কমার সম্ভাবনা আছে। শুক্রবার থেকে অর্থাৎ আগামীকাল থেকে ঝড় বৃষ্টির পরিমাণ বাড়বে।
পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি দেখতে গেলে মূলত উত্তর বঙ্গোপসাগর এর ওপর এবং ছত্রিশগড়ের ওপরে আরো দুটি ঘূর্ণাবর্ত অবস্থান করায় বঙ্গোপসাগর থেকে রাজ্যে ঢুকছে জলীয় বাষ্প যা ঝড় বৃষ্টির সম্ভাবনাকে আরও বাড়িয়ে তুলছে। উত্তরবঙ্গের দার্জিলিং, কালিম্পং, জলপাইগুড়ি ও উত্তর দিনাজপুরে ঘূর্ণাবর্তের জেরে ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে।
অন্যদিকে আন্দামান সাগর, দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগরে শুক্রবার থেকে রবিবার মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধ করেছে মৌসুম ভবন। কারন আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আন্দামান সাগরে একটি নিম্নচাপ তৈরীর সম্ভাবনা রয়েছে। সেই নিম্নচাপ শক্তি বৃদ্ধি করে রবিবার কিংবা সোমবার প্রবেশ করতে পারে মায়ানমার ও বাংলাদেশ সংলগ্ন উপকূলে, যার প্রভাবেই এই দিনগুলিতে সমুদ্র উত্তাল থাকতে পারে।