করোনার জেরে বন্ধ বিশ্বভারতীর সাপ্তাহিক ব্রহ্ম উপাসনা

অমরনাথ দত্ত : করোনা ভাইরাসের ত্রাসে বর্তমানে বিশ্বের তাবড় তাবড় দেশ ভীত সন্ত্রস্ত। আর এই ভাইরাসের হাত থেকে বাদ যায়নি ভারতও। ভারতের বেশকিছু রাজ্য ইতিমধ্যেই এই ভাইরাসের কবলে। পশ্চিমবঙ্গেও গতকাল এই ভাইরাসের সংক্রমণে সংক্রমিত প্রথম কোন ব্যক্তির খোঁজ পাওয়া যায়। এই ভাইরাস থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য যেহেতু কোনরকম প্রতিষেধক বা ওষুধ আবিষ্কার হয়নি, তাই সচেতনতা ও সতর্কতাকে অবলম্বন করা হচ্ছে।

সর্তকতা অবলম্বন হিসেবে এবছর বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় প্রথম বিশ্বভারতীর জমজমাটপূর্ণ বসন্ত উৎসব বাতিল করে। তারপর তারা সিদ্ধান্ত নেয় ৩১শে মার্চ পর্যন্ত বিশ্বভারতীর সমস্ত রকম পঠন-পাঠন, পরীক্ষা ও হোস্টেল বন্ধ রাখার। পাশাপাশি সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ ভবন, শান্তিনিকেতন গৃহ অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রাখার। আর সেই কারণে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে তাদের এই সকল সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দেয়। বিজ্ঞপ্তিতে সকল পড়ুয়াদের হোস্টেল ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। এরপর আবার নতুন করে আরও একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করল বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ।

নতুন বিজ্ঞপ্তি অনুসারে তারা জানিয়ে দেয়, করোনাভাইরাসের জন্য সমস্ত রকম জমায়েত এড়াতে বিশ্বভারতীর উপাসনা গৃহের ব্রহ্ম উপাসনা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রাখার কথা। বিজ্ঞপ্তিতে লেখা রয়েছে, “সকলের অবগতির জন্য জানানাে হচ্ছে যে, নােভেল করােনা ভাইরাসজনিত সতর্কতামূলক কারণে বিশ্বভারতীর সকল বিভাগে পঠন-পাঠন ও পরীক্ষা স্থগিত রাখা হয়েছে। এমতাবস্থায় পুনরায় বিজ্ঞপ্তি না দেওয়া পর্যন্ত বুধবারের সাপ্তাহিক উপাসনা অনুষ্ঠিত হবে না।”

বিশ্বভারতীর পঠন পাঠন, হোস্টেল, বাংলাদেশ ভবন, শান্তিনিকেতন গৃহ বন্ধ হওয়ার পর এবার করোনাভাইরাসের জেরে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ হল শান্তিনিকেতনের ১৫০ বছরের রীতি। মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর বুধবার ব্রাহ্মধর্মে দীক্ষিত হয়েছিলেন। তারপর থেকেই রীতি মেনে বুধবার বিশ্বভারতীর উপাসনা গৃহে বিশ্বভারতীর অধ্যাপক-অধ্যাপিকা, আশ্রমিক, পড়ুয়ারা অংশ নেয় এই ব্রহ্ম উপাসনায়। বুধবার ছাড়া বিশেষ দিনগুলিতে উপসনা গৃহের বৈদিক মন্ত্র পাঠ ও সঙ্গীতের মধ্য দিয়ে হয়ে থাকে ব্রহ্ম উপাসনা। সেই চিরচরিত উপাসনাই বন্ধ করলো বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ।