West Bengal: পশ্চিমবঙ্গের (West Bengal) তফসিলি জাতি, উপজাতি ও অনগ্রসর শ্রেণির উন্নয়নের জন্য ঋণ নিয়ে শোধ করেননি বহু উপভোক্তা। আর এই অনাদায়ী ঋণের পরিমাণ এখন আকাশছোঁয়া, প্রায় ৫০ কোটি টাকা! উপভোক্তাদের এই ঋণ শোধে বেপরোয়া মনোভাবের ফলে সরকারের উন্নয়নমূলক প্রকল্পগুলিতে বড় ধরনের সমস্যা দেখা দিয়েছে। বাধ্য হয়ে কড়া পদক্ষেপ নিতে হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ তফসিলি জাতি, উপজাতি ও অনগ্রসর শ্রেণি উন্নয়ন কর্পোরেশনকে। এবার ক্যাম্পে বসেই টাকা উদ্ধার অভিযান শুরু করেছে তারা, এবং এই কার্যক্রম জুড়ে চলছে রাজ্যব্যাপী প্রচার।
অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দপ্তরের অধীনে পরিচালিত এই কর্পোরেশন বিভিন্ন প্রকল্পে ঋণ দিয়ে থাকে, যার মধ্যে রয়েছে মহিলা সমৃদ্ধি যোজনা, লঘু ব্যবসায়ী যোজনা এবং এনএসএফডিসি প্রকল্প। এই প্রকল্পগুলির অধীনে দেওয়া ঋণ শোধের হার মাত্র ৩০-৩৫ শতাংশ, যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। বহু উপভোক্তা ঋণ নিয়ে ফেরত দিচ্ছেন না, ফলে নতুন ঋণ প্রকল্প চালু করা কঠিন হয়ে পড়েছে। এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় ডিসেম্বর পর্যন্ত রাজ্যের (West Bengal) ব্লকগুলোতে ক্যাম্প করে ঋণের টাকা পুনরুদ্ধারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে এই পদক্ষেপ। বিভিন্ন জেলায় ক্যাম্পের মাধ্যমে টাকা ফেরত আদায়ের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে এবং এর ইতিবাচক ফলাফলও দেখা যাচ্ছে। দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ইতিমধ্যেই ৫০ লক্ষ টাকা উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। উত্তরবঙ্গের কয়েকটি জেলাতেও উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে, যেখানে ঋণগ্রহীতারা নিজেদের দায়িত্ব বুঝে টাকা ফেরত দিতে শুরু করেছেন। সরকারি প্রচারের পাশাপাশি ক্যাম্পের সরাসরি কার্যক্রমেও ঋণগ্রহীতাদের মধ্যে ইতিমধ্যেই সচেতনতা বাড়ছে।
আরো পড়ুন: বাড়ি থেকে পয়সা দিয়ে কেনা হবে প্লাস্টিক বর্জ্য, সরকারের নয়া প্রচেষ্টা প্রশংসনীয়
এই অভিযানের মূল উদ্দেশ্য হল ঋণগ্রহীতাদের মধ্যে দায়বদ্ধতা সৃষ্টি করা। ঋণ শোধে উদাসীনতার বিরুদ্ধে এই কঠোর পদক্ষেপে অন্য ঋণগ্রহীতারাও সতর্ক হবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ মনে করছে, এই ক্যাম্পগুলো আরও জোরালো হলে অনাদায়ী ঋণের বোঝা অনেকটাই কমানো সম্ভব হবে। এভাবে চলতে থাকলে, ঋণগ্রহীতারা শীঘ্রই তাদের দায়বদ্ধতা মেনে ঋণ শোধ করবেন, যা ভবিষ্যতের জন্য একটি বড় বার্তা বহন করবে।
এই অভিযানের আরও একটি তাৎপর্যপূর্ণ দিক হল ঋণগ্রহীতাদের সামাজিক ও আর্থিক দায়িত্ববোধের উন্নয়ন। ঋণ নিয়ে তা শোধ না করার প্রবণতা শুধুমাত্র সরকার বা সংস্থার ওপরই নয়, সমাজের সামগ্রিক উন্নয়নের ক্ষেত্রেও বড় বাধা সৃষ্টি করে। সরকার (West Bengal) মনে করছে, এই ক্যাম্পের মাধ্যমে শুধুমাত্র ঋণের টাকা পুনরুদ্ধারই নয়, বরং উপভোক্তাদের মধ্যে একটি স্থায়ী দায়িত্ববোধ তৈরি করা সম্ভব হবে। ক্যাম্পের সাফল্য নির্ভর করছে উপভোক্তাদের সহযোগিতার ওপর, এবং সরকার আশা করছে, এই ধরনের কার্যক্রম ভবিষ্যতে ঋণ নীতি ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের নতুন দিশা দেখাবে।