দুর্গাপুরে আটকে যাওয়া বুড়ো বিমানকে কেন নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল! কি হবে এর!

নিজস্ব প্রতিবেদন : ইন্ডিয়া পোস্টের এক বুড়ো বিমানকে গত ২৪ শে ডিসেম্বর ২ নং জাতীয় সড়ক দিয়ে ট্রলারে করে নিয়ে যাওয়ার সময় আটকে যায় দুর্গাপুর সেতুর নীচে। দমদম থেকে রাজস্থানের জয়পুরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল ওই বিমানটিকে। যার পরেই হৈচৈ শুরু হয়ে যায়। খবর ছড়িয়ে পরে রাজ্যজুড়ে। কিন্তু প্রশ্ন জাগছিল অনেকরই, এই বুড়ো বিমানটি নিয়ে কি হবে? এর উদ্দেশ্য কি?

আসলে জয়পুরের জাতীয় সড়কে এই বিমানটিকে নিয়ে যাওয়ার উদ্দেশ্য একটাই, বাতিল বিমানের ভেতর একটি ঝাঁ চকচকে রেস্তোরাঁ তৈরি করা। বেশ মজাদার লাগছে শুনে। হ্যাঁ, জয়পুরের একজন ব্যবসায়ী একটি রেস্তোরাঁ খোলার উদ্দেশ্যেই কিনেছেন এই বাতিল আস্ত বিমানটিকে! ভারতীয় ডাক বিভাগের তরফ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত কাজ করেছে এয়ার ইন্ডিয়ার এই বিমানটি। তারপর একটি হ্যাঙ্গারে থাকা এই বিমানটি ১৮ লাখ টাকায় রেস্তোরাঁ তৈরির উদ্দেশ্যে কিনে নেন ওই ব্যবসায়ী।

তবে বাতিল বিমানে রেস্তোরাঁর নজির এর আগেও আছে এই দেশে। হরিয়ানার আম্বালাতে ১ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে এয়ার ইন্ডিয়ার বাতিল এয়ারবাস ৩২০, সেটাকেই একটি অসাধারণ রেস্তোরাঁ তৈরি হয়। যার নাম দেওয়া হয় রানওয়ে নম্বর ১। একই ধাঁচে এই বিমানটিরও খোলনলচে বদলে চালু করা হবে রেস্তোরাঁ। বিশ্বের মোট ৮টি দেশে এরকম রেস্তোরাঁ গড়ে উঠেছে এবং প্রতিটিই বিমান রেস্তোরাঁয় তাক লাগিয়ে দেওয়ার মত। এই দেশেও হরিয়ানা ও উত্তর দিল্লিতেও এরকম রেস্তোরাঁ তৈরি হয়। আম্বালার সেই রেস্তোরাঁয় ৫০ জন কর্মী কাজ করেন, যারা এয়ার হোস্টেসদের মত সাজে পরিষেবা দেন অতিথিদের।

বিমানে চড়ার আগে বোর্ডিং পাস প্রয়োজন হয়, তাহলে এই রেস্তোরাঁতেও প্রয়োজন। হ্যাঁ, প্রথমেই আপনাকে পছন্দের খাবার রিসেপশন থেকে বুক করে নিতে হবে। প্রায় সবরকম কুইসিনের খাবারই পরিবেশিত হবে। বিমানের প্রতিটা ডানাও ব্যবহার করা হবে এই জন্য।

জয়পুরের এই রেস্তোরাঁর উদ্দেশ্যে ইতিমধ্যেই সেই পুরনো বিমানের দুটি ডানা ট্রেলারে করে রওনা দিয়ে দিয়েছে। তবে গত সোমবার মাঝরাতে কলকাতা থেকে জয়পুর যাওয়ার পথে মেনগেট এলাকায় জাতীয় সড়কের সার্ভিস রোডের ফ্লাইওভারে ট্রলারটিকে আটকে দেওয়া হয়। কারণ জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ দাবি তোলে যে, ভারী ট্রেলার নিয়ে যাওয়ার ফলে রাস্তার ক্ষতি হয়েছে। শুধু তাই না ক্ষতিপূরণ চেয়ে মামলাও দায়ের করা হয়। আটকে রয়েছে ট্রলারটি।

বিমান সংক্রান্ত মামলার দায়িত্বপ্রাপ্ত এক আধিকারিকের কথা অনুসারে, চালান অনুযায়ী বিমানটি জয়পুরে যাচ্ছে এবং সেখানকার একটি ঠিকানাও দেওয়া রয়েছে। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ ট্রেলারের বিরুদ্ধে মামলা করাতে বিষয়টি ট্র্যাফিক বিভাগের আধিকারিকরা দেখছেন। ট্র্যাফিক ওসি মহম্মদ আলির বক্তব্য, মামলা নিতে গেলেই ট্রেলারটি ছেড়ে দেওয়া হবে।

তবে এই পুরোনো বিমানের ছাড়পত্র খোঁজা খুব একটা সহজ কাজ না। জাতীয় সড়কের প্রজেক্ট ডিরেক্টরের কথা অনুযায়ী, মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ছাড়া হবে না ট্রলারটিকে।