পরিযায়ী শ্রমিকদের যাতায়াতের খরচ বহন করবে রাজ্য সরকার, ঘোষণা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের

Madhab Das

Published on:

নিজস্ব প্রতিবেদন : পরিযায়ী শ্রমিকরা পথের ক্লান্তিকে উপেক্ষা করে, পথের দীর্ঘতাকে উপেক্ষা করে কষ্ট সহ্য করে পাড়ি দিচ্ছেন এক রাজ্য থেকে আরেক রাজ্য। বাড়ি ফেরার অদম্য তাগিদে তারা পায়ে হেঁটেই নিজেদের জন্মভূমিতে ফিরতে চাইছেন। কর্মস্থান থেকে জন্মভিটে ফেরার এই মধ্যবর্তী সময়ে কারোর কারোর জীবনের উপর যবনিকা পতন ঘটছে। কেউ কেউ হয়ে পড়ছেন অসুস্থ। তবু বাড়ি ফেরার তাগিদেই তারা চোখে স্বপ্ন নিয়ে খালি পায়ে রাস্তায় নামছেন। কয়েক দিনে আমরা পরিযায়ী শ্রমিকদের দলে দলে বাড়ি ফেরার নানা চিত্র দেখেছি।

কোথাও দেখেছি ট্রলি ব্যাগের উপর ক্লান্ত হয়ে ঘুমিয়ে পড়েছে শিশু, ট্রলি ব্যাগকে দড়ি বেঁধে টানছেন মা। কোথাও দেখেছি গর্ভবতী স্ত্রীকে নিয়ে কাঠের পাটাতনের চাকা লাগিয়ে টানছেন পরিযায়ী শ্রমিক। আবার কোথাও দেখেছি অসুস্থ ছেলেকে নিয়েই হাঁটছেন তারা। তাদের অভিযোগ রাজ্য সরকার এবং কেন্দ্র সরকার তাদের বাড়ি ফেরানোর ব্যবস্থা করলেও এই সমস্ত প্রক্রিয়াতে অনেকটাই সময় লাগছে, এছাড়া আছে আরও নানারকম ঝুট-ঝামেলা, তাই তারা হাঁটতে হাঁটতে বেরিয়ে পড়ছেন।

শ্রমিকদের এহেন দুর্দশা দেখে সমাজের সকল মানুষ প্রতিবাদ করছেন। প্রতিবাদ করেছেন কংগ্রেসের দাপুটে নেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরী। শ্রমিকদের দুর্দশা নিয়ে প্রতিবাদ করেছে সিপিএম। এদিকে কেন্দ্র আর রাজ্যের মধ্যে তরজা শুরু হয়ে গেছিল এই পরিযায়ী শ্রমিকদের ফেরানো নিয়ে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ও রাজ্যের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। এবার রাজ্য সরকারের তরফ থেকে এমনই একটি পদক্ষেপ নেওয়া হলো যা সময়োপযোগী একটি সিদ্ধান্ত।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শনিবার পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য একটি বড়সড় ঘোষণা করলেন। তিনি জানালেন, রাজ্যের সকল পরিযায়ী শ্রমিকদের ফেরানোর অর্থ রাজ্য সরকারই বহন করবে। নবান্নের মুখ্যসচিব এই বিষয়টি কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রীকে চিঠিতে জানিয়েও দিয়েছে‌ন।

শনিবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় একটি ট্যুইট করে বলেন, “পরিযায়ী শ্রমিকদের পরিশ্রমকে আমি কুর্নিশ জানাই। আমি আনন্দের সঙ্গে ঘোষণা করছি যে অন্য রাজ্য থেকে আমাদের রাজ্যে পরিযায়ী শ্রমিকদের ফেরানোর সমস্ত খরচ রাজ্য সরকার বহন করবে কোন পরিযায়ী শ্রমিককে খরচ বহন করতে হবে না।” নবান্নের মুখ্যসচিব কেন্দ্রকে যে চিঠি দিয়েছেন তার প্রতিলিপি ও ট্যুইটারের সাথে জুড়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, রেল দপ্তর পূর্বেই একটি বিজ্ঞপ্তিতে জানায় যে শ্রমিক স্পেশাল ট্রেনে তারা ৮৫% ভাড়া মুকুব করেছে। বাকি ১৫% ভাড়া শ্রমিকদের দিতে হতো। কিন্তু বাস্তব পরিস্থিতিতে দেখা যায় যে এই সকল ক্ষেত্রেও হচ্ছে দু নম্বরি। অনেক চড়া দামে শ্রমিকদের এই সকল টিকিট কিনতে হচ্ছে। তাই মুখ্যমন্ত্রী এবার জানান যে শ্রমিকদের আর কোনো ভাড়ায় দিতে হবে না।