গোষ্ঠী সংক্রমণ শুরু রাজ্যে, এবার থেকে সপ্তাহে দুদিন সম্পূর্ণ লকডাউন

Madhab Das

Published on:

নিজস্ব প্রতিবেদন : বাংলাতে করোনা ভাইরাসের গোষ্ঠী সংক্রমণ শুরু হয়ে যাওয়ার কথা একপ্রকার স্বীকার করে নিল রাজ্য সরকার। ইতিমধ্যেই দেশে গোষ্ঠী সংক্রমণ শুরুর হয়ে যাওয়ার কথা জানিয়েছে ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন। কেরল রাজ্যকে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধের মডেল হিসাবে এতদিন দেখা হচ্ছিল সেখানে মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন দুদিন আগেই ঘোষণা করেন সুমদ্র তীরবর্তী অঞ্চলগুলিতে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ শুরু হয়ে গেছে।

সেই একই পথে হেঁটে সোমবার রাজ্যের স্বরাষ্ট্র সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, চিকিৎসক, বিজ্ঞানী থেকে বিভিন্ন স্তরের বিশেষজ্ঞরা একমত এই রাজ্যের কোন কোন অঞ্চলে গোষ্ঠী সংক্রমণ শুরু হয়ে গেছে।

সংক্রমণের সেই শৃঙ্খল ভাঙতেই রাজ্য সরকার সপ্তাহে দুদিন সমগ্ৰ রাজ্যজুড়ে সম্পূর্ণ লকডাউনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই সপ্তাহে বৃহস্পতিবার ও শনিবার লকডাউন কার্যকর হবে। আগামী সপ্তাহে লকডাউন কার্যকর হবে আগামী বুধবার। আর একদিন কি বার লকডাউন কার্যকর হবে তা আগামী সোমবার বৈঠকের পরই জানা যাবে বলে জানিয়েছেন আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়।

এছাড়াও স্বরাষ্ট্র সচিব জানিয়েছেন, কোভিড হাসপাতালগুলিতে বেডের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। নতুন হাসপাতালগুলিকে কোভিড হাসপাতাল হিসাবে ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সেফ হোমে অক্সিজেন ও অ্যাম্বুলেন্সের পরিকাঠামো ঢেলে সাজানোর ব্যবস্থা হচ্ছে।

গত সপ্তাহেই মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, ইসলামিয়া হাসপাতাল ও আর আহমদ ডেন্টাল কলেজগুলিকে করোনা হাসপাতালে পরিণত করা হবে।

সারা দেশের মতো এই রাজ্যেও লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। আক্রান্তের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যাও। প্রতিদিন আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় দুই হাজারের মতো। যা গোষ্ঠী সংক্রমণ বা কমিউনিটি ট্রান্সমিশন বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

অর্থাৎ সংক্রমণের সোর্সকে আর চিহ্নিত করা যাচ্ছে না। রাজ্যের মুখ্যসচিব রাজীব সিনহা সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, রাজ্যে সংক্রমণ আরও বাড়বে। কিন্তু তাতে আতঙ্কিত হবার কিছু নেই। কারণ সংক্রমণ বাড়বে জেনেই রাজ্য সরকার ইতিমধ্যেই প্রস্তুতি সেরে রেখেছে।
তাঁর চমকপ্রদ বক্তব্য, করোনা ভাইরাস যে স্পীডে এগোচ্ছে, রাজ্য সরকার তার চেয়ে বেশি স্পীডে এগোচ্ছে।

গোষ্ঠী সংক্রমণ কি ইউরোপ আমেরিকার মতো ভারতেও মোড়ক ডেকে আনবে। এর উত্তরে আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, গোষ্ঠী সংক্রমণের শৃঙ্খল ভাঙতে‌ সাডেন ব্রেক দরকার, তার জন্য এই দুইদিনের সম্পূর্ণ লকডাইনের সিদ্ধান্ত।

তবে সিদ্ধান্ত কতটা কার্যকর হবে তা নিয়ে অনেক বিশেষজ্ঞই সন্দিহান। সম্পূর্ণ লকডাউন না হলে এই শৃঙ্খল ভাঙা কঠিন বলেই মনে করছেন তাঁরা। একমাত্র পথ করোনা ভ্যাকসিনের আবিষ্কার অথবা মানুষের মধ্যে অথবা হার্ড ইমিউনিটি গড়ে তোলা।