Indian Air Force: একনজরে দেখে নিন ভারতীয় বায়ুসেনার অস্ত্রাগার, কি কি আছে ঝুলিতে

Prosun Kanti Das

Published on:

Advertisements

Indian Air Force: বর্তমানে ভারতীয় বায়ু সেনা এতটাই শক্তিশালীদের নিমেষের মধ্যে শেষ করে দিতে পারে যেকোনো বিমানবন্দর, সেতু, নৌঘাঁটি কিংবা সেনাছাউনি ও অস্ত্র, গোলা-বারুদের কারখানা। বিমানবাহিনীর গুরুত্ব আধুনিক যুদ্ধে অত্যন্ত কার্যকরী। শুধুমাত্র যে আমেরিকা, রাশিয়া, ব্রিটেন, ফ্রান্স ও চীনের মত দেশ বিমানবাহিনীর ক্ষেত্রে শক্তিশালী তা কিন্তু নয়, তালিকায় কোন অংশে পিছিয়ে নেই ভারতের বায়ুসেনা। যুদ্ধের মোড় যেকোনো সময় ঘুরিয়ে দিতে পারে ভারতীয় বায়ুসেনা। সারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বায়ুসেনার মধ্যে প্রথম পাঁচে রয়েছে ভারত। প্রথম ও দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আমেরিকা এবং রাশিয়া।

Advertisements

২০২২ সালে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন ‘দ্য ইউরেশিয়ান টাইমস’এর মাধ্যমে জানা যায় যে, আকাশপথে ভারতীয় বায়ুসেনা (Indian Air Force)কতটা শক্তিশালী তা কল্পনার বাইরে। যুদ্ধবিমান, হামলাকারী কপ্টার, মালবাহী বিমান, ড্রোনের পাশাপাশি বিমানবাহিনীর কাছে রয়েছে এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম। কোনভাবেই শত্রুপক্ষ এখন ভারতের আকাশ সীমানায় ঢুকে যুদ্ধ করতে পারবে না কিংবা বলা যেতে পারে যুদ্ধে জয়লাভ করা অত্যন্ত কঠিন। ভারতের হাতে থাকা যুদ্ধবিমানগুলির মধ্যে প্রথমেই বলতে হবে রাফালের কথা। ৪.৫ প্রজন্মের এই যুদ্ধবিমানগুলি তৈরি করেছে ফরাসি সংস্থা দাশো অ্যাভিয়েশন। ভারত ফ্রান্সের থেকে মোট ৩৬টি রাফাল কিনেছে।

Advertisements

রাফাল হলো আসলে একটি মাল্টিরোল যুদ্ধবিমান। এর দ্বারা বিভিন্ন ধরনের কাজে খুব সহজেই করা যেতে পারে। এতে রয়েছে দু’ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র। একটির নাম ‘স্কাল্প’ ও অপরটির নাম ‘মিটিওর’। একেবারে ছটি লক্ষ্যে একসঙ্গে আক্রমণ করা যাবে এর দ্বারা। মোট ৬টি ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ে উড়তে পারে রাফাল। রাফালের গতিবেগ হলো ঘণ্টায় ২ হাজার ২০০ কিলোমিটার। এছাড়াও এতে থাকা মিটিওর ক্ষেপণাস্ত্রের সাহায্যে ডগফাইটের সময়ে শত্রুবিমান নিমেষেই ধ্বংস হয়ে যাবে। আর ৩০০ কিলোমিটার দূরে মাটিতে থাকা লক্ষ্যবস্তুকে গুঁড়িয়ে দেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে স্কাল্পের। এই ফরাসি যুদ্ধবিমান খুব সহজেই হামলা চালাতে পারে পরমাণু ক্ষেপণাস্ত্র নিয়েও।

Advertisements

এরপর তালিকায় নাম রয়েছে সুখোই ৩০ যুদ্ধবিমানের কথা। এই যুদ্ধবিমানটি রাশিয়ার তৈরি এবং যাকে বলা হয় ভারতীয় বায়ুসেনার (Indian Air Force) মেরুদণ্ড। সুখোই ৩০-র সংখ্যাই সবচেয়ে বেশি ভারতীয় বায়ুসেনার অস্ত্রাগারে। রুশ যুদ্ধবিমানগুলিও আকাশে ও মাটিতে হামলা চালাতে সিদ্ধহস্ত। ‘ব্রহ্মস’ সুপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র এর মধ্যেই যুক্ত করেছে ভারতীয় বায়ুসেনা। সুখোইয়ের শক্তিকে অনেকটাই বৃদ্ধি করেছে এই সুপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র। শুধুমাত্র বিদেশে তৈরি নয় একেবারে দেশীয় তেজস যুদ্ধবিমান ব্যবহার করে ভারতীয় বায়ুসেনা। হালকা ওজনের এই যুদ্ধবিমানগুলো পাহাড়ি এলাকায় যুদ্ধ করতে সাহায্য করে। ইতিমধ্যেই বিভিন্ন দেশের বিমানবাহিনীর মহড়ায় শক্তি প্রদর্শন করে প্রশংসা কুড়িয়েছে তেজস।

ভারতীয় বায়ুসেনার (Indian Air Force) ঝুলিতে রয়েছে ফ্রান্সের তৈরি মিরাজ-২০০০, রাশিয়ার তৈরি মিগ ২১ বাইসন ও ব্রিটেনের তৈরি জাগুয়ার। এগুলো পুরনো হওয়ার জন্য তা পরিবর্তন করা হচ্ছে। পাশাপাশি রয়েছে একাধিক হেলিকপ্টার, সেই তালিকায় প্রথমেই নাম আসবে আমেরিকার তৈরি অ্যাপাচের। বিমান নির্মাণকারী সংস্থা বোয়িংয়ের তৈরি এই কপ্টার থেকে নিখুঁত নিশানায় ছোড়া যায় রকেট ও ক্ষেপণাস্ত্র। এতে লাগানো আছে এম২৩০ চেইন গান। দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি ধ্রুব, রুদ্র ও প্রচণ্ড নামের আরও তিনটি কপ্টার ভারতীয় বায়ুসেনার অন্যতম সম্পদ। চেতক ও চিতা নামের আরও দু’ধরনের কপ্টার রয়েছে ভারতীয় বায়ুসেনার কাছে। পুরনো হওয়ার জন্য এগুলোও বদলানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বায়ুসেনার মালবাহী বিমানগুলির মধ্যে সি-১৭ গ্লোবমাস্টার ও সি১৩০জে সুপার হারকিউলিস দুর্গম জায়গায় অস্ত্রশস্ত্র, গোলা-বারুদ বা রসদ পৌঁছে দেওয়া থেকে শুরু করে সৈন্য নামানো, সব ধরনের কাজেই একেবারে দক্ষ।

আরো পড়ুন: হাঁটু কাঁপবে শত্রুদের, ভারতের হাতের নতুন মিসাইল, আড়াই কিমি দূর থেকেই আটকে দেবে ট্যাঙ্ক

ভারতীয় বায়ুসেনার (Indian Air Force) হাতে রয়েছে আমেরিকার দুই পাখাওয়ালা মালবাহী চিনুক হেলিকপ্টার। কার্গিল এবং লাদাখের মতো দুর্গম এলাকায় ১৫৫ ক্যালিবারের এম-৭৭৭ আল্ট্রা লাইট হাউইৎজ়ার কামানকে পৌঁছে দিতে সক্ষম। ভারতীয় বায়ুসেনার কম্যান্ডো বাহিনীর নাম গড়ুর। এই কম্যান্ডোরাও বিভিন্ন ধরনের হাতিয়ার ব্যবহার করে। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল রাশিয়ার একে ১০৩, ইজ়রায়েলের টাভোর ও গালিল এবং ইটালি ও অস্ট্রিয়ার ব্যারিট্টা ৯২ ও গ্লক সেমি অটোমেটিক পিস্তল। আধুনিক যুদ্ধের নিয়ম অনুসারে শত্রুঘাঁটিতে হামলা চালানোই শেষ কথা নয় পাশাপাশি উল্টো দিক থেকে আসা যুদ্ধবিমান, ক্ষেপণাস্ত্র বা রকেটের হামলাকেও ঠেকাতে হবে। সম্প্রতি ভারত রাশিয়ার থেকে এস-৪০০ ট্রায়াম্ফ নামের এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম কিনেছে কারণ যুদ্ধবিমানের সঙ্কটে ভুগছে নয়াদিল্লি।

ইতিমধ্যে ভারতীয় বায়ুসেনার হাতে অন্তত ৪২ স্কোয়াড্রন যুদ্ধবিমান থাকার অত্যন্ত দরকার। কেন্দ্র এই বিষয়ে যথেষ্ট তৎপর হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ‘এফ-৩৫ লাইটনিং’ যুদ্ধবিমান কেনার জন্য আমেরিকার সঙ্গে কথাবার্তা চালাচ্ছে নয়াদিল্লি। ‘সুখোই ৭৫ চেকমেট’ বিক্রির প্রস্তাব দিয়েছে রাশিয়া। এই দু’টি প্রায় একই ধরনের যুদ্ধবিমান। এছাড়াও সম্প্রতি নয়াদিল্লি নজর দিয়েছে ‘অ্যামকা’ নামের দুই ইঞ্জিন বিশিষ্ট যুদ্ধবিমান তৈরির দিকে। পঞ্চম প্রজন্মের এই যুদ্ধবিমান এর দ্বারা ইঞ্জিন সরবরাহের প্রস্তাব দিয়েছে ফ্রান্স। আমেরিকার সঙ্গে ভারতের চুক্তি হয়েছে ‘এম কিউ ৯ রিপার’ ড্রোন কেনার জন্য। আগামী দিনে ‘হেলফায়ার’ ক্ষেপণাস্ত্র বিশিষ্ট ৩১টি এই ধরনের ড্রোন হাতে পারে নয়াদিল্লি। যার মধ্যে ১০টি যাবে বায়ুসেনার অস্ত্রাগারে।

Advertisements