নিজস্ব প্রতিবেদন : চাঁদে (Moon) এখন নেমে এসেছে রাত। এইভাবে টানা ১৪ দিন সূর্যের আলো না পেয়েই কাটবে চাঁদের দক্ষিণ মেরু। টানা অন্ধকারে থাকার ফলে এবং চাঁদের প্রাকৃতিক পরিস্থিতির কারণে দিনের থেকে রাতের তাপমাত্রার ফারাক বিশাল হয়ে থাকে। আর এই কনকনে ঠান্ডাতেই ঠকঠক করে রাত কাটাতে হচ্ছে চন্দ্রযান ৩ (Chandrayaan 3) এর ল্যান্ডার বিক্রম (Lander Vikram) এবং রোভার প্রজ্ঞানকে (Rover Pragyan)। ইসরো (ISRO) আগেই জানিয়েছে, বিক্রম এবং প্রজ্ঞান নিজেদের কাজ সেরে এখন নিদ্রাচ্ছন্ন।
জুলাই মাসের ১৪ তারিখ ভারত চাঁদের উদ্দেশ্যে পাঠায় চন্দ্রযান ৩। সফলভাবে উৎক্ষেপণের পর ২৩ আগস্ট সফলভাবে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণ করে বিক্রম। চাঁদের মাটিতে অবতরণ করার পর সেখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়ে প্রজ্ঞান স্পষ্ট করে দিয়েছে, চাঁদে রয়েছে অক্সিজেন। এছাড়াও সালফার, ক্যালসিয়াম, লোহা, ক্রোমিয়াম, টাইটানিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ ও অ্যালুমিনিয়াম সহ বিভিন্ন খনিজের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে।
তবে এর থেকেও সবচেয়ে বড় যে তথ্য চাঁদের মাটি থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে তা বেশ উদ্বেগজনক। সেটি হল চাঁদের তাপমাত্রার পার্থক্য। চাঁদের উপরের ২ সেন্টিমিটার স্তরের নিচ থেকে ৮ সেন্টিমিটার নামলেই তাপমাত্রার পার্থক্য দাঁড়ায় ৬০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এছাড়াও ধরা পড়েছে চাঁদে দিনে কত তাপমাত্রা থাকে আর রাতে সেই তাপমাত্রা নেমে কোন জায়গায় পৌঁছায়। কারণ বিক্রম এবং প্রজ্ঞান এখন চাঁদের মাটিতে দিন ও রাত উভয় সময়েই কাটাচ্ছে।
চাঁদের নিরক্ষীয় অঞ্চলে দিনের বেলায় তাপমাত্রার পারদ পৌঁছে যায় ২৫০ ডিগ্রি ফারেনহাইট অর্থাৎ ১২০ ডিগ্রী সেলসিয়াস বা ৪০০ ডিগ্রি কেলভিনে। আর রাতের বেলায় তরতরিয়ে নেমে যায় তাপমাত্রা। রাতের বেলায় চাঁদে তাপমাত্রার পারদ নেমে দাঁড়ায় -১৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। চাঁদের মেরুর কাছাকাছি যে সকল জায়গা রয়েছে সেখানেই এই তাপমাত্রা আরও কয়েকগুণ নেমে যায়। সে ক্ষেত্রে তাপমাত্রা নেমে দাঁড়ায় মাইনাস ২৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
স্বাভাবিক একবার ভেবে দেখেছেন এমন তাপমাত্রায় কিভাবে রয়েছে বিক্রম এবং প্রজ্ঞান। ইসরোর বিজ্ঞানীরা এখন এই অভিযানের দুই মহাসেনাকে ঘুম পাড়িয়ে দিলেও আশা করা হচ্ছে ২২ সেপ্টেম্বর যখন চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে পুনরায় সূর্যের আলো পড়বে তখন তারা আবার জেগে উঠবে। এর জন্য রিসিভার অন রেখে বাকি সমস্ত মেশিনপত্র স্লিপ মোডে পাঠানো হয়েছে।