নিজস্ব প্রতিবেদন : বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারীর কাছে নন্দীগ্রামে হেরেও মুখ্যমন্ত্রীর পদে বসেছেন মমতা ব্যানার্জী। এই পরিস্থিতিতে আইন অনুযায়ী আগামী ৬ মাসের মধ্যে তাকে উপনির্বাচনে জয়লাভ করতে হবে তবেই তিনি মুখ্যমন্ত্রীত্ব পদ টিকিয়ে রাখতে পারবেন। কিন্তু প্রশ্ন হল বর্তমান করোনাকালে যদি উপনির্বাচন না হয় সেক্ষেত্রে কি হবে মমতা ব্যানার্জির মুখ্যমন্ত্রীত্ব?
আইন যা বলছে
সংবিধানের ১৬৪(৪) অনুচ্ছেদ অনুসারে আগামী ৬ মাসের মধ্যে বিধানসভার সদস্য পদ অর্জন করতে না পারলে মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিতে হবে মমতা ব্যানার্জিকে। তবে যদি উপনির্বাচন না হয় সেক্ষেত্রে দুটি ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া হয়েছে এই নিয়মে। পিপলস অ্যাক্ট ১৯৫১ ১৫১এ ধারা অনুযায়ী যদি কোন মুখ্যমন্ত্রীর মেয়াদ এক বছরের কম হয় এবং কমিশন কেন্দ্রের সাথে আলোচনা করে যদি সিদ্ধান্ত নেয় ওই নির্ধারিত সময়ের মধ্যে উপনির্বাচন করানো সম্ভব নয় সে ক্ষেত্রে ছাড় পাওয়া যেতে পারে।
তবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ক্ষেত্রে জটিল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক মহলের বিশেষজ্ঞরা। কারণ তিনি সবেমাত্র মুখ্যমন্ত্রী পদে বসেছেন অর্থাৎ তাঁকে মুখ্যমন্ত্রীর মেয়াদ টিকিয়ে রাখতে হবে পাঁচ বছর। পাশাপাশি কেন্দ্রের সাথে তার সম্পর্কও বর্তমানে তলানীতে। এই পরিস্থিতিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বয়ং বুধবার উপনির্বাচন দেরী হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর দিকে আঙুল তুলেছেন। তবে এরপরেও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের সামনে আরও একটি পথ খোলা রয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রীত্ব পদ টিকিয়ে রাখার সেই পথটি হল ছয় মাসের মেয়াদকাল শেষ হওয়ার আগে পদত্যাগ করে পুনরায় মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করতে হবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। এক্ষেত্রে তিনি আরও বাড়তি ছয় মাসের সময় পাবেন। এই পদ্ধতি পূর্বে অনুসরণ করতে দেখা গিয়েছিল পাঞ্জাবের কংগ্রেস নেতা তেজ প্রতাপ সিংকে।
১৯৯৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসে কংগ্রেস নেতা তেজ প্রতাপ সিং মুখ্যমন্ত্রী পদে বসেন। কিন্তু সেই সময় তিনি বিধায়ক ছিলেন না। এরপর উপ নির্বাচন না হওয়ায় ১৯৯৬ সালের মার্চ মাসে যখন তার মেয়াদ শেষ হচ্ছিল ঠিক তার আগেই তিনি পদত্যাগ করে পুনরায় মুখ্যমন্ত্রীর পদে বসেন।
এছাড়াও রয়েছে বিধান পরিষদ। গত বছরের এপ্রিল মাসে মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরের ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটেছিল। সে ক্ষেত্রে তিনি বিধান পরিষদ দ্বারা মনোনীত হয়ে মুখ্যমন্ত্রীত্ব পদ বহাল রাখার জন্য সচেষ্ট হলে রাজ্যপাল ভগৎ সিং কোশিয়ারি তা আটকে দেন। যদিও পরবর্তীকালে তিনি বিধান পরিষদের মাধ্যমেই মুখ্যমন্ত্রী পদে বহাল থাকেন।