নিজস্ব প্রতিবেদন : সুরের জগতের অন্যতম ব্যক্তিত্ব বাপ্পি লাহিড়ী। গান, সুর ছাড়াও তিনি সমাজে নিজেকে আলাদা ভাবে প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছিলেন নিজের সাজপোশাকে। চোখে সানগ্লাস, গায়ে ঝলমলে পোশাক আর সোনার গয়না। গলায় ঝুলতো পান্নাখচিত সোনার গণেশ। এসবের পরিপ্রেক্ষিতে তার গান ছাড়াও তার স্টাইল স্টেটমেন্ট আলাদাভাবে নজর কাড়তো অনুরাগীদের।
তিনি এই ভাবে সোনার গয়না পরার বিষয়ে আগ্রহী হন মূলত পাশ্চাত্যের বিখ্যাত সঙ্গীত শিল্পী এলভিসকে অনুসরণ করে। বাপ্পি লাহিড়ী এই বিষয়ে একবার জানিয়েছিলেন, কনসার্টে পারফর্ম করার সময় এলভিস সোনার চেন পরতেন। তা দেখেই তিনি অনুপ্রাণিত হন এবং নিজে প্রতিষ্ঠিত হলে এই ভাবে সোনার গয়না পরবেন বলে ঠিক করেন। পরবর্তীতে ভাবনাচিন্তা মতোই পদক্ষেপ গ্রহণ
পাশাপাশি বাপ্পি লাহিড়ী বরাবরই পপ এবং হিপহপ গানের ভক্ত ছিলেন। সেইমতো তিনি এই ধরনের গানের পাশ্চাত্যের গায়কদের অনুসরণ করতেন। এই অনুসরণ এবং নিজের প্রতিভার বলে ডিস্কো কিং বাপ্পি লাহিড়ী ভারতের সঙ্গীত জগতে আলাদা এক নক্ষত্র হয়ে উঠেছিলেন। তবে এই নক্ষত্রের পতন হয় বুধবার। মাত্র ৬৯ বছর বয়সে তিনি সকলকে ছেড়ে চলে যান।
তবে বাপ্পি লাহিড়ী কেবলমাত্র ফ্যাশন দেখানোর জন্য সোনার গয়না পরতে না এমনটা নয়। তার কাছে সোনা ছিল নাকি। যে কারণে তিনি কোন গান হিট হলেই সোনা কিনতেন। এভাবেই একে একে তার এত সোনার অলংকার হয়ে যায়। জামাপ্যান্ট পরিবর্তনের মত তিনি সোনার গয়না পাল্টে পাল্টে পরতেন দিনের ভিত্তিতে। তার গলায় ঝুলত আটটি সোনার চেন।
২০১৪ সালে যখন বাপ্পি লাহিড়ী শ্রীরামপুর লোকসভা কেন্দ্র থেকে বিজেপির প্রার্থী হন এবং প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন সেই সময় তিনি হলফনামায় জানিয়েছিলেন তার কাছে রয়েছে ৭৫৪ গ্রাম সোনার অলংকার। ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা যাচ্ছে, তিনি এই সকল সোনার অলংকার নিজের দায়িত্বেই রাখতেন। এমনকি কেউ তার সোনার অলংকার নেড়েচেড়ে দেখুক তাও তিনি চাইতেন না বা পছন্দ করতেন না।
তবে এসবের মাঝেই স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে সুরের জগতের এই নক্ষত্রের পতনের পর এই বিপুল পরিমাণ সোনার উত্তরসূরী কে হবেন? এই বিষয়ে সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে, বাপ্পি লাহিড়ীর মেয়ে এবং ছেলে রিমা ও বাপ্পা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, ডিস্কো কিং-এর সমস্ত সোনা সংরক্ষণ করা হবে। পাশাপাশি সংগ্রহশালা তৈরি করার পরিকল্পনাও রয়েছে তাদের।