Kumbh Mela: পরবর্তী মহাকুম্ভ কোথায় ও কবে হবে? জানেন কি কুম্ভমেলার প্রকারভেদ সম্পর্কে?

Prosun Kanti Das

Published on:

Advertisements

Kumbh Mela: ভারতে কুম্ভমেলার আয়োজন করা হয় প্রতি বারো বছরে একবার। সনাতন হিন্দু ধর্মের মানুষদের কাছে এই মেলার গুরুত্ব অত্যন্ত বেশি। শুধুমাত্র দেশের মানুষ নয় বিদেশের বহু মানুষও এই কুম্ভমেলায় আসেন পুণ্য সঞ্চয়ের আশায়। চলতি বছর মহাকুম্ভ শুরু হয়েছে ১৩ জানুয়ারি থেকে এবং এর আয়োজন করা হয়েছে প্রয়াগরাজ (Prayagraj) এ, এখানে গেলেই দেখতে পারবেন মানুষের বিশ্বাস এবং আস্থা মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছে। মানুষের ঢল সত্যিই অবাক করার মত। ২০২৫ সালের মহাকুম্ভের সমাপ্তি ২৬শে ফেব্রুয়ারি মহাশিবরাত্রিতে হবে। ২০২৫ সালের মহাকুম্ভ সবথেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ কারণ এতে রয়েছে নিজস্ব অনন্য খগোলীয় সন্নিবেশ (Unique Celestial Alignments) এবং পাশাপাশি এর ঐতিহাসিক গুরুত্বের জন্য সব কুম্ভমেলার (Kumbh Mela) মধ্যে সবচেয়ে শুভ মনে করা হচ্ছে।

Advertisements

প্রতি ১২ বছরে চারটি পবিত্র স্থানে আয়োজিত হয় এই কুম্ভ মেলা, প্রয়াগরাজ (Prayagraj), হরিদ্বার (Haridwar), উজ্জয়িন (Ujjain) এবং নাসিক (Nasik)। মহাকুম্ভ মেলা একটি বিরল ঘটনা, যা প্রতি ১৪৪ বছরে একবার হয়। সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল ২০২৫ সালের পর পরবর্তী মহাকুম্ভ আয়োজিত হবে ২১৬৯ সালে। ভক্তদের মধ্যে এই কারণেই চলতি বছরের মহাকুম্ভ মেলা এত বেশি গুরুত্বপূর্ণ। প্রতি ১২ বছর বাদেই কেন আয়োজন করা হয় এই মেলার? পরবর্তী মহাকুম্ভ কখন এবং কোথায় হবে, এর কতগুলো প্রকার রয়েছে এবং এর ধর্মীয় ও আধ্যাত্মিক গুরুত্ব কী? সবকিছুই জানা যাবে আজকের প্রতিবেদনে।

Advertisements

কেন পালন করা হয় কুম্ভমেলা (Kumbh Mela)? সাধারণত দেশের চারটি পবিত্রস্থানে আয়োজন করা হয় এই বিশেষ কুম্ভমেলার। দেশের এই চারটি পবিত্র স্থান হল হরিদ্বার, প্রয়াগরাজ, উজ্জয়িন এবং নাসিক অন্তর্ভুক্ত। মানুষের মধ্যে বিশ্বাস যে, যখন দেবতারা এবং অসুরেরা সমুদ্র মন্থন করেছিলেন, তখন এই চারস্থানে অমৃতের কিছু ফোঁটা পড়ে গিয়েছিল, এজন্য এই স্থানগুলোকে পবিত্র মনে করা হয় এবং এইসব কারণের জন্যই এই বিশেষ স্থানগুলোতে আয়োজন করা হয় কুম্ভমেলার। কুম্ভমেলার (Kumbh Mela) ধর্মীয় এবং আধ্যাত্মিক গুরুত্ব সকল হিন্দুর কাছেই অত্যন্ত বেশি। ভক্তদের আত্মশুদ্ধির সুযোগ প্রদান করা কুম্ভমেলার আসল উদ্দেশ্য। কুম্ভমেলাতে স্নান করার আসল উদ্দেশ্য হল, এই মেলা চলাকালীন পবিত্র নদীতে স্নান করলে একজন মানুষের সব পাপ ধুয়ে যায় এবং মৃত্যু পরবর্তী মোক্ষ লাভ হয়। কুম্ভমেলা সাধু-সন্ত, গুরু এবং ভক্তদের মিলনস্থল, যেখানে মানুষ ভক্তি, জ্ঞান এবং সেবার আদান-প্রদান করেন।

Advertisements

নিয়মিত কুম্ভ মেলা প্রতি ১২ বছরে চারটি স্থানে অনুষ্ঠিত হয় এবং এর ধর্মীয় গুরুত্ব হিন্দুদের কাছে অপরিসীম। কিন্তু নিয়মিত কুম্ভমেলাতে মহাকুম্ভের (Mahakumbh) মতো আধ্যাত্মিক শক্তি থাকে না। সকলের কাছে শুভ বলে মনে করা হয় এই মহাকুম্ভ। এই সময়ে করা পূজার ফল অনেক গুণ বৃদ্ধি পায়। এই সময় যে স্নান করা হয় তা রয়্যাল স্নান বা অমৃত স্নান হিসেবে পরিচিত। সাধু-সন্ন্যাসীদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই অমৃতস্নান। প্রচলিত বিশ্বাস অনুযায়ী, মহাকুম্ভে স্নান করলে ১০০০ অশ্বমেধ যজ্ঞের সমান পুণ্য লাভ হয়। সাধু-সন্তরা এই সময়ে প্রভুর স্মরণ করেন এবং মোক্ষ লাভের আকাঙ্ক্ষা নিয়ে মহাকুম্ভে আস্থা ডুবানোর জন্য আসেন।

আরও পড়ুন: মহাকুম্ভে পদদলিত বহু পুণ্যার্থী, কোনো চক্রান্ত? কড়া তদন্তের নির্দেশ উত্তরপ্রদেশ মুখ্যমন্ত্রীর

১২ বছর বাদে এই কুম্ভমেলা (Kumbh Mela) আয়োজন করার আসল কারণ কি? কুম্ভ মেলার আয়োজন খগোলীয় ঘটনার ওপর ভিত্তি করে হয়। জ্যোতিষীয় বিশ্বাস অনুযায়ী, যখন বৃহস্পতি কুম্ভ রাশিতে প্রবেশ করে এবং সূর্য মকর রাশিতে থাকে, তখন কুম্ভ মেলা অনুষ্ঠিত হয়। বৃহস্পতি তার কক্ষপথে প্রদক্ষিণ করতে সময় নেয় ১২ বছর, তাই প্রতি ১২ বছরে একবার কুম্ভ মেলার আয়োজন করা হয়। আবার কবে হবে পরবর্তী মহাকুম্ভ? মহাকুম্ভের আয়োজন প্রতি ১২ বছরের ব্যবধানে হয়, যার ফলে এর ধর্মীয় গুরুত্ব আরো বাড়ে। এই সময়ে কুম্ভ, অর্ধ কুম্ভ এবং পূর্ণ কুম্ভও হরিদ্বার, নাসিক, উজ্জয়িন এবং প্রয়াগরাজে অনুষ্ঠিত হতে থাকবে। এর পরের কুম্ভ ২০২৭ সালে নাসিকে অনুষ্ঠিত হবে, ২০২৮ সালে উজ্জয়িনে সিংহস্থ মহাকুম্ভ হবে এবং ২০৩০ সালে প্রয়াগরাজে অর্ধকুম্ভের আয়োজন হবে।

বিভিন্ন রূপে কুম্ভমেলা (Kumbh Mela) আয়োজন করা হয়। প্রতিটি কুম্ভমেলার কিন্তু আলাদা আলাদা মাহাত্ম্য রয়েছে। তার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিশ্বাসও আলাদা হয়।
মহাকুম্ভ মেলা: এটি সবচেয়ে পবিত্র মেলা, যা প্রতি ১৪৪ বছরে একবার আসে, বিশেষভাবে প্রয়াগরাজে। যেরকম আধ্যাত্মিক গুণ বাড়ায় সেরকমভাবে ভক্তদের মধ্যে এটি অত্যন্ত জনপ্রিয়।

  • পূর্ণকুম্ভ মেলা: পূর্ণকুম্ভ মেলার আয়োজন করা হয় প্রতি ১২ বছরে। এই মেলা চারটি স্থানে প্রয়াগরাজ, হারিদ্বার, উজ্জয়িন এবং নাসিক অনুষ্ঠিত হয়। এটি নদীতে পবিত্র স্নানের জন্য বড় সমাবেশ দ্বারা চিহ্নিত।
  • অর্ধকুম্ভ মেলা: প্রতি ৬ বছরে অর্ধকুম্ভ মেলার আয়োজন প্রয়াগরাজ এবং হারিদ্বারে, যা পূর্ণকুম্ভ মেলার মধ্যবর্তী সময়ে অনুষ্ঠিত হয়।
  • মাঘ মেলা: মাঘমেলা ছোট কুম্ভ হিসেবেও কিন্তু পরিচিত। প্রতি বছর মাঘ মাসে (জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি) প্রয়াগরাজে অনুষ্ঠিত হয় এবং এই মেলা পবিত্র স্নানের জন্য বহু তীর্থযাত্রীকে আকর্ষণ করে।
Advertisements