Maa Dakshina Kali Temple: এই মন্দিরে প্রবেশ করতেই অবাক হয়ে যান ভক্তরা। সামনে থেকে ভগবানকে দর্শন করেও বুঝতে পারেন না তারা যে এ কার মূর্তি দেখছেন তারা! কি বলে সম্বোধন করবেন তাদের চোখের সামনের এই ভগবানকে! কেউ কেউ প্রথম দেখাতেই বলেন এ যেন মা কালী তো অন্য কেউ বলেন না না এ হলো স্বয়ং জগন্নাথ দেব। হ্যাঁ ঠিক এমনই সংশয়ের ঘটনা ঘটে প্রত্যেক কার্তিক অমাবস্যাতে। পুরীর বীরগোবিন্দপুরে অবস্থিত এই মন্দিরটি (Maa Dakshina Kali Temple) খুবই জনপ্রিয় ও প্রসিদ্ধ। পুরীতে অবস্থিত জগন্নাথ মন্দিরের কথা তো আমরা সবাই জানি।
বাঙালিদের ভ্রমণ করার সবথেকে পছন্দের প্রিয় স্থান এটি। কিন্তু জানতেন কি এই পুরীরই খুব কাছে অবস্থিত স্থান বীরগোবিন্দপুরে পুজিত হন মা দক্ষিণাকালী। কিন্তু তার রূপ অন্য সকল কালী মূর্তির তুলনায় একটু অন্য রকম। আরো চমকানোর মতো বিষয় হল মা কালীর মূর্তির সব কিছু অন্য কালিমূর্তির সমান হলেও তার মুখমন্ডল জগন্নাথ দেবের মতো। তাই ভক্তরা প্রথমে প্রবেশ করলেই তাকে কালী বলবেন না জগন্নাথ সেই নিয়ে সংশয়ে পরে যান।
শুধুমাত্র বীরগোবিন্দপুরের এই মন্দিরেই নয়, মা কালির এই রূপ ধরা পরে পুরীর বিভিন্ন মন্দিরেই। পুরীতে বিভিন্ন স্থানে মা পুজিত হন এই রূপে। কথিত আছে ভগবান এক এবং অদ্বিতীয় ভক্তরা তাকে যে রূপে দেখতে চান তিনি সেই রূপেই তার সামনে আসেন। এই মন্দিরটি ছাড়াও মাকে এই রূপে ওড়িশার বিভিন্ন মন্দিরে দেখতে পাওয়া যায়। এই মন্দির গুলিতে মায়ের মুখমন্ডল হয় জগন্নাথদেবের মতো, কিন্তু বাকি দৈহিক বৈশিষ্ট্যে থাকে অন্যান্য কালিমূর্তির মতো চারটি হাত এবং তাতে সুসজ্জিত অস্ত্র। চরণের নিচে বিরাজমান থাকেন মহাদেব। তবে দেবীর মুখমন্ডল শরীরের তুলনায় একটু বড়ো বানানো হয়। আর মুখের আদল রাখা হয় জগন্নাথ দেবের মতো।
আরো পড়ুন: সামনেই কালীপুজো! জানেন কি নৌহাটির বড় মায়ের পুজোর দিনক্ষণ কখন?
শাস্ত্র পাঠে বিভিন্ন জায়গায় মা কালীর সাথে একসূত্রে আলোচনা করা হয়েছে জগন্নাথ দেবকে। পুরাণের ঘটনায় কৃষ্ণকে কালী দেখতে পাওয়ারও উল্লেখ রয়েছে। শুধুমাত্র কৃষ্ণ বা জগন্নাথ ই নন মা কালীকে একই যোগসূত্রতে বাধা হয়েছে বলরাম ও সুভদ্রার সঙ্গেও।
আরো পড়ুন: ধনতেরাসের দিনে এই ৫টি জিনিস কিনলেই সর্বনাশ, ঘরে আসবে না সম্পদ, আসবে দুর্ভাগ্যের ছায়া
মা কালীকে আমরা চিনি কালের নাশ ও মহাবিদ্যার অঙ্গ হিসেবে। এবং জগন্নাথ হলেন এই পুরো বিশ্বের তথা পুরো জগতের তিনি নাথ, তার ছত্রছায়াতেই আমরা বসবাস করছি। তাই ভগবানের এই দুই রূপ একসাথে মিলে ভক্তদের উপর তাঁর কৃপাদৃষ্টি মেলে রেখেছেন।
তবে সবসময় দেখা মেলেনা ভগবানের এই রূপের। কার্তিক মাসের অমাবস্যা তেই একমাত্র এই মূর্তি এনে পুজো করা হয়। বাকি সারাবছর পুজিত হয় তার কাঠামো। মা এর এই মূর্তিতে পুজো দেওয়া কে অনেকে জগন্নাথ দেবকে পুজো দিলেন একথা মনে করেন। কারণ দেবীর পূজায় তুষ্ট হন স্বয়ং জগন্নাথ। যদিও জগন্নাথকে যেমন বৈষ্ণব মতে পূজা করা হয় মা কালী পুজিত হন সম্পূর্ণ আলাদা মতে। প্রত্যেক বছর কালীপুজোর সময় ভক্তরা ভিড় জমান এই মন্দিরে। অনেকে পুরি ঘুরতে গেলেও দর্শন করে আসেন বীরগোবিন্দপুরের এই দক্ষিণাকালী মন্দির (Maa Dakshina Kali Temple)।