লাল্টু : ৩৩৫৩ একর জমিতে ১৯৬ মিলিয়টন কয়লা রয়েছে দুবরাজপুর ব্লকের অন্তর্গত লোবা এবং পার্শ্ববর্তী এলাকায়। কিন্তু বছরের পর বছর ধরে এই প্রকল্প আটকে জমি জটের কারণে। সমস্যা সমাধানের জন্য লোবা কৃষি জমি রক্ষা কমিটি গঠন হয়। সেই কমিটির সাথে আলোচনার মধ্য দিয়ে প্রকৃত জমির মালিক খুঁজে বের করে লোবায় প্রস্তাবিত খাগড়া-জয়দেব খোলামুখ কয়লাখনি গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি বদ্ধ সরকার।
তবে লোবা কৃষিজমি রক্ষা কমিটির সদস্যদের অভিযোগ ভিন্ন। যে অভিযোগের ভিত্তিতেই এখন প্রশ্ন উঠেছে আদৌ এই সমস্যার সমাধান হবে তো? তাদের অভিযোগ, “তৃণমূল সরকার ২০১১ সালে রাজ্যের শাসনে এসেছে। এরপর দেখতে দেখতে ১০ টা বছর পেরিয়ে গেল, বহুবার ডিএম অফিসের মিটিং করা হলেও এখনো পর্যন্ত কোন রকম সমস্যা সমাধানের পথ দেখাতে পারেনি সরকার। নামেই কমিটি গঠন হয়েছে, কোন কাজ হয়নি।”
আর এমন পরিস্থিতিতে রবিবার লোবা কৃষিজমি রক্ষা কমিটির সদস্যরা লোবা মায়ের মন্দিরে একটি ৬ নভেম্বরের (করোনার কারনে নির্দিষ্ট দিনে হয়নি) প্রতিবাদ সভা করেন এবং সেই বৈঠক কমিটির সম্পাদক জয়দেব মজুমদার জানান, “এখানকার মানুষদের অভিযোগ তাদের রেকর্ড সংশোধন অথবা অন্যান্য কাজগুলি হচ্ছে না। যে কারণে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি ডিএম অফিসের অর্থাৎ জেলা স্তরের কোন মিটিংয়ে আমরা আর যাবো না। যে সমস্ত কাগজপত্র বিএলআরও অফিসে পড়ে আছে সেগুলির একটিও এখনো ঠিক হয়নি। এই সকল কাগজপত্র যতদিন না ঠিক হচ্ছে ততদিন আমাদের এই সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে।”
পাশাপাশি জয়দেব মজুমদার এটাও অভিযোগ করেছেন, “কিছু মানুষ নানান ভাবে আমাদের নাজেহাল করছে। যে কারণে আমরা মাঝে মাঝেই প্রশাসনের উপর ভরসা হারিয়ে ফেলছি। তাই আমাদের সিদ্ধান্ত আলোচনা করতে হলে আসতে হবে গ্রামেই।”
একইভাবে কৃষিজমি রক্ষা কমিটির আহ্বায়ক বুধন ঘোষ তৃণমূল সরকারের নীতি এবং আদর্শ নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। তার কথায়, “এই আন্দোলন তো তৈরি করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উনার নীতি মেনে আমরা চলছিলাম। কিন্তু দেখা গেল ২০১২ সালের ৬ নভেম্বর আমাদের আন্দোলনের উপর গু’লি চালালো পুলিশ। শুধুমাত্র একটি মেশিনকে উদ্ধার করার জন্য। তাহলে কোথায় নীতি, কোথায় আদর্শ!”
লোবা কৃষি জমি রক্ষা কমিটির সভাপতি ফেলারাম মন্ডল জানিয়েছেন, “দীর্ঘ লকডাউন চলার পর অনেকেই হয়তো ভেবেছিলেন আমরা আলাদা হয়ে গেছি। কিন্তু আমরা যে একজোট হয়েই লড়াই চালাচ্ছি তারই বার্তা আজকের এই প্রতিবাদ সভা এবং আলোচনা সভা।”
যদিও আজকের এই বৈঠকের পর কৃষিজমি রক্ষা কমিটির সদস্যরা আর জেলা স্তরের বৈঠকে যাবেন না এমন সিদ্ধান্ত প্রশাসনিকভাবে প্রশাসনিক কর্তাকে এখনও পর্যন্ত জানাননি। এই সিদ্ধান্ত জেলা প্রশাসনের কর্তাদের গোচরে আসার পর তারা কি সিদ্ধান্ত নেন তার দিকেই তাকিয়ে রয়েছেন জেলা তথা রাজ্যের বাসিন্দারা।