JCB: জেসিবি কি, এর কাজ কি, এবং সম্পূর্ণ নামই বা কি, রইল বিস্তারিত। জেসিবি (JCB) বলতে আমরা বুঝি একটি যন্ত্রকে। যা মূলত খননকার্য বা ভারী জিনিস বহনের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়। অনেক পরিমানের বজ্র পদার্থ ফেলা অথবা কোন খণণকার্য সবকিছুতেই ব্যবহৃত হয় এই মেশিনটি। কিন্তু আপনি কি জানেন জেসিবি আসলে কি? এর সম্পূর্ণ নামই বা কি? এর কাজই বা কি? জেসিবি কিন্তু আদতে কোন মেশিন নয়, এটি একটি সংস্থা। কথাটা বিশ্বাস হচ্ছে না তাই তো? কিন্তু এটাই সত্যি। লোকোমুখে প্রচার হতে হতে জেসিবি একটি নির্দিষ্ট মেশিনের নামে পরিণত হয়েছে। কিন্তু আদতে তা একটি সংস্থা।
জেসিবি (JCB) কোন মেশিন নয়, এটি মূলত একটি ভারী মেশিন প্রস্তুতকারক সংস্থা। জেসিবির সম্পূর্ণ কথা হলো জোসেফ সিরিল ব্যামফোর্ড। এটি নির্দিষ্ট সংস্থাটির মালিকের নাম। তার নাম অনুসারেই সংস্থাটিরও নামকরণ করা হয় জেসিবি। সংস্থাটির ব্যবসায়িক যাত্রা শুরু হয়েছিল ১৯৪৫ সালে। নির্মাণ কার্য, কৃষি কার্য, ধ্বংসস্তূপ অথবা বজ্র পদার্থ এই সমস্ত কাজের সাথে জড়িত যন্ত্রপাতি তৈরি করাই জেসিবি সংস্থার কাজ।
জেসিবি (JCB) সংস্থাটির মূলত এক্সক্যাভেটার, ট্রাক্টর, লোডার বা ওই জাতীয় ভারি মেশিন বা যন্ত্রই তৈরি করে। ১৯৪৫ সালে একটি লক-আপ গ্যারেজ ভাড়া নিয়ে কাজ শুরু করে জেসিবি সংস্থা। যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যবহৃত উদ্বৃত্ত উপকরণ দিয়ে একটি টিপিং ট্রেলার তৈরি করা হয় সংস্থার পক্ষ থেকে। এটিই ছিল এই সংস্থা দ্বারা নির্মিত প্রথম যন্ত্র। জেসিবির মাধ্যমে প্রথম হাইড্রোলিক টিপিং ট্রেলার তৈরি করা হয়েছিল ১৯৪৮ সালে। এই যন্ত্র তৈরি হয় ইউরোপে। মোট ৬ জন ব্যক্তি সংস্থার হয়ে কাজ করে এই মেশিনটি তৈরি করেছিলেন। ১৯৫০ সালে একটি পনির কারখানার এই মেশিনটিকে হস্তান্তরিত করা হয়।
আরো পড়ুন: সময়মতো মোবিল না পাল্টালে ক্ষতি হতে পারে বাইকের, জানুন সঠিক নিয়ম
জেসিবির (JCB) দ্বারা তৈরি করা যন্ত্রপাতিগুলির একটি বিশেষত্ব আছে। প্রত্যেকটি যন্ত্রপাতি মূলত হলুদ রঙের হয়ে থাকে। ১৯৫১ সাল থেকে এই পদ্ধতি চালু করেছে সংস্থা। আজও তা মেনে চলা হচ্ছে। ১৯৫৩ সালে প্রথম ব্যাকহো লোডার তৈরি করা হয় সংস্থার পক্ষ থেকে। ১৯৬৪ সালের মধ্যে অর্থাৎ মাত্র ৯ বছরের মধ্যে প্রায় ৩০০০ টিরও বেশি বেকহো লোডার বিক্রি করে এই সংস্থা।
বর্তমানে এই সংস্থার পক্ষ থেকে একটি হাইড্রোজেন দহন ইঞ্জিন তৈরি করা হয় যার সাহায্যে সংস্থার তৈরি করা বেশ কিছু ডিজেল ম্যাক্স ইঞ্জিনের অংশ পুনর্ব্যবহারযোগ্য করে তোলা যায়। এছাড়া চালু করা হয়েছে জেসিবি ইন্স্যুরেন্স সার্ভিস এবং জেসিবি ফাইন্যান্স সার্ভিস। ফাইন্যান্স সার্ভিসের মাধ্যমে গ্রাহকদের জন্য বীমা প্রদান করে জেসিবি ইন্সুরেন্স সার্ভিস। এই মুহূর্তে গোটা বিশ্ব জুড়ে মোট বাইশটি কারখানা রয়েছে জেসিবির (JCB)। ১৫০ টিরও বেশি দেশ জেসিবির তৈরি করা যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে।