মেন লাইন ছেড়ে কেন লুপ লাইনে ঢুকে পড়ল করমণ্ডল! উঠে আসছে এই বড় কারণ

Shyamali Das

Published on:

Advertisements

নিজস্ব প্রতিবেদন : গত শুক্রবার ছিল ভারতীয় রেলের (Indian Railways) কাছে ছিল কালো দিন। ঐদিন করমন্ডল এক্সপ্রেস (Coromandel Express), যশবন্তপুর হাওড়া হামসাফার এক্সপ্রেস ওড়িশার বালেশ্বররের বাহানাগা বাজারে দুর্ঘটনার মুখে পড়ে। যে দুর্ঘটনায় এখনো পর্যন্ত ২৭৫ জন প্রাণ হারিয়েছেন এবং এক হাজারের বেশি মানুষ আহত।

Advertisements

একই জায়গায় তিনটি ট্রেনের দুর্ঘটনায় কে কাকে প্রথম ধাক্কা মেরেছিল তা নিয়ে প্রথম দিকে নানান প্রশ্ন উঠলেও পড়ে জানা যায় করমন্ডল এক্সপ্রেসই রেললাইন ছেড়ে ঢুকে পড়েছিল লুপ লাইনে। করমন্ডল এক্সপ্রেস লুপ লাইনে ঢুকে পড়ার পর ট্রেনটি সরাসরি ধাক্কা মারে দাঁড়িয়ে থাকা একটি মালগাড়িকে। আর ঠিক সেই সময় হাওড়া যশবন্তপুর হামসফর এক্সপ্রেস ডাউন মেন লাইন দিয়ে যাওয়ার সময় করমন্ডলের ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কামরায় ধাক্কা খেয়ে তিনটি বগি লাইনচ্যুত হয়। এই ঘটনা সামনে আসার পর প্রশ্ন উঠছে কেন করমন্ডল এক্সপ্রেস মেন লাইন ছেড়ে লুপ লাইনে ঢুকে গেল?

Advertisements

প্রতিটি স্টেশনেই ট্রেন দাঁড় করিয়ে রাখা অথবা অন্য ট্রেনকে পাশ করানোর জন্য লুপ লাইন থাকে। ঠিক একইভাবে বাহানাগা রেলস্টেশনেও দুটি লুপ লাইন রয়েছে আপ ও ডাউন। তবে করমন্ডল এক্সপ্রেস মেন লাইন ছেড়ে লুপ লাইনে ঢুকে পড়ার প্রসঙ্গ আসতেই বুম গেটের প্রসঙ্গও আসছে। এই গেট সতর্কতামূলকভাবে দেওয়া হয় যাতে ট্রেন চলাচলের সময় কোন মানুষ বা গাড়ি লাইনের উপর উঠে না আসে।

Advertisements

জানা যাচ্ছে, লেভেল ক্রসিংয়ের গেটগুলি ‘ইলেট্রনিক ইন্টারকানেকটেড সিগন্যালিং সিস্টেম’-এর সঙ্গে ইন্টারলকিং থাকে। যার ফলে ট্রেন ছোট স্টেশনগুলি দ্রুতগতিতে পার হওয়ার সময় সম্পূর্ণ বিষয়টি স্বয়ংক্রিয়ভাবে কন্ট্রোল হয়ে থাকে। আর এই সব থেকেই উঠে আসছে করমন্ডল এক্সপ্রেস লুপ লাইন ছেড়ে মেন লাইনে ঢুকে পড়ার সম্ভাব্য কারণ।

১) নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক রেল কর্মীর থেকে জানা যাচ্ছে, বুম বেরিয়ার সার্কিট কানেকশনের সঙ্গে কোনো বাধা সৃষ্টি করে থাকলেও থাকতে পারে। যে কারণে সিগন্যালিং সিস্টেমে কোন সমস্যা হয়েছিল। এর পাশাপাশি তিনি সর্বভারতীয় একটি সংবাদ মাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, এক্ষেত্রে অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষার জায়গা থাকে, তবে এমনও হতে পারে কাজের চাপে তা করা সম্ভব হয়নি। এমন ঘটনায় সামনে মালগাড়ি দেখেও লোকো পাইলটের কিছু করার ছিল না।

২) এর পাশাপাশি তিনি জানিয়েছেন, কোন ট্রেন মেন লাইন থেকে লুপ লাইনে এলে ট্রেনটির গতিবেগ কমিয়ে আনা হয় ঘন্টায় ১৫ কিলোমিটারে। কিন্তু করমন্ডলের ক্ষেত্রে লোকো পাইলট বিভ্রান্তির মধ্যে ছিলেন, কারণ তার মেন লাইনে যাওয়ার জন্য গ্রিন সিগন্যাল ছিল।

৩) এমনকি এই ট্রেন দুর্ঘটনার পর কবচ থাকলেও দুর্ঘটনা এড়ানো যেত কিনা তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। কারণ কবচ কাজে লাগানোর ক্ষেত্রে লোকো পাইলটের ভূমিকা থাকে। কিন্তু এক্ষেত্রে লোকো পাইলট বুঝতেই পারেননি তিনি লুপ লাইনে ঢুকছেন এমনটাই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

এর পাশাপাশি রেলের আরও এক আধিকারিক সূত্রে জানা যাচ্ছে, লোকো পাইলট এবং সহকারী প্রতি দেড় কিলোমিটার অন্তর অন্তর সিগন্যাল দেখে থাকেন। সেই সিগন্যাল গ্রীন নাকি রেড তা নিজেদের মধ্যে জানানো হয় নিশ্চিত করার জন্য। এসবের পরিপ্রেক্ষিতেও করমন্ডল এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনা খুবই দুর্ভাগ্যজনক এবং এই নিয়ে তদন্ত চালাচ্ছে রেল।

Advertisements