১৩ সংখ্যাকে অনেকেই অশুভ(Unlucky 13) মনে করেন। যদিও শুভ-অশুভ নিয়ে বিভিন্ন জনের বিভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গী রয়েছে। আর সেগুলির সবগুলোই নেতিবাচক। এই ১৩ সংখ্যাটিকে বিশ্বের বেশিরভাগ দেশই বিশেষ করে পশ্চিমী দেশগুলো অশুভ মনে করে থাকে। সংখ্যাতত্ত্বেও ১৩ সংখ্যাটিকে খুব একটা ভালো চোখে দেখা হয় না। বাংলার প্রবাদ প্রতীম নন্দ ঘোষে বলেছিলেন ‘১৩’ নম্বর সংখ্যাটি হলো যত নষ্টের মূল। কিন্তু কোন কারণে মানুষের মনে এই সংখ্যাটিকে নিয়ে এমন অদ্ভুত ধারণা হয়েছে?
গোটা বিশ্বের মতে পশ্চিমের দেশগুলি আমাদের দেশের থেকে উন্নতদেশ। তারা সকল কিছু যুক্তি দিয়ে চিন্তা করে, বিজ্ঞান মনস্কতায় বেশি জোর দেয় এই দেশ গুলি। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে তা নয়। পশ্চিম বিশ্বের মানুষেরাও প্রচুর কুসংস্কার মেনে চলে। তারা মনে করে, ১৩ সংখ্যাটি অত্যন্ত অশুভ একটি সংখ্যা। এই ১৩ নম্বর নিয়ে সেখানের মানুষের মধ্যে এক ধরনের ভীতি কাজ করে, যায় পোশাকি নাম ট্রিস্কাইড ফোবিয়া।
যদিও এই গল্পের সঙ্গে বাস্তবের কোনও সম্পর্ক রয়েছে কিনা, সেটা জানা নেই। তবে সংবাদমাধ্যম সূত্রে পাওয়া খবর অনুযায়ী, পাশ্চাত্য দেশ গুলির মানুষেরা বিশ্বাস করেন যে, একদা যিশুখ্রিস্টর সঙ্গে কোনো এক ব্যক্তি বিশ্বাসঘাতকতা করেছিলেন। আর সেই ব্যক্তিটি প্রভু যিশুর সঙ্গে বসেই অন্ন গ্রহণ করেছিল। অদ্ভুত ভাবে, সেই ব্যক্তির বসা চেয়ারের নম্বর ছিল ১৩। আর মনে করা হয়, এই ঘটনার পর থেকেই ১৩ সংখ্যাটিকে পাশ্চাত্যের মানুষ বিশ্বাসঘাতকতার প্রতীক বলে মনে করেন।
জানলে অবাক হবেন যে, কিন্তু ১৩ নম্বরের ভীতির মাত্রা এতটাই যে, ফ্রান্সের কোনও হোটেল বা রেস্তোরাঁয় ১৩ নম্বর চেয়ার রাখাও হয় না। নিয়মই অলিখিত হলেও, এদেশের ব্যবসায়ীরা কঠোরভাবে মেনে চলেন এটি। তারা ভাবেন, তেরো নম্বর চেয়ারে কোনও অতিথি বসলে কোনও অশুভ ঘটনা ঘটে যেতে পারে। শুধু পাশ্চাত্য দেশ নয় ১৩ অশুভ শক্তিকে মেনে চলে আমাদের দেশও। চণ্ডীগড়ে গেলে দেখা যাবে যে, সেখানে ১২ নং সেক্টরের পরে থাকে ১৪ নম্বর সেক্টর।
ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ীর সঙ্গে ১৩ সংখ্যাটির একটি নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। যেমন, তাঁর প্রথমবারের সরকারের স্থায়িত্ব ছিল মাত্র ১৩ দিন। আবার ১৩ তারিখেই তিনি প্রধানমন্ত্রীর শপথ নেন। তখনও তার সরকার মাত্র ১৩ মাসের জন্য স্থায়ী হয়েছিল। তারপর তিনি আবার ১৩টি দলের সমর্থন পেয়ে ১৩ তারিখে ১৩ তম লোকসভার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছিলেন। কিন্তু আবারো সেই ১৩ তারিখেই তিনি পরাজয়ের মুখ দেখেনি।