Amala Mukherjee: নাগার্জুন, দক্ষিণী সিনেমার এক অপ্রতিদ্বন্দ্বী নাম, যিনি তার অভিনয় দক্ষতা দিয়ে কোটি কোটি মানুষের হৃদয় জয় করেছেন। কিন্তু তার ব্যক্তিগত জীবনের একটি অধ্যায় অনেকেরই অজানা, তার স্ত্রী অমলা মুখোপাধ্যায়ের (Amala Mukherjee) বাঙালি পরিচয়। অমলার জীবন কাহিনী যেন এক রূপকথার গল্প, যা অনেকের কাছে এখনও অজানা। তার বাঙালি পরিচয়, নাগার্জুনের সঙ্গে প্রেমের গল্প, এবং তাদের বৈবাহিক জীবনের রহস্যময় দিকগুলো নিয়ে আজকের এই আলোচনা।
১৯৬৭ সালের ১২ই সেপ্টেম্বর কলকাতায় জন্মগ্রহণ করা অমলার জীবনের প্রথম অধ্যায়েই রয়েছে নানা চমকপ্রদ ঘটনা। তার বাবা ছিলেন একজন নৌবাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, আর মা ছিলেন আয়ারল্যান্ডের নাগরিক। ছোটবেলায় কলকাতায় বেড়ে ওঠা অমলা পরে পরিবারসহ চেন্নাইয়ে চলে যান। চেন্নাইয়ের বিখ্যাত ‘কলাক্ষেত্র’ থেকে ভরতনাট্যমে প্রশিক্ষণ নেওয়া অমলা (Amala Mukherjee) শুধুমাত্র নৃত্যশিল্পী হিসেবেই নয়, বরং একজন বহুভাষাবিদ হিসেবেও নিজের পরিচয় প্রতিষ্ঠা করেন। ইংরেজি, তামিল, তেলুগু ভাষায় দক্ষতার পাশাপাশি তিনি বাংলা ভাষাও বেশ ভালোভাবেই বুঝতে এবং বলতে পারেন।
নাগার্জুনের সাথে অমলার (Amala Mukherjee) প্রেমের গল্প শুরু হয় ১৯৯০-এর দশকের গোড়ার দিকে, যখন তারা একসঙ্গে একটি সিনেমায় কাজ করছিলেন। তার আগে, নাগার্জুনের প্রথম বিয়ে হয়েছিল লক্ষ্মী ডজ্ঞুবতীর সঙ্গে, কিন্তু সেই বিয়ে টেকেনি। ১৯৯০ সালে তাদের বিচ্ছেদ হয়। এরপরই নাগার্জুনের জীবনে আসে অমলা, এবং তারা ১৯৯২ সালে বিয়ে করেন। তাদের বিয়ের খবর সারা ভারত জুড়ে হইচই ফেলে দেয়, কারণ এই বিয়ে ছিল ভিন্ন সাংস্কৃতিক পটভূমির একটি উদাহরণ। ১৯৯৪ সালে তাদের প্রথম সন্তান অখিল আক্কিনেনির জন্ম হয়, যা তাদের পরিবারকে সম্পূর্ণ করে তোলে।
অমলার সঙ্গে বিবাহিত জীবনে নাগার্জুন পেয়েছেন এক নতুন জীবনের স্বাদ। অমলা শুধু তার স্ত্রীর ভূমিকায় সীমাবদ্ধ থাকেননি; তিনি একজন সমাজসেবী হিসেবে কাজ করে গেছেন এবং এখনও যাচ্ছেন। তার সঙ্গেই নাগার্জুন মিলে বিভিন্ন সমাজকল্যাণমূলক কাজে নিযুক্ত রয়েছেন, যা তাদের জুটিকে দক্ষিণী সিনেমার অন্যতম প্রভাবশালী দম্পতি হিসেবে তুলে ধরেছে।
আরো পড়ুন: মালাইকা আরোরার এক অন্তর্বাসের দামে হয়ে যাবে হানিমুন ট্রিপ
একটি চমকপ্রদ তথ্য হল, নাগার্জুনের প্রথম স্ত্রীর সন্তান নাগা চৈতন্যর সাথেও অমলার সম্পর্ক অত্যন্ত ভালো। নাগা চৈতন্য প্রায়ই বলেন, অমলাকে তিনি নিজের মা হিসেবেই দেখেন এবং তার প্রতি তার ভালোবাসা অপরিসীম। এভাবে, নাগার্জুনের জীবনে অমলার প্রবেশ শুধুমাত্র একটি প্রেমের গল্প নয়, বরং একটি পরিবারের নতুন করে গড়ে ওঠার গল্প।
আজও, দক্ষিণী সিনেমার জগতে নাগার্জুন এবং অমলা মুখোপাধ্যায়ের সম্পর্ক এক আলোচনার বিষয়। তাদের জীবনের বিভিন্ন দিক যেমন প্রেম, বিচ্ছেদ, পুনর্মিলন এবং পারিবারিক বন্ধন নতুন প্রজন্মের জন্য এক অনুপ্রেরণা হয়ে দাঁড়িয়েছে। অমলা মুখোপাধ্যায়, যিনি একসময় ছিলেন বাঙালি মেয়ে, এখন তিনি শুধু নাগার্জুনের স্ত্রী নন; তিনি এক অনন্য উদাহরণ, যিনি ভালোবাসা, দয়া এবং সহানুভূতির মাধ্যমে জীবনের নানা বাধাকে অতিক্রম করেছেন এবং নিজের পরিচয় তৈরি করেছেন।