৬০ বছর ধরে গায়ে জল ঠেকাননি, বিশ্বের সবচেয়ে নোংরা মানুষটি আর রইলেন না

Antara Nag

Updated on:

অন্তরা নাগ : তিনিই পৃথিবীর সব থেকে নোংরাতম মানুষ। হবে নাই বা কেন? প্রায় ৬০ বছরেরও বেশি সময় ধরে স্নান করা তো দূরে থাক, গায়ে এক ফোটা জল পর্যন্ত ঢালেননি। এবার, পৃথিবীর সবচেয়ে নোংরা মানুষের তকমা ধারী ইরানের সেই বাসিন্দা প্রয়াত হলেন। কিছুদিন আগের তাঁর প্রতিবেশীরা তাকে জোর করে স্নান করান। আর গায়ে জল ঢালার কিছু দিনের মধ্যেই অসুস্থ হয়ে মৃত্যু হল ৯৪ বছর বয়সী আমু হাজিরের। ইরানের একটি সংবাদমাধ্যম দ্বারা জানা গেছে, গত ৬০ বছর তিনি একাই থাকতেন। ইরানের দক্ষিনাঞ্চলের রাজ্য ফার্সের দেজগা গ্রামে থাকতেন তিনি। গত রবিবার নিজের বাড়িতেই মৃত্যু হয় আমুরের।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বছর ত্রিশ বয়সে একবার তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন আমু হাজি। সেবার জ্বর হয়েছিল তাঁর। বেশ কয়েকদিন ভুগছিলেন তিনি। সেই থেকে যে স্নান বন্ধ করেছেন, তারপর থেকে আর কোনোদিন গায়ে জল ঢালেননি। মূলত অসুস্থ হয়ে পড়বেন সেই ভয় থেকে স্নান করতেন না হাজি। মাসখানেক আগে তার গ্রামের অন্যান্য বাসিন্দারা কার্যত জোর করেই তাঁর মাথায় জল ঢেলে দেন। এর পরেই অসুস্থ হয়ে পড়েন আমু।

ইরানের বিখ্যাত সংবাদ পত্র তেহরান টাইমসের খবর অনুযায়ী দক্ষিণ ইরানের দেজগার বাসিন্দা আমু সারা জীবন কাটিয়ে দিলেন একটি খুপরিতে বসবাস করে। ভবঘুরে জীবন যাপন করতেন। খাবার খেতেন আশেপাশের মানুষের কাছ থেকে চেয়ে। যেদিন কথাও খাবার পেতেন না সেদিন আস্তাকুঁড় কুড়িয়ে খেতেন। তাঁর ধুমপানের নেশায়ও ছিল।

ধুমপানের জন্য ব্যবহার করতেন একটি নোংরা ভর্তি একটি পাইপ। তিনি মনে করতেন পরিচ্ছন্ন হতে গেলে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়বেন। ২০১৩ সালে তাকে নিয়ে তৈরি হয়েছিল একটি তথ্যচিত্র। তথ্যচিত্রটির নাম ছিল ‘দ্য স্ট্রেঞ্জ লাইফ অফ আমু হাজি।’ সেখানে দেখানো হয়েছিল তাঁর জীবন যাপনের একটা বড় অংশ।

এর আগে ভারতেও একই রকম একজন নোংরা মানুষের খোঁজ পাওয়া গিয়েছিল। তাঁর নাম ছিল কৈলাশ সিং। তিনি বারাণসীর বাসিন্দা ছিলেন। ওই ব্যক্তিও আমুর হাজির মতো স্নান করতেন না। ২০০৯ সালে জানা যায় তিনি গত ৩০ বছরের বেশি সময় ধরে স্নান করেন নি। শুধু তাই নয়, প্রতি সন্ধ্যা বেলায় এক পায়ে দাঁড়িয়ে থেকে ভগবান শিবের প্রার্থনা করতেন। কৈলাশ সিং খুব পরিমাণে গাঁজার নেশা করতেন। তিনি সবসময় তার বসার আসে পাশে আগুন জ্বালিয়ে রাখতেন। তিনি আগুনকে স্নানের জল মনে করতেন। তিনি ভাবতেন শরীরে আগুনের তেজ লাগলে সমস্ত রোগ জীবাণু ধ্বংস হয়ে যাবে।