নিজস্ব প্রতিবেদন : স্বপ্নই মানুষকে বড় হতে শেখায়, স্বপ্নই মানুষকে সমস্ত বাঁধার গন্ডিকে অতিক্রম করায়, এনে দেয় সাফল্য। তবে শুধু স্বপ্ন না, কারণ স্বপ্ন তো সবাই দেখে! পাশাপাশি থাকা দরকার অদম্য চেষ্টা, জয় করার ইচ্ছা। যা প্ৰমাণ করে দেখালো উত্তরপ্রদেশের ভারোহিতে এক দরিদ্র পরিবারে জন্মগ্রহণ করা যশস্বী জয়সওয়াল। ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্ন আর অদম্য চেষ্টা, ইচ্ছায় তাঁকে আজ এই জায়গায় পৌঁছে দিয়েছে বলাইবাহুল্য।
যশস্বী জয়সওয়ালের বাবার একটি ছোট্ট দোকান রয়েছে উত্তরপ্রদেশের ভারোহিতে। কিন্তু তাঁর ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্নকে সত্যি করতে মাঠে রাত কাটিয়েছেন। বিক্রি করেছেন ফুচকা। চলতি বছর কলকাতায় আইপিএলের নিলামে সেই যশস্বী জয়সওয়ালই হয়ে গেলেন কোটিপতি। ২ কোটি ৪০ লক্ষ টাকায় তাঁকে কিনলো রাজস্থান রয়্যালস।
ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে তিনি পাড়ি দিয়েছিলেন মুম্বাই। সেখানে ছিল না কোনো থাকার জায়গা। সেসময় তিনি সারাদিন খেলা শেষে রাতে মাটিতে শুয়ে আজাদ ময়দানে মুসলিম ইউনাইটেড ক্লাবের মাঠকর্মীদের সঙ্গে তাঁবুতে রাত কাটাতেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যবসত, সেটাও দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। মাঠকর্মীদের কোনরকম সাহায্য করতে পারতেন না বলে তাঁকে সেখান থেকেও বের করে দেওয়া হয়। অগত্যা বাধ্য হয়ে ফুচকা বিক্রি করা শুরু করেন।
যশস্বী এক সাক্ষাৎকারে জানায়, দিনের বেলা খেলতাম সে। সন্ধেবেলা ফুচকা বিক্রি করতেন। এইভাবেই মোটামুটি চলে যেত। রামলীলা বা কোনও মেলা হলে তো ভালই বিক্রি হত। খালি ভগবানের কাছে চাইতেন, তাঁর সঙ্গে যারা খেলে তারা যেন না আসে। বন্ধুদের ফুচকা বানিয়ে দিতে কষ্ট হত তার। মনে হত ওরা তাঁকে গরিব ভেবে করুণা করবে।
তবে কঠোর পরিশ্রমের ফল কোনো দিন বিফলে যায়না। মাত্র ১৭ বছর ১৯২ দিন বয়সে বিজয় হাজারে ট্রফিতে ঝাড়খণ্ডের বিরুদ্ধে ডবল সেঞ্চুরি করেন এই বাঁ’হাতি ওপেনার যশস্বী। ভারতীয়দের মধ্যে সবথেকে কম বয়সে ডাবল সেঞ্চুরি করার রেকর্ড গড়ে ফেলেন তিনি। আর ইনিংসের পর তাঁকে আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি। ভারতের অনুর্ধ ১৯ দলে খেলার সুযোগ মিলে। তাঁর প্রশংসায় পঞ্চমুখ হন শচীন তেণ্ডুলকর থেকে সুনীল গাভাসকার। তারপরেই আইপিলের নিলামে বাজিমাত যশস্বীর। মাত্র ২০ লক্ষ টাকার বেস প্রাইস থেকে ২ কোটি ৪০ লক্ষ টাকা। মুম্বই ইন্ডিয়ান্স, কিংস ইলেভেন পঞ্জাব, কলকাতা নাইট রাইডার্স তাঁকে কেনার আগ্রহ দেখায়। তবে ২ কোটি ৪০ লক্ষ টাকায় এই উঠতি তারকাকে নিজেদের পকেটে পুড়ে রাজস্থান রয়্যালস।