নিজস্ব প্রতিবেদন : দীর্ঘদিন ধরেই বিজেপির সাথে সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছিল। দলের একাংশের বিরুদ্ধে ক্ষোভও উগড়ে দিতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। তবে বাংলার বিধানসভা নির্বাচনের আগে এইভাবে যে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূলে তিনি যোগ দেবেন, তা বোধ হয় কারোর জানা ছিল না। শনিবার ঠিক এই ভাবেই চমক দিলেন বিজেপির প্রাক্তণ কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী Yashwant Sinha।
তবে তৃণমূল ঘনিষ্ঠতা তার এই প্রথম নয়, এর আগেও বহুবার তাঁকে দেখা গিয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সমর্থন করতে। উনিশের লোকসভা নির্বাচনের আগেও মমতার হয়ে প্রচার করেছিলেন তিনি। এমনকি তাকে যোগ দিতে দেখা গিয়েছিল তৃণমূল নেত্রীর ডাকা ব্রিগেড সমাবেশে। পাশাপাশি তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখার ইচ্ছেপ্রকাশ করেছিলেন। আর এসবের পর তিনি এবার সরাসরি তৃণমূলে যোগ দিলেন। এদিন তৃণমূল ভবনে এসে রাজ্যের শাসকদলের পতাকা হাতে তুলে নিলেন।
Yashwant Sinha এদিন তৃণমূলে যোগ দেওয়ার সময় তৃণমূল ভবনে উপস্থিত ছিলেন ডেরেক ও ব্রায়েন, সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, সুব্রত মুখোপাধ্যায়। বাংলার বিধানসভা নির্বাচনের আগে এইভাবে প্রাক্তণ কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর যোগদান তৃণমূলের জন্য নিঃসন্দেহে উৎসাহ জনক বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।
তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইতিমধ্যেই রাজ্যের ২৯৪ টি আসনের মধ্যে ২৯১ টি আসনের জন্য প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করে দিয়েছেন। বাকি ৩টি ছেড়েছেন শরিক বন্ধুদের জন্য। সে জায়গায় যশবন্ত সিনহার প্রার্থী সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। তবে, তাঁকে তারকা প্রচারক হিসেবে কাজে লাগাতে পারে তৃণমূল। বিশেষ করে হিন্দিভাষী এলাকায় তাঁর প্রচার শাসকদলকে অনেকটাই সাহায্য করবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
যশবন্ত সিনহা একসময় বিজেপির দাপুটে নেতা হিসাবে পরিচিত ছিলেন। শুধু দাপুটে নেতা নন বিজেপির মন্ত্রিসভাতেও তার গুরুত্ব ছিল যথেষ্ট। বাজপেয়ী প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন তিনি অর্থমন্ত্রকের পাশাপাশি সামলেছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রকও। তবে ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নরেন্দ্র মোদির শপথ গ্রহণ করার পর কার্যত রাজনীতি থেকে সন্ন্যাস নিতে হয় তাকে।
[aaroporuntag]
আর এই ঘটনার পর থেকেই মোদি শাহ জুটির উপর তিনি রীতিমতো ক্ষুব্ধ হন। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগেই বিজেপির এই জুটিকে হারানোর জন্য তিনি কোমর বেঁধে নেমে পড়েছিলেন। সে সময় তাকে বলতে দেখা গিয়েছিল, ” ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনের পর আমি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চাই।” তবে যশবন্ত সিনহার সেই স্বপ্ন পূর্ণ হয়নি। আর রাজ্যের ক্ষমতা ধরে রাখার এই লড়াইয়ে এবার তার সরাসরি তৃণমূলে যোগ তৃণমূলকে কতটা সুবিধা দেয় সেটাই এখন দেখার।