Foreign Job: বাবা-মাকে একা ছেড়ে যেতে নারাজ! দেড় কোটি টাকার বিদেশি চাকরি ছেড়ে দিলেন বাগুইআটির যুবক

Prosun Kanti Das

Published on:

Advertisements

Foreign Job: বাবা-মাকে একা ছেড়ে যেতে নারাজ! দেড় কোটি টাকার বিদেশি চাকরি ছেড়ে দিলেন বাগুইআটির যুবক। বাবা-মা সবার উপরে। বাবা-মায়ের সামনে সব কিছুই নিতান্তই তুচ্ছ মনে হয়। এই অনুভূতির চাক্ষুষ প্রমাণ দিলেন বাগুইআটির এক যুবক। বাবা-মায়ের জন্য অনায়াসে ছেড়ে দিলেন বিদেশের কোটি টাকার চাকরির সুযোগ (Foreign Job)। কেন? কেরিয়ার আর পরিবারের মাঝে তিনি বেছে নিয়েছেন তার পরিবারকেই। যুবকটির নাম আয়ুশ শর্মা তিনি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় আইটি বিভাগের ছাত্র। বাবা মাকে একা রেখে যেতে তিনি একেবারেই রাজি হননি। আর সেই কারণেই বিদেশি কোম্পানিতে মোটা মায়নার চাকরি ছাড়তেও দুবার ভাবতে হয়নি তাকে।

Advertisements

কেরিয়ার আর পরিবার এই দুটির মধ্যে যেকোনো একটিকে বেছে নিতে হয় অনেককেই। কেউ বেছে নেন ক্যারিয়ারকে। আবার কেউ কেরিয়ার গঠনের চেয়েও বেশি প্রাধান্য দেন পরিবারের পাশে থাকাকে। বাগুইআটির আয়ুশ শর্মা বেছে নিয়েছেন তার পরিবার, তার বাবা-মাকেই। বাবা-মাকে একা রেখে বিদেশ চলে যেতে পারবেন না তিনি। তাই আমেরিকার নামকরা কোম্পানিতে পাওয়া চাকরি সুযোগও নির্দ্বিধায় ছেড়ে দিয়েছেন তিনি (Foreign Job)। আমেরিকার কোম্পানি আয়ুশ শর্মাকে যে কাজের অফার করেছিল, তার জন্য নির্ধারিত বেতনের পরিমাণ ভারতীয় মুদ্রায় মাসিক দেড় কোটি টাকার কাছাকাছি। এই বিপুল অর্থের লোভও আয়ুষের মন ঘুরাতে পারেনি। অনেকের হয়তো মনে হতে পারে ঘর কুনো বাঙালি। তাই জন্যে জীবনে কিছু করে উঠতে পারবে না। সুযোগ পেয়েও দেশের বাইরে যেতে পারল না।

Advertisements

তবে আয়ুশ শর্মা কিন্তু ঘর কুনো হবার কারণে এই কাজটি করেননি। তিনি করেছেন তার বাবা মায়ের জন্য। তার বাবা-মাকে একা রেখে বিদেশে পড়ে থাকা তার কাছে মোটেই সুখকর মনে হয়নি। বাবা-মার পাশে থাকা তাদের খেয়াল রাখা কখনোই ভুল কাজ হতে পারে না। তিনি তার বিবেকের কাছে এক্কেবারে স্বচ্ছ। লোভের বসে তিনি তার বাবা-মায়ের অসহায়তা দেখতে চাননি। তাই বিদেশি চাকরির সুযোগ ফিরিয়ে (Foreign Job) দিয়েছেন অবলীলায়। আয়ুষ শর্মা একেবারে মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান। মা গৃহবধূ, বাবা বীমা কর্মী। বাগুইআটির বাসিন্দা আয়ুষ শর্মা স্কুল জীবন পার করেছেন ক্যালকাটা পাবলিক স্কুল থেকে। এরপর আইটি বিভাগের ছাত্র হিসেবে ভর্তি হন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে। পড়াশোনায় তিনি যতটা মেধাবী, ততটাই ভালোবাসেন তার বাবা মাকেও। শুরু থেকেই বাবা-মাকে নিয়েই তার সম্পূর্ণ জগৎটা তৈরি হয়েছে। তাই বাবা মাকে ছেড়ে অত দূরে গিয়ে থাকার কথা ভাবতেই পারেনি তিনি।

Advertisements

আরও পড়ুন ? Buddhadeb Bhattacharjee: পছন্দ করতেন ক্রিকেট, খেলতেনও জমিয়ে, তবে এই কারণে খেলা ছাড়তে হয়েছিল বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে

বিদেশি কোম্পানিতে চাকরি করেন এমন অনেকেই আছেন। তাদের মধ্যে অনেকেই আছেন যারা ভারতে থেকেই বিদেশি কোম্পানিতে চাকরি করেন। ওয়ার্ক ফ্রম হোমের সুবিধা নিয়ে বেশিরভাগ সময়টা পরিবারের সাথে থেকে নিজের কাজ এগিয়ে নিয়ে যান অনেকেই। আয়ুশও প্রথম দিকে তেমনটাই ভেবেছিলেন। তাই জন্য শুরুতে রাজিও হয়েছিলেন বিদেশি কোম্পানির প্রস্তাবে। কিন্তু পরবর্তীতে সংস্থার পক্ষ থেকে পরিষ্কার ভাবে জানিয়ে দেওয়া হয় সেখানে থেকেই চাকরি করতে হবে। বাড়িতে থেকে কাজ করার সুযোগ পাওয়া যাবে না। আর তখনই বিদেশি সংস্থার পক্ষ থেকে দেওয়া এই চাকরির অফারটি ফিরিয়ে (Foreign Job) দেন তিনি। এই ঘটনার পিছনে একমাত্র কারণ হিসেবে তিনি বলেছেন তার বাবা-মার কথা। বাবা-মাকে একা ফেলে তিনি কিছুতেই বিদেশ চলে যেতে পারবেন না। এরকম ভালো চাকরির সুযোগ হয়তো তিনি ভবিষ্যতেও পাবেন। কিন্তু বাবা-মাকে ছেড়ে যাওয়া তার পক্ষে সম্ভব নয়। আপাতত ভারতে থেকে করা যায় এমন কিছু কাজই করতে চান তিনি।

না টাকার পিছনে ছুটতে চাননি আয়ুশ শর্মা। বরঞ্চ পরিবারের পাশে থেকে তাদের সাহায্য করতে চেয়েছেন তিনি। বিদেশি কোম্পানিতে মাসিক দেড় কোটি টাকার চাকরি ফিরিয়ে (Foreign Job) দিয়ে আপাতত দেশের মধ্যেই একটি চাকরিতে যুক্ত হয়েছেন তিনি। মান্থলি প্যাকেজ হিসেবে তিনি বেতন পাবেন ২৪ লক্ষ টাকা। যদিও এই কাজের জন্য তাকে বাগুইহাটি ছেড়ে যেতে হবে ব্যাঙ্গালোরে। কিন্তু ব্যাঙ্গালোরটা দেশের মধ্যে। বাবা-মা সমস্যায় পড়লে খুব তাড়াতাড়ি ফিরে আসতে পারবেন তাদের কাছে। কিন্তু আমেরিকা থেকে হুট করে ভারতে চলে আসা তার পক্ষে সম্ভব হবে না। তাই জন্যে আমেরিকার চাকরির চেয়েও ব্যাঙ্গালোরের ওয়ার্নার বাদার্সের চাকরিটাই তার কাছে সব থেকে ভালো বলে মনে হয়েছে। এই কাজের জন্য তার কোনরকম আফশোষ নেই। বরং তিনি অনেক বেশি খুশি। তিনি তার ভবিষ্যৎ জীবন নিয়ে ঠিক কতটা ঠিক সিদ্ধান্ত নিলেন তা তো সময় বলবে।

Advertisements