নিজস্ব প্রতিবেদন : অদম্য ইচ্ছের জোরে সমস্ত বাধা অতিক্রম করে সফলতা পাওয়া যায়। যুগ যুগ ধরে এর বাস্তবায়ন হয়ে আসছে। যেমনটা আমরা দুদিন আগে দেখেছিলাম বিহারের ছোট্ট সীমাকে এক পায়ে লাফিয়ে লাফিয়ে স্কুলে যেতে। ঠিক সেই রকমই পশ্চিমবঙ্গের নদীয়ার ৫২ বছর বয়সী এক দিনমজুর প্রমাণ করলেন ‘ইচ্ছে থাকলে সব হয়’।
নদীয়ার কৃষ্ণগঞ্জ থানার প্রতাপপুর গ্রামের দিনমজুর প্রদীপ হালদারের ছোট থেকেই স্বপ্ন ছিল ডাক্তার হওয়ার। কিন্তু আর্থিক পরিস্থিতির কারণে তা হয়নি। তবে তিনি থেমে যাননি। দিনের পর দিন তিনি তার প্রচেষ্টা চালিয়ে যান। এরপর ২২ বারের চেষ্টায় ডাক্তারি প্রবেশিকা পরীক্ষায় পাশ করলেন তিনি। এই পাস করার পর মেডিকেল কলেজে সুযোগ না পেলেও হোমিওপ্যাথি কলেজে পড়ার সুযোগ পেয়েছেন।
পারিবারিক আর্থিক অস্বচ্ছলতার কারণে প্রদীপ হালদার মাধ্যমিক পর্যন্ত পড়াশোনা করেন। তারপর টুকটাক দিনমজুরের কাজ করে সংসারের হাল ধরেন তিনি। এরপর আবার বয়স বাড়তে বিয়ে হয়। বিয়ের পরে সংসারে আসে সন্তান। তবে স্ত্রী, সন্তানদের নিয়ে সংসার চালানোর পাশাপাশি তিনি তার লক্ষ্য নিয়ে পড়ে থাকেন।
দিনমজুরের কাজ করে আসার পর ক্লান্ত হয়ে পড়লেও তিনি থেমে যেতেন না। বসে পড়তেন বই নিয়ে। নিজের টাকা জমিয়ে বই কিনে নিয়ে আসতেন এবং এই ভাবেই পড়াশোনা করে ২০০০ সালে বিজ্ঞান বিভাগে উচ্চমাধ্যমিক উত্তীর্ণ হন। এরপর নিজে নিজেই শুরু করেন জয়েন এন্ট্রান্স প্রবেশিকা পরীক্ষায় বসার প্রস্তুতি।
প্রদীপ বাবুর এই প্রচেষ্টা দেখে পাড়া প্রতিবেশীদের মধ্যে হাসি মশকরার শেষ ছিল না। এমনকি নিজে নিজে প্রস্তুতি নেওয়ার ফলে বহুবার পরীক্ষার ফলাফল খারাপ হয় এবং তাকে বিদ্রুপের শিকার হতে হয়। তবে এসবের মধ্যেই অবশেষে তিনি হোমিওপ্যাথির প্রবেশিকা ক্লিয়ার করতে সক্ষম হয়েছেন। এতদিন যারা তাকে নিয়ে বিদ্রুপ করতেন তারাই এখন এই খবর শুনে প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়েছেন।