নিজস্ব প্রতিবেদন : গভীর নিম্নচাপের কারণে টানা তিন দিনের বৃষ্টিতে নাজেহাল অবস্থা হয়ে দাঁড়িয়েছে রাজ্যের বিভিন্ন জেলার নিচু এলাকায়। রাজ্যের বিভিন্ন জায়গার পাশাপাশি একই অবস্থা হয়ে দাঁড়িয়েছে বীরভূমের। বীরভূমের লাভপুর ব্লকে এমন অবস্থা হয়েছে মূলত কুঁয়ে নদীর বাঁধ ভেঙে যাওয়ার কারণে। এই নদীর বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় এখন নদীর জল ১০ থেকে ১২টি গ্রামকে প্লাবিত (Flood in Birbhum) করেছে।
কুঁয়ে নদীর বাঁধ ভেঙে যে সকল গ্রাম এখন প্লাবিত সেই সকল গ্রামের মধ্যে একদিকে যেমন রয়েছে দেশের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রয়াত প্রণব মুখোপাধ্যায়ের মিরাটি, ঠিক সেই রকমই আবার রয়েছে বলরামপুর, কান্দরকুলা, খাপুর, জয়চন্দ্রপুর, হরিপুর, ব্রাহ্মণপাড়া ইত্যাদি। গত সোমবার থেকে এই সকল গ্রামের বাসিন্দাদের অবস্থা অত্যন্ত খারাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
গ্রামের বাসিন্দাদের মুখ থেকে জানা গিয়েছে, বাড়ি থেকে তারা জিনিসপত্র চাল, ডাল ইত্যাদি বের করার সুযোগ পর্যন্ত পাননি। গ্রামের ভিতরে হু হু করে জল ঢুকতে তারা প্রাণ বাঁচাতে প্রশাসনিক উদ্যোগে তৈরি করা ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছেন। আর সেই ক্যাম্পে এখন তাদের রাত কাটছে। এখনো পর্যন্ত তারা বাড়ি ঢোকার মত পরিস্থিতি দেখতে পাচ্ছেন না। এই সকল মানুষদের এখন চিঁড়ে, গুড়, মুড়ি ইত্যাদি খেয়েই দিন কাটাতে হচ্ছে।
আরও পড়ুন : Cusec Meaning: লাখ লাখ কিউসেক জল ছাড়ছে বিভিন্ন জলাধার, কিন্তু জানেন কী ১ কিউসেক মানে কত লিটার জল
কুঁয়ে নদীর বাঁধ ভেঙ্গে যাওয়া অবশ্য নতুন ঘটনা নয়। এই নদী খরস্রোতা নদী, তবে বর্ষার সময় নদীটি এমন ভাবে ফুলেফেঁপে ওঠে যে নদীর বাঁধ ভেঙ্গে গ্রামকে প্লাবিত করে। মাঝখানেক আগেই যখন বীরভূম সহ বিভিন্ন জায়গায় অতিবৃষ্টি দেখা গিয়েছিল সেই সময়ও এই নদীর বাঁধ ভেঙ্গে গিয়েছিল। এর আগে ২০২১ সালেও এই নদীর বাঁধ ভেঙেছিল।
বলরামপুর গ্রামের বাসিন্দা মারিয়া বিবি জানিয়েছেন, “কিচ্ছু নেই সব ক্ষতি হয়ে গিয়েছে। হেক্টরের পর হেক্টর জমি এখন জলের তলায়। বাড়িতে কতকগুলো ছাগল ছিল সেগুলিকে বাঁচাতে রাস্তায় যখন ছেড়ে আসতে যাই তখনই জল হু হু করে বাড়তে শুরু করে। ওই যে বাড়ি থেকে বের হওয়া আর বাড়ি ফিরতে পারিনি। এখন কোন সময় খেয়ে আবার কোন সময় না খেয়ে দিন কাটছে। খাবার বলতে জুটছে কেবল মুড়ি, চিঁড়ে গুড়।” যারা ত্রাণ সাহায্য নিয়ে এলাকায় পৌঁছাচ্ছেন তারাও এমন ভয়াবহ পরিস্থিতির কথা স্বীকার করে নিয়েছেন। তারা জানাচ্ছেন, পরিস্থিতি এমন যে সব জায়গায় তাদের ত্রাণ সামগ্রীও পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে না।