Suri: সোশ্যাল মিডিয়াতে এমন অনেক অদ্ভুত খবর সামনে আসে যা অবাক করে দেয় সকলকে। অবশ্য সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতেই দেশের বিভিন্ন জায়গার খবর ঘরে বসেই জানা যায়। আজকের এই প্রতিবেদনে জানতে পারব সিউড়িতে ঘটা এক অদ্ভুত ঘটনার কথা। যেখানে ভালোবেসে স্ত্রীকে উপহার দিতে গিয়ে পুলিশের খপ্পড়ে পড়তে হলো যুবককে। কি ঘটেছিল আসলে জানলে আপনিও অবাক হয়ে যাবেন। বড়দিন মানেই ছুটির দিন এবং উপহার দেওয়ার দিন। কাছের মানুষকে এই বিশেষ দিনে উপহার দিতে অবশ্যই ভালো লাগে। কিন্তু সেই উপহার যদি হয় চুরি করা জিনিস তাহলে কি হবে?
স্ত্রীকে ভালোবেসে উপহার দিতে গিয়ে রীতিমতো পুলিশের কাছে গ্রেপ্তার হলো এই যুবক। তারপরে আবার বাইক নিয়ে পথ দুর্ঘটনা। শেষ পর্যন্ত পুলিশ ও পুরসভার তত্ত্বাবধানে একগুচ্ছ গোলাপ কিনে তাদের সামনে জখম পা ও হৃদয় নিয়ে হাঁটু মুড়ে বউকে একগুচ্ছ লাল গোলাপ উপহার দেওয়া। ঘটনাটি দেখে নিজের উত্তেজনা চেপে রাখতে পারেননি সিউড়ি (Suri) পুরপ্রধান উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, নিজের ত্রিশ বছরের রাজনৈতিক জীবনে এমন বড়দিন তিনি কখনো কাটাননি। এই উপহার সত্যিই সবকিছুর থেকে আলাদা। পুলিশের তরফেও উপহার হিসাবে যুবকের অপরাধ মাফ করে তাকে সতর্ক করে মুক্ত করল পুলিশ।
ঘটনাটি ঘটেছে সিউড়ি (Suri) শহরে, ভালোবাসার চিহ্ন দেওয়া লাল গ্লোসাইনটি চুরি যায়। সিউড়ি শহরকে সাজানোর জন্য গত বছর পুরপ্রধানের উদ্যোগে সিউড়ি শহরের তিন জায়গায় আমার ভালোবাসার সিউড়ি শহরের দিন প্রান্তে কর্নার তৈরি করে যথেষ্ট খরচ করা হয়। কিছুদিনের মধ্যেই হাটজন বাজারেরটা কেউ বা কারা ভেঙে দিয়ে যায়। গত সোমবার সিউড়িতে ঘটে যায় আর এক অদ্ভুত ঘটনা, অন্য একটি কর্নার থেকে শুধু ভালোবাসার চিহ্নটি চুরি যায়। লালকুঠি পাড়ার সার্কিট হাউসের সামনে সেই চুরি নজরে পড়ে মঙ্গলবার সকালে। আলোকিত ওই কর্নারটি ছিল সকলের ছবি তোলার আদর্শ জায়গা। তাছাড়া শহরের এত সুন্দর একটি কর্নারের ভালোবাসার চিহ্নটি চুরি যাওয়াতে শহরবাসী খুবই হতাশ। সিউড়ির পুরপ্রধান বিষয়টি নিয়ে কটাক্ষ করেছিল পুলিশকে। যাতে রীতিমতো আঁতে ঘা লাগে পুলিশের।
আরও পড়ুন:Pala Period Artifacts: খনন করতে খিয়ে উঠে আসলো পাল যুগের নিদর্শন, রয়েছে মন্দিরের অবশিষ্টাংশও
সিউড়ি (Suri) থানার পুলিশ বড়দিনের দুপুরেই মহম্মদবাজারের সেরেন্ডা থেকে বাপন বাদ্যকরকে গ্রেপ্তার করে। ডাকা হয় সিউড়ির পুরপ্রধানকে। থানা চত্বরে কয়েক মুহূর্তের মধ্যেই ঘটে যায় অদ্ভুত ঘটনা। বাপন স্বীকার করে নেয় বউকে উপহার দেওয়ার জন্যই এই চুরির কাজটি সে করে। বাপনের শ্বশুরবাড়ি সিউড়ি রক্ষাকালীতলায়। বাপন জানায় সোমবার রাতে মদ্যপান করে সে বাইকে করে বাড়ি ফিরছিল। সার্কিট হাউস মোড়ের কাছে লাল ভালোবাসার চিহ্নটি দেখে নিজের মনের আবেগকে আর ধরে রাখতে পারেননি তিনি। স্ত্রীকে এই কয়েকবছরে কিছু সে দিতে পারেনি। তাই ভালোবাসা চিহ্নটি যত্ন করে খুলে নিয়ে বাড়ি ফিরছিল সে। নেশা করেছিল তাই ফেরার পথে বাইক দুর্ঘটনা হয়। তার চুরি করা ভালোবাসা চিহ্ন ভেঙে চুরমার হয়ে যায়। সে কথা স্ত্রীকেও সে জানায়।
নিজের ভুলের জন্য দুই হাত তুলে সকলের কাছে ক্ষমা চেয়ে নেয় বাপন। পুলিশ ও পুরপ্রধান দুই পক্ষই এই ঘটনা শুনে একেবারে অবাক। এমন ভালবাসাকে কখনোই অবহেলা করা উচিত নয় তাই পুলিশ এবং পুরপ্রধানের তত্ত্বাবধানে কিনে আনা হয় একগোছা গোলাপ। বাপনের হাতে তুলে দিয়ে বলা হল স্ত্রীকে ভালোবাসা জানাতে। পুরপ্রধান যেভাবে পুলিশকে কটাক্ষ করেছিল তার জন্য ক্ষমা চেয়ে নেওয়া হয়। এমনকি পুলিশকে চোর ধরার জন্য মিষ্টিমুখ করানো হয়। দুর্ঘটনায় জখম পা নিয়ে হাঁটু মুড়ে বসে সবার সামনে বাপন তার স্ত্রীকে বড়দিনে লাল গোলাপ ফুল উপহার দেয়। পুলিশ ছেড়ে দিয়েছিল বাপনকে।