নিজস্ব প্রতিবেদন : বাংলার রাজনীতিতে দীর্ঘ কয়েক মাস ধরে জল্পনা এবং আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ওঠা শুভেন্দু অধিকারীর রাজনৈতিক জীবন ছাড়াও ব্যক্তিগত জীবনেও রয়েছে বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য বিষয়। এমনটাই মনে করেন রাজনৈতিক মহলের বিশেষজ্ঞরা।
আর এই সকল বিশেষত্বের মধ্যে তিনি অকৃতদার বা অবিবাহিত। আর এই ‘অকৃতদার’ কথাটি তাকে বারংবার বলতেও দেখা গিয়েছে সভায়। এমনকি যখন তিনি সমস্ত জল্পনার অবসান ঘটিয়ে শনিবার মেদিনীপুরের কলেজ মাঠে গেরুয়া পতাকা হাতে তুলে নেন সেই সময় বক্তব্য দিতে গিয়েও এই ‘অকৃতদার’ কথাটির উল্লেখ করেন।
বারংবার নিজের নামের আগে এই অকৃতদার কথাটি সংযোগ করায় রাজ্যের বেশিরভাগ মানুষের মধ্যে প্রশ্ন উঠছে কেন বিয়ে করেননি শুভেন্দু অধিকারী! এই প্রশ্ন হয়তো আপনাকেও তাড়া করে বেড়াচ্ছে। তবে এই ‘অকৃতদার’ বা ‘অবিবাহিত’ থাকার কারণ তিনি নিজেই খোলসা করেছেন কয়েকটি সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে।
দিন কয়েক আগেই হলদিয়ার একটি অরাজনৈতিক সভায় শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “অনেকেই বলেন তুমি ‘অকৃতদার’ (অবিবাহিত) কেন? তোমার ভাইয়েরা বিয়ে করেছেন অথচ তুমি কেন বিয়ে করোনি?” আর এই প্রশ্ন ছোট হলেও এর ব্যাখ্যা চরম। শুভেন্দু অধিকারী এর ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে বলেন, তাঁর আদর্শ সতীশ সামন্ত, সুশীল ধারাদের মতো সে যুগের ব্যক্তিত্বরা। তিনি এই যুগের রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের দেখে ‘অকৃতদার’ থাকেননি।
শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “শুভেন্দুর পরিবার ওই ছোট্ট পরিবার নয়। পাঁচজন, সাতজন, আটজনের পরিবার নয়। বাংলা বাঙালির পরিবার হলো শুভেন্দু অধিকারীর পরিবার। সমাজের জন্য দিতে হলে পুরোটা দাও। এটাই বলতেন আমার আদর্শ সতীশ সামন্ত, সুশীল ধারারা। তাই আমি বিয়ে করিনি।”
আসলে শুভেন্দু অধিকারীর এই অবিবাহিত থাকার প্রসঙ্গ ওঠে ঠিক তার আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সহজ-সরল জীবনের বর্ণনা প্রসঙ্গে। মুখ্যমন্ত্রীকে জীবনের বর্ণনা ঠিক তার দিন কয়েক আগেই দিয়েছিলেন সুব্রত মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেছিলেন, “পায়ে একটা হাওয়াই চপ্পল। আমেরিকা গেলেও ওই হাওয়াই চপ্পল। বিয়ে করলো না, সংসার করলো না, শুধু মানুষের জন্য। একটা জীবন দিয়ে দিলো। তারপরও তাকে আক্রমণ ও ব্যতিব্যস্ত করার জন্য দিল্লি সরকার।”
এছাড়াও শুভেন্দু অধিকারী নন্দীগ্রামের বিজয়া সম্মেলনী সভা থেকেও বলেছিলেন তাঁর অকৃতদার থাকার কারণ, “কোন লোককে দেখিয়ে নয়, বই পড়ে। অধ্যাপক প্রদ্যোৎ মাইতির বই পড়ে। সতীশ বাবু, সুশীল বাবু, অজয় বাবু তাঁরাই বলে গিয়েছিলেন তাঁরা মানুষের জন্য অকৃতদার থেকে ছিলেন। কোন পিছুটান যেন না থাকে। কখন বেরোবেন, কখন ঢুকবেন, কেউ যেন খোঁজ না করে। পরিবার ছোটর মধ্যে না রেখে বড় পরিবার করো।” তাই তিনি ঘোষিত ‘অকৃতদার’।