নিজস্ব প্রতিবেদন : রেল পরিষেবার ওপর নির্ভর করে প্রতিদিন দেশের প্রায় এক কোটি মানুষ এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যাতায়াত করে থাকেন। এই সকল যাত্রীদের সুরক্ষিতভাবে গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়াই হলো রেলের (Indian Railways) মূল লক্ষ্য। তবে এসবের পরেও বিভিন্ন সময় দেখা যায় একাধিক ট্রেনকে দুর্ঘটনার কবলে পড়তে এবং শত শত মানুষদের প্রাণ হারাতে। রেলের তরফ থেকে দুর্ঘটনার সংখ্যা কমানোর জন্য বারংবার নানান পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়ে আসছে।
লক্ষ্য করলে দেখা যাবে, এখনো পর্যন্ত ভারতে যে সকল বড় বড় ট্রেন দুর্ঘটনা (Train Accident) ঘটেছে, সেই সকল অধিকাংশ ঘটনা ঘটেছে ব্যস্ততম রুটগুলিতে। দেশের বিভিন্ন ব্যস্ততম রুটের মধ্যে অন্যতম একটি রুট হল হাওড়া ডিভিশনের (Howrah Division) একাধিক রুট। হাওড়া ডিভিশনের বিভিন্ন রুটে প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ যাত্রী যাতায়াত করে থাকেন। এবার পূর্ব রেলের তরফ থেকে এই হাওড়া রুটের যাত্রীদের সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে এমন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে যাতে করে আর দুর্ঘটনার নামগন্ধ থাকবে না।
ট্রেন দুর্ঘটনা ঠেকানোর জন্য রেলের তরফ থেকে যে সকল প্রযুক্তি লঞ্চ করা হয়েছে তার মধ্যে অন্যতম হলো কবচ এবং গজরাজ। কবচ সিস্টেম এমনভাবে কাজ করে যাতে করে মুখোমুখি অথবা পিছন বা যেকোন ভাবেই হোক না কেন দুটি ট্রেন কখনোই একে অপরের কাছে আসবেনা। এই সিস্টেম স্বয়ংক্রিয়ভাবে কাজ করে এবং দুর্ঘটনার মতো পরিস্থিতি উপলব্ধি করলেই স্বয়ংক্রিয়ভাবে ব্রেক কোষের ট্রেনকে থামিয়ে দেয়। অন্যদিকে গজরাজ নামে যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ভিত্তিক সেন্সর সিস্টেম আনা হয়েছে তাতে করে রেল দুর্ঘটনায় হাতি মৃত্যুর ঘটনা আটকাবে।
আরও পড়ুন ? আরও সহজ হচ্ছে উত্তরবঙ্গ সফর! শিয়ালদহ থেকে নতুন ট্রেন দিল রেল, জানুন সময়সূচি
রেলের তরফ থেকে জানানো হয়েছে দেশের দুটি ব্যস্ততম রুট দিল্লি-মুম্বাই এবং হাওড়া-দিল্লি কবচ সিস্টেমের সুরক্ষা পাবে। ইতিমধ্যেই ১৬৫৯ কিলোমিটার রেলপথ কবচ সিস্টেমের আওতায় আনা হয়েছে এবং আগামী বছর মার্চ মাসের মধ্যে আরও অতিরিক্ত ৫০০ কিলোমিটার এই সিস্টেমের মধ্যে আনা হবে। আগামী তিন বছরের মধ্যে গোটা দেশে পাঁচ হাজার কিলোমিটার রেলপথ কবচ সিস্টেমের আওতায় যুক্ত করে দেওয়া হবে। অন্যদিকে দিল্লি-মুম্বাই এবং হাওড়া-দিল্লি রুট ২০২৫ সালের মধ্যে পুরোপুরিভাবে কবচ সিস্টেমের আওতায় চলে আসবে।
এছাড়াও রেলের তরফ থেকে জানানো হয়েছে এই সিস্টেমকে আরও উন্নত করার জন্য উচ্চপর্যায়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। রেলের তরফ থেকে ট্রেন দুর্ঘটনা ঠেকানোর জন্য এই যে বড় পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে তার ফলে আগামী দিনে শত শত হাজার হাজার রেল যাত্রীদের জীবন আরো কয়েকগুণ সুরক্ষিত হবে তা নিয়ে কোন সন্দেহ নেই। এখন ভারতীয় রেল যাত্রীরা শুধু রেলের এই সকল পদক্ষেপের পূর্ণতা পাওয়ার অপেক্ষায়।