নিজস্ব প্রতিবেদন : রাজ্যের তৃণমূল সরকারের আসার পর রাজ্যের সাধারণ নাগরিকদের জন্য বিভিন্ন প্রকল্প চালু করেছে। রাজ্য সরকারের তরফ থেকে চালু করা সেইসব প্রকল্প ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে তা নিয়ে কোন সন্দেহ নেই। সাধারণ নাগরিকদের পাশাপাশি সরকারের তরফ থেকে সরকারি কর্মচারীদের জন্য বিভিন্ন প্রকল্প চালু করা হয়েছে। এসবের মধ্যে রয়েছে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের জন্য বদলির (Teachers Transfer WB) ব্যবস্থা।
আগে যেখানে নিজের পছন্দের স্কুলে বদলি নেওয়ার জন্য শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বছরের পর বছর ধরে আবেদন করতে হতো, শিক্ষা দপ্তরের দরজায় গিয়ে গিয়ে চটির তলা খোওয়াতে হতো, সেই জায়গায় যাতে শিক্ষক-শিক্ষিকারা টুক করে অনলাইনে আবেদন করে নিজের পছন্দের স্কুলে বদলি পান তার জন্য আনা হয় উৎসশ্রী পোর্টাল বা প্রকল্প (Utsashree Portal)। ইতিমধ্যেই এই পোর্টালে আবেদন করে রাজ্যের হাজার হাজার শিক্ষক নিজেদের পছন্দের স্কুলে বদলি নিয়ে নিয়েছেন।
কিন্তু এবার নিজের পছন্দের স্কুলে বদলি নেওয়ার বিষয়টি শিক্ষকদের কাছে কঠিন হয়ে দাঁড়াল। কেননা এই কাজের ক্ষেত্রে যে পোর্টাল অর্থাৎ উৎসশ্রী পোর্টাল যেভাবে সাহায্য করে আসতো তা এখন বন্ধ রয়েছে। নতুন বছরে এই পোর্টাল খোলার কথা থাকলেও তা আর হচ্ছে না। সরকারের তরফ থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে আরও ছয় মাস এই পোর্টাল বন্ধ রাখা হবে এমনটাই। এখন প্রশ্ন হল কেন আরও ছয় মাস এই পোর্টাল বন্ধ রাখতে চলেছে রাজ্য সরকার।
আরও পড়ুন ? মমতার ৪% DA বৃদ্ধি! এবার কত বেশি বেতন পাবেন স্কুল শিক্ষকরা! দেখুন পুরো হিসেব-নিকেশ
শিক্ষা দপ্তরের বিজ্ঞপ্তি থেকে জানা যাচ্ছে, ২০২৪ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত বন্ধ থাকবে উৎসশ্রী পোর্টাল। রাজ্য শিক্ষা দপ্তরের তরফ থেকে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে মূলত স্কুল সার্ভিস কমিশনের অনুরোধের ভিত্তিতে। ওই পোর্টালের মাধ্যমে সহজেই আবেদন করে শিক্ষক-শিক্ষিকারা নিজেদের বদলি নিয়ে নেওয়াই নানান ধরনের জটিলতা তৈরি হচ্ছিল বলে জানা যাচ্ছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৫ সালের নীতি মেনে আপাতত তা বন্ধ রাখা হয়েছে।
উৎসশ্রী পোর্টাল কেবলমাত্র শিক্ষক-শিক্ষিকাদের পছন্দের জায়গায় বদলির ক্ষেত্রে সাহায্য করেছে তা নয়, এর পাশাপাশি এই পোর্টালের অপব্যবহার হয়েছে বলে অভিযোগ। এমনকি সেই অভিযোগ আদালত পর্যন্ত পৌঁছেছে। অন্যদিকে এই পোর্টালের মাধ্যমে শিক্ষক-শিক্ষিকারা নিজেদের পছন্দের জায়গায় চলে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে বহু স্কুল রয়েছে যেখানে এখন ভালো শিক্ষক-শিক্ষিকাদের অভাব হয়ে দাঁড়িয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই এই পোর্টাল একদিকে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের কাছে আশীর্বাদ হয়ে দাঁড়ালেও পড়ুয়াদের কাছে কিন্তু তা অভিশাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে মনে করেন অনেকেই।