নিজস্ব প্রতিবেদন : এ যেন না চাইতেই পাওয়া। কেননা তিনি জীবনে অনেক কিছু চেয়েছিলেন কিন্তু পাননি। অবশেষে না চাইতেই পাওয়ার মতোই অতর্কিতে বৃহস্পতিবার বিকাল বেলায় একটি ফোন আসে আর সেই ফোনে জানানো হয় ‘আপনি পদ্মশ্রী পুরস্কার পাচ্ছেন’। ফোনটি ধরেছিলেন ‘বড়লোকের বিটি লো’ গানের স্রষ্টা রতন কাহারের (Ratan Kahar) ছেলে। তবে ফোনে এটুকু জানার পর আর কিছু জিজ্ঞেস করেন নি তিনি। কেননা তিনি তো তখন ‘থ’।
কেন্দ্র সরকারের তরফ থেকে এই বছর মোট ৩৪ জনকে বেছে নেওয়া হয়েছে পদ্মশ্রী সম্মানে সম্মানিত করার জন্য। এই ৩৪ জনের মধ্যে জায়গা পেয়েছেন বীরভূমের ভাদু লোক সংগীত গায়ক রতন কাহার (Padma Award Ratan Kahar)। রতন কাহারকে পদ্মশ্রী সম্মানের জন্য বেছে নেওয়ার ছড়িয়ে পড়তেই বীরভূমের বাসিন্দাদের মধ্যে আনন্দের সীমা নেই। অনেকেই বলছেন অবশেষে তিনি যোগ্য সম্মানটুকু পেলেন।
৮৮ বছর বয়সী রতন কাহারকে পদ্মশ্রী সম্মান দেওয়ার জন্য নির্বাচিত করার পর রতন কাহার জানিয়েছেন, “আমি খুব আনন্দিত, আমি খুব গর্বিত।” এর পাশাপাশি এমন সম্মান পাওয়ার আগে তিনি যে সাধারণ কিছু মানুষ ছাড়া সেই ভাবে কারো কাছে সম্মান পাননি সেই বিষয়টিও ক্ষোভের সঙ্গে জানিয়েছেন। রতন কাহারের জীবনে পদ্মশ্রী সম্মান নতুন এক অধ্যায় তৈরি করল বলেই মনে করছেন সাধারণ মানুষ থেকে বিশিষ্টজনেরা।
আরও পড়ুন ? রতন কাহারকে সঙ্গে নিয়ে জ্যাকলিন, দেবলীনার সাথে নতুন আঙ্গিকে ‘গেন্দা ফুল’
রতন কাহার একজন ভাদু, টুসু, আলকাব, ঝুমুরের মতো গান নিয়ে সংগীত রচনা এবং পরিবেশন করে থাকেন। তবে তার জীবনে সবচেয়ে বড় আলোচনার গানটি হল ‘বড়লোকের বিটি লো’। এই গান নিয়ে চরম বিতর্ক রয়েছে। এমনকি এই গান নিয়ে বছর কয়েক আগে বিতর্কে জড়িয়ে ছিলেন র্যাপ সিঙ্গার বাদশা। তিনি রতন কাহারের অনুমতি ছাড়াই এই গান ব্যবহার করেছিলেন। যদিও পরবর্তীতে বিষয়টি তার কানে গেলে তিনি ক্ষমা চেয়ে নেন এবং রতন কাহারকে আর্থিকভাবে সাহায্য করেছিলেন।
রতন কাহার ছাড়াও পশ্চিমবঙ্গের আরও তিনজন পদ্মশ্রী সম্মানে সম্মানিত হয়েছেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন পুরুলিয়ার গাছ দাদু শ্রী দুখু মাঝি, ছৌ নাচকে বাংলার ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়া শিল্পী শ্রী নেপাল চন্দ্র সূত্রধর এবং দুর্গা মূর্তির নির্মাতা শ্রী সনাতন রুদ্র। বাংলা থেকে এবার মোট চারজন পদ্মশ্রী সম্মানে সম্মানিত হলেন।