The trial run of the fastest train Maglev has been completed in China: আমাদের দেশের গণপরিবহন ব্যবস্থার সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম যেমন ট্রেন, ঠিক তেমনি বিশ্বের প্রতিটি দেশেই ট্রেনকে গণপরিবহনের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হিসেবে ধরা হয়। চিন ও তার অন্যথা নয়। তবে অনেক দূরবর্তী স্থান ভ্রমন করতে গেলে সাধারনত ভরসা করতে হয় বিমানের উপর। কারণ সে ক্ষেত্রে ট্রেনে করে যেতে গেলে অনেক বেশি সময় ব্যয় হয়ে যায়। তাই ব্যস্ততার জীবনে দীর্ঘ ভ্রমণে কিছুটা বেশি সময় বাঁচাতে অনেক মানুষই বিমানকে বেছে নেন। বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তেই দ্রুতগামী অনেক আধুনিক প্রযুক্তি সহ আরামদায়ক ট্রেনের ব্যবস্থা করা হলেও অনেকেই সেই ট্রেনের উপর ভরসা রাখতে না পেরে দূরবর্তী স্থান মূলত বিমানে যাতায়াত করেন।
তবে এবার চিন এই সমস্যা দূরীকরণে বিশেষ একটি ব্যবস্থা করতে চলেছে। ট্রেনে চড়েই মানুষ যাতে সহজে অতি দ্রুত এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যাত্রা করে স্বল্প সময়ে দূরবর্তী গন্তব্যে পৌঁছাতে পারেন তার জন্য পরীক্ষামূলক ভাবে একটি ট্রেন চালালো চিন। আর এই পরীক্ষামূলক দ্রুত গতি সম্পন্ন ট্রেন চালানোর বিষয়ে জাপান সহ আরো কয়েকটি উন্নত দেশকেও হারিয়ে দিয়েছে চিন। কারণ পরীক্ষামূলক স্তরে ৬০০ কিমি প্রতি ঘন্টারও বেশি গতিবেগে চিন চালিয়েছে দ্রুতগতির ম্যাগলেভ ট্রেন (China Maglev Train)। আর সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো প্রাথমিক পরীক্ষায় সসম্মানে উত্তীর্ণ হয়েছে চিনের এই ট্রেন।
বিশ্বের রেলপথের ইতিহাস পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায় ১৯৪০ এর দশক থেকে ইউরোপ থেকে এশিয়া পর্যন্ত উচ্চ গতির রেলপথে বিলিয়ন ডলার খরচ করা হয়েছে। গত দশক থেকে বিভিন্ন উন্নত প্রযুক্তি এবং দ্রুত গতি সম্পন্ন ট্রেন চালানোর কারণে চিন বিশ্বের ‘রেলওয়ে লিডার’ হিসাবে বিশ্বে নিজের জায়গা তৈরি করে নিয়েছে। চিন নিজেদের রেলপথ নির্মাণের ক্ষেত্রে সারা দেশে ৩৮০০০ কিলোমিটার রেল নেটওয়ার্ক স্থাপন করেছে। এই দীর্ঘ রেল নেটওয়ার্ক সেই দেশের প্রায় প্রতিটি কোণে ছড়িয়ে রয়েছে বলা চলে। চিন সারা দেশে নিজেদের এই রেল নেটওয়ার্কের শুধুমাত্র বিস্তার করে রেখেছে তা নয়। এই আরেক নেটওয়ার্ক গুলির মাধ্যমে চালিত হওয়া সমস্ত রেল গুলির উন্নতির জন্যও এই দেশ সচেষ্ট।
সম্প্রতি চিনের নতুন করে আপডেট করয়েছে ম্যাগলেভ ট্রেনটির (China Maglev Train)। ইতিমধ্যেই এই ট্রেনের ট্রায়াল রান সম্পন্ন হয়েছে। এই বিষয়ে তথ্য দিয়েছে চিনের অ্যারোস্পেস সায়েন্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি কর্পোরেশন বা সিএএসআইসি। তারা দাবি করেছে এই ম্যাগলেভ ট্রেনটি ৬২৩ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টায় অর্থাৎ প্রতি ঘন্টায় ৩৮৭ মাইল বেগে ২ কিলোমিটার দূরত্ব অতিক্রম করেছে। আগের গতিবেগের তুলনায় বর্তমান আপডেট করা ট্রেনের গতিবেগ প্রায় ২৩ কিলোমিটার বেশি। এই প্রসঙ্গে সাউথ চিনা মর্নিং পোস্ট দাবী করেছে চিন খুব শীঘ্রই প্লেনের মতো দ্রুতগতিতে ট্রেন চালাতে সক্ষম হবে। ফলে আশা করা যাচ্ছে এই ট্রেনের মাধ্যমে বিমানের মতোই অতি দ্রুত এক স্থান থেকে অন্য স্থানে সহজেই পৌঁছে যাওয়া সম্ভব হবে।
সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল অন্যান্য ট্রেনের মত এই ট্রেনটিকে ইস্পাতের চাকার মাধ্যমে পরিচালিত করা হবে না। এতে ম্যাগনেটিক লেভিটেশন ব্যবহার করা হয়েছে। উচ্চ তাপমাত্রার সুপারকন্ডাক্টিং শক্তিতে চলবে এই ট্রেনটি। ফলে চৌম্বকীয় ট্র্যাকের উপর ভাসমান অবস্থায় দেখা যাবে এই ট্রেনটিকে (China Maglev Train)। CASIC এই ট্রেনের প্রসঙ্গে দাবি করেছে ৬২৩ কিলোমিটারের জায়গায় ১০০০ কিমি/ঘন্টা ছুটবে চৌম্বকীয় শক্তিসম্পন্ন ম্যাগলেভ। কারণ টিউবে ভ্যাকুয়াম ছাড়াই যদি ম্যাগলেভ ট্রেনটি এত গতি তুলতে পারে তবে ভ্যাকুয়াম লাগিয়ে দেওয়া হলে এই ট্রেনের জন্য ১০০০ কিলোমিটার স্পর্শ করবে।