নিজস্ব প্রতিবেদন : ইসরো (ISRO) অর্থাৎ ভারতীয় মহাকাশ গবেষণাগার, যেখানে চাকরি পেতে মুখিয়ে থাকেন দেশের কোনায় কোনায় থাকা যুবক-যুবতীরা। তবে এমন সংস্থাতে চাকরির সুযোগ পেয়েও তা প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। এমন প্রত্যাখ্যান করেছিলেন বর্ধমানের রাজা মাজি। তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেছিলেন, কেননা তার লক্ষ্য ছিল একেবারেই আলাদা। আর সেই লক্ষ্য পূরণ করেই এবার বাংলার মুখ দেশের সামনে উজ্জ্বল করলেন তিনি।
বর্ধমানের রাজা মাজি দেশের সামনে বাংলার মুখ উজ্জ্বল করেছেন মূলত গ্রাজুয়েট আপটিটিউট টেস্ট ইন ইঞ্জিনিয়ারিং (GATE) অর্থাৎ সর্বভারতীয় স্তরে ইঞ্জিনিয়ারিং প্রবেশিকা পরীক্ষায় প্রথম স্থান (GATE Topper Succes Story) দখল করেন। চলতি বছর সর্বভারতীয় স্তরে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের যে প্রবেশিকা পরীক্ষা হয়েছিল তাতেই তিনি প্রথম স্থান অধিকার করেছেন। তার এমন স্থান অধিকারে একদিকে যেমন বর্ধমানের বাসিন্দারা গর্বিত ঠিক সেই রকমই বাংলার প্রতিটি মানুষও গর্বিত।
বর্ধমানের রাজা মাজি গেট পরীক্ষায় সর্বভারতীয় স্তরে প্রথম স্থান অধিকার করে যেভাবে রাজ্যের মানুষদের চমকে দিয়েছেন, ঠিক সেই রকমই তার পড়াশুনা থেকে শুরু করে কর্মজীবনও চমকপ্রদ। রাজার বাড়ি বর্ধমানের খালুইবিলুই মাঠ এলাকায়। ২০১০ সালে বর্ধমান মিউনিসিপাল হাইস্কুল থেকে মাধ্যমিক পাশ করার পর যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে চলে যান ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়াশোনার জন্য। সেখান থেকে তিনি ২০১৬ সালে স্নাতক হন।
এরপর তিনি ইন্ডিয়ান ওয়েল কর্পোরেশনে কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীতে নিযুক্ত হন। তবে কেন্দ্র সরকারের এমন চাকরি পেয়েও সেই চাকরিতে তার মন বসেনি। কেননা তার প্রথম থেকেই ইচ্ছে ছিল শিক্ষকতার পেশায় নিযুক্ত হওয়া। এরই পরিপ্রেক্ষিতে পাঁচ বছর সেখানে চাকরি করার পর সেই চাকরি ছেড়ে দেন। তারপর বিষ্ণুপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে শিক্ষকতার পেশায় নিযুক্ত হন।
তবে এই সকল চাকরি পেয়েও তার উচ্চশিক্ষার অদম্য ইচ্ছে শেষ হয়ে যায়নি। চাকরিরত অবস্থাতেই চলতে থাকে গেট পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি এবং শেষমেষ সেই পরীক্ষায় বসে দেশের মধ্যে প্রথম স্থান অধিকার করতে তিনি সক্ষম হলেন। আবার এসবের মধ্যেই ইসরোতে চাকরি করার জন্য তার কাছে সুযোগ এসেছিল কিন্তু তিনি সেই সুযোগ কাজে লাগাননি। তিনি জানিয়েছেন, উচ্চশিক্ষার জন্য ফেব্রুয়ারি মাসে তিনি গেট পরীক্ষায় বসেছিলেন এবং মার্চ মাসে ফলাফল বের হতেই দেখা যায় এমন সাফল্য। তিনি উচ্চশিক্ষা শেষ করেও শিক্ষকতার পেশাতেই থাকবেন।