Money of Lakshmir Bhandar is increasing the crowd in the beauty parlor: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে কাজ শুরু করার পর থেকে বিভিন্ন রকম প্রকল্প নিয়ে এসেছেন সাধারণ মানুষের সুবিধার্থে। স্কুলছুট শিক্ষার্থীদের স্কুলমুখী করার জন্য “সবুজ সাথী” প্রকল্প, অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়েদের বিয়ের প্রবণতা আটকানোর জন্য তাদের আরও বেশি পড়াশোনা করতে সাহায্য করার জন্য নিয়ে এসেছেন “কন্যাশ্রী” প্রকল্প, এছাড়াও বেকার যুবক যুবতীদের জন্য রয়েছে “যুবশ্রী” ভাতার ব্যবস্থা। যে সমস্ত মেয়ের বিয়ের ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়ায় আর্থিক দুরবস্থা, সেই সব মেয়েদের জন্য রয়েছে “রূপশ্রী” ভাতার ব্যবস্থা।
এমনই আরো একটি প্রকল্প তিনি নিয়ে এসেছিলেন সাধারণ ঘরের মহিলাদের জন্য। খুব সম্প্রতি রাজ্য সরকারের তরফ থেকে নতুন একটি প্রকল্প চালু করা হয়, যার নাম রাখা হয় “লক্ষীর ভান্ডার” (Lakshmir Bhandar)। উদ্দেশ্য ছিল পিছিয়ে পড়া মহিলাদের স্বাবলম্বী করে তোলা। কিন্তু রাজ্য সরকারের এই উদ্দেশ্য বাস্তবে কতটা সফল হয়েছে তা কিন্তু আলোচনার বিষয়। পশ্চিমবঙ্গের একাধিক মানুষ এই প্রকল্পে নিজেদের নাম নথিভুক্ত করেছেন। এতদিন পর্যন্ত জেনারেল কাস্ট এর মহিলারা প্রতিমাসে পেতেন 500 টাকা করে এবং এসসি / এসটি মহিলারা পেতেন ১০০০ টাকা করে। সম্প্রতি একটি নতুন ঘোষণা করে মুখ্যমন্ত্রী জানান, এই এপ্রিল মাস থেকে লক্ষ্মীর ভান্ডারের প্রদত্ত অর্থের পরিমাণ বাড়িয়ে জেনারেলদের জন্য করা হয়েছে ১০০০ টাকা এবং এসসি / এসটি মহিলারা প্রতিমাসে পাবেন ১২০০ টাকা করে।
সাজগোজের প্রতি মহিলাদের আগ্রহ বরাবরই বেশি। কিন্তু আর্থিক সমস্যার কারণে সেই শখ মেটাতে পারেনা বহু মেয়ে। বর্তমানে এই আগ্রহ আরো অনেকটাই বেড়ে গেছে। যে সমস্ত প্রত্যন্ত এলাকার মহিলারা একসময় নিয়মিত রুপচর্চা করা তো দূরের কথা, বিয়ের সময় বা বিশেষ কোন অনুষ্ঠানের সময়ও নিজেরা ঘরোয়া ভাবে, অথবা পরিচিত কারো সাহায্য নিয়ে নিজেদের সাজ সম্পন্ন করতো। তারাই এখন মেকআপ আর্টিস্ট এর সাহায্য নিচ্ছে নিজেদেরকে সাজিয়ে তোলার জন্য। পিছিয়ে নিয়ে আদিবাসী সম্প্রদায়ের মহিলারাও। কি করে সম্ভব হচ্ছে!
আরও পড়ুন ? Lakshmir Bhandar: লক্ষ্মীর ভান্ডারের এক টাকাও ঢুকবে না! যদি থাকে এই ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট
একটি সমীক্ষায় জানা গেছে এই অর্থের যোগান দিচ্ছে “লক্ষ্মীর ভান্ডার”। প্রকল্পের আওতায় থাকা মহিলাদের ব্যাংক একাউন্টে যে টাকা আসছে সেই টাকা খরচ করেই তারা তাদের শখ পূরণ করছেন। গ্রামাঞ্চলে মহিলাদের এই আগ্রহের কারণে গড়ে উঠেছে বহু পার্লার। বেশ কিছু মহিলা এই পরিস্থিতিকে নিজেদের আর্থিক উপার্জনের সহযোগী বলে মনে করেছেন। মেকআপ করা শিখে তারাই নিজেদের এই পার্লার গুলি খুলেছেন। একটি সমীক্ষা বলছে, ২০২১ সালে লক্ষীর ভান্ডার (Lakshmir Bhandar) চালু হবার পর মাত্র তিন বছরে গ্রামাঞ্চলে পার্লার তৈরি হয়েছে ৬০০০ এর বেশি। অনেকেই আছেন যারা তথাকথিত পার্লার তৈরি না করে বাড়ি বাড়ি গিয়ে সার্ভিস দিয়ে আসেন। সে ক্ষেত্রে আদতে গ্রাম বাংলার বুকে বিউটিশিয়ানের সংখ্যা ঠিক কত তা জানা একটু কষ্টকর ব্যাপার।
এক সাক্ষাৎকারে হাওড়ার এক গ্রামীণ মহিলা জানান, তার পার্লারে যারা পরিষেবা নিতে আসে তাদের অধিকাংশই নিম্নবিত্ত পরিবারের। শখ পূরণের জন্য খরচ করার মতো অতিরিক্ত উপার্জনের ব্যবস্থা নেই তাদের পরিবারে। লক্ষ্মীর ভান্ডারের (Lakshmir Bhandar) টাকাই তাদের ভরসা। তিনি বলেন, লক্ষীর ভান্ডার চালু হবার পর থেকে নিজেদের শখ মেটানোর জন্য অন্যের কাছে আর টাকা চাইতে হয় না মহিলাদের। তাই বর্তমানে ত্বক ও সাজগোজ নিয়ে গ্রামীণ মহিলাদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে সাজগোজের পিছনে খুব বেশি টাকা খরচ করা সম্ভব নয়, তাই বাধ্য হয়েই নিজের পার্লারের বিভিন্ন পরিষেবার খরচ বেশ কিছু টাকা কমিয়ে দিয়েছেন এই মহিলা।