নিজস্ব প্রতিবেদন : এখনো পর্যন্ত অনেক নেতা-নেত্রীদের একসঙ্গে দুটি কেন্দ্রে ভোটে দাঁড়াতে দেখা যায়। উদাহরণ হিসাবে বলা যেতে পারে রাহুল গান্ধীর নাম। তিনি এবার ওয়েনাড়ে এবং রায়বরেলি আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তবে শুধু রাহুল গান্ধী নন, দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ীও (Atal Bihari Vajpayee) একসঙ্গে একাধিক আসনে ভোটে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তিনি একসঙ্গে তিনটি লোকসভা কেন্দ্র থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন এক বছর।
জনপ্রতিনিধিত্ব যে আইন রয়েছে সেই আইনের ১৯৫১ এর ৩৩ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে, একজন ব্যক্তি একাধিক আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন। আবার ওই আইনেরই ৭০ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে, একাধিক কেন্দ্র থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও প্রতিনিধিত্ব করা যাবে কেবলমাত্র একটি কেন্দ্র থেকে। অর্থাৎ যদি কেউ দুই বা তিনটি আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে সবকটিতেই জয়লাভ করেন তাহলে তাকে যে কোন একটি কেন্দ্র রেখে বাকিগুলি ছেড়ে দিতে হবে।
তবে পরবর্তীতে ১৯৯৬ সালে এই আইনে কিছু বদল আনা হয়েছিল। যেখানে বলা হয়েছে, একজন প্রার্থী যেকোনো দুটি কেন্দ্র থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন। অর্থাৎ আগের নিয়ম অনুযায়ী প্রার্থীরা যেখানে দুয়ের বেশি কেন্দ্র থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সুযোগ পেতেন তা আর পাবেন না। ১৯৯৬ সালের সংশোধনী আইন অনুযায়ী সর্বোচ্চ দুটি কেন্দ্র থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা যাবে। সেই আইনে আর কোন বদল আনা হয়নি।
আরও পড়ুন ? ৩ বারের প্রধানমন্ত্রী, ১২ বারের সাংসদ অটল বিহারী বাজপেয়ীর সম্পত্তি কত!
এখন যদি দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ীর একসঙ্গে তিনটি কেন্দ্র থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার প্রসঙ্গে আসা যায় তাহলে ফিরে যেতে হবে আজ থেকে ৬৭ বছর আগে। সেই সময় অটলবিহারী বাজপেয়ী ভারতীয় জনসংঘের হয়ে ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতেন। ১৯৫২ সালে তিনি লখনৌয়ের উপনির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন এবং সেই নির্বাচনে পরাজিত হন। এরপরই ১৯৫৭ সালের নির্বাচনে একসঙ্গে তিনটি কেন্দ্রে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সিদ্ধান্ত তিনি নিয়েছিলেন।
১৯৫৭ সালের লোকসভা নির্বাচনে অটল বিহারী বাজপেয়ি লখনৌ, মথুরা এবং বলরামপুর কেন্দ্র থেকে ভারতীয় জনসংঘের টিকিটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। তবে সেই প্রতিদ্বন্দ্বিতায় দুটি আসনে পরাজিত হয়েছিলেন অটল বিহারী বাজপেয়ী। লখনউ এবং মথুরা আসন থেকে পরাজয়ের মুখ দেখলেও অবশ্য তিনি বলরামপুর কেন্দ্র থেকে জয়লাভ করেছিলেন। অবশ্য অটল বিহারী বাজপেয়িকে একসঙ্গে তিনটি আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করানোর পিছনে দলের ছিল বিশেষ কৌশল। দলের মূল লক্ষ্য ছিল যেকোনোভাবেই হোক না কেন অটল বিহারী বাজপেয়ীকে সংসদে পাঠানো।