Tollywood actress June Malia also had her first marriage divorce: টলিউড জগতের অন্যতম অভিনেত্রী হলেন জুন মালিয়া (June Malia)। যিনি একাধারে মেদিনীপুরের বিধায়ক হিসেবেও পরিচিত। তবে বর্তমানে লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থী হয়ে লড়ছেন অভিনেত্রী। হাঁপ ফেলার সময় নেই তাঁর। একদিকে অভিনয় অন্যদিকে চলছে নির্বাচনের প্রচার পর্বের কাজ। এই আবহেই প্রকাশ্যে এসেছে তাঁর ব্যক্তিগত জীবনের প্রথমদিকের চরম অশান্তির কথা। আবার পরবর্তীতে কিভাবে তিনি সেই অন্ধকার সময় কাটিয়েছেন তাও তিনি নিজেই জানিয়েছেন। কি হয়েছিল জুন মালিয়ার সাথে? কী কারণে তিনি আবার দ্বিতীয়বার গাঁটছড়া বাঁধলেন?
বর্তমান সময়ে নানান কাজে ব্যস্ত থাকলেও একটা সময় সিঁদুরে মেঘ দেখা দিয়েছিল জুন মালিয়ার (June Malia) জীবনে। নেমে এসেছিল কালো অন্ধকার। যে পরিস্থিতি তৈরির কেন্দ্রবিন্দু হলেন মালিয়ার প্রথম স্বামী সঞ্জীব মালিয়া। যাকে নিজে পছন্দ করে ভালোবেসে বিবাহ করেছিলেন জুন। আর তিনিই পরবর্তীকালে হয়ে উঠলেন জুন মালিয়ার শত্রু। কি করেছিলেন তিনি অভিনেত্রীর সাথে।
বেশ কয়েক বছর আগে এক সাক্ষাৎকারে নিজের এই অন্ধকার জীবনের কথা তুলে ধরেছিলেন জূন। তিনি বলেছিলেন সকলেই অভিনেত্রী জুন মালিয়াকে চেনেন। কিন্তু ব্যক্তিগত জুন মালিয়া ছিলেন অধরা। কেন? এই বিষয়ে অভিনেত্রী খুলে বলেন তাঁর স্কুল জীবন থেকে শুরু করে সংসার জীবনের কথা। তাঁর কথায়, জুন মালিয়া অত্যন্ত রক্ষণশীল পরিবারের কন্যা। পড়াশোনা নাচ এইসব নিয়েই তিনি ব্যস্ত থাকতেন। তাঁকে বন্ধুদের সাথে ঘুরতে যেতে দেওয়া হতো না। দরকারে বন্ধুরাই তাদের বাড়িতে আসতো। বা কোথাও গেলে পুলিশি তদন্তের মতো তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হতো। এতটাই কঠোর নিয়মে চলতে হত জুনকে। তবে সেই সময়ে তিনি নাচকে খুব ভালোবাসতেন। নৃত্যশিল্পী হওয়ার ইচ্ছা ছিল তাঁর।
তারপর হাই স্কুলে পড়াশোনা শুরু করেন জুন মালিয়া। সেই সময় একবার মাসির বাড়ি ঘুরতে গিয়ে পা পিছলে যায় অভিনেত্রীর। সঞ্জীব মালিয়া নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে সেখানে সাক্ষাৎ হয় জুন মালিয়ার। সেই সময় তিনিও সেখানকার নামকরা স্কুলের পড়ুয়া ছিলেন। মূলত প্রথম দেখাতেই প্রেমে পড়েছিলেন জুন মালিয়া। কিন্তু জুনের গ্রাম্য সাজে মোহিত হননি সঞ্জীব। তবে পরবর্তীকালে কলেজে পড়াশোনার সময় ভোল পাল্টে যায় জুন মালিয়ার। কলকাতায় এসে আধুনিক জুনকে দেখে জুনের প্রেমে ডুবে যান সঞ্জীব। কম সময়ের মধ্যেই তারা সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। ২০ বছর বয়সেই গাঁটছড়া বাঁধে জুন। কিন্তু প্রথমে সেই সম্পর্ক মানতে নারাজ জুনের পরিবার। পরবর্তীতে সঞ্জীবের পরিবার দেখে বিবাহ মেনে নেন জুনের বাবা। যিনি একজন ব্যাঙ্কার ছিলেন।
প্রথম প্রথম নতুন জীবন বেশ ভালই কাটছিল অভিনেত্রীর। বিবাহের দু’বছরের মাথাতেই পুত্র শিবেনের জন্ম দেন জুন মালিয়া (June Malia)। তারপর জন্ম দেন কন্যা সন্তান শিবাঙ্গিনীর। কম বয়সে সংসারে ঢুকে জীবনটা বাড়িকেন্দ্রিক হয়ে উঠেছিল জুনের। আর তাঁর কথায়, তাঁর বন্ধুরা যখন আনন্দ মজা করছে, সেই সময় তিনি ফিডিং বোতল ধুচ্ছিলেন ডাইপার পাল্টাচ্ছিলেন। ঠিক এইসবের পরেই জুন মালিয়ার জীবনে নেমে আসে সেই অন্ধকারের ঘনঘটা।
মূলত জুনের প্রথম স্বামী সঞ্জীব মালিয়া কখনোই জুনকে সফলতার দিকে এগিয়ে যেতে সাপোর্ট করেনি। তিনি সবসময়ই জুনকে বলতেন তাঁর দ্বারা কিছু হবে না। তাঁকে যে কোনো কাজেই বাধা দিত। সেই সময়ে পরিচালক সুদেষ্ণা রায়েল দ্বারা কাজের অফার এসেছিল জুনের কাছে। যা শুনে সঞ্জীব বলেছিলেন, জুন অভিনয় করবে? জুনের দ্বারা ওটা হবে না। আর এই নেতিবাচক কথাই জুনকে সাফল্যের দিকে এগিয়ে দিয়েছিল। এই বিষয়ে জুন বলেছিলেন, তাঁর প্রথম স্বামীর সাথে সম্পর্ক নেই বলে যে তিনি নিন্দা করছেন তা নয়, তিনি এমন একজন ছিলেন যে জুনকে কখনোই সাপোর্ট করতেন না। জুনের সাফল্য সহ্য করতে পারত না। কাজের জগতে জুন সাড়া পেলে তিনি বাধা দিত। তবে তিনি থেমে থাকেননি। তিনি সেই সংসার ছেড়ে বাবার কাছে চলে আসেন।
অপরদিকে ঘোর অন্ধকার জুনের জীবনে। একদিকে বাবার ক্যান্সার অন্যদিকে সংসারে অসুখী। সেই সময় বাবার বাড়িতে চলে এলেও তাদের সম্পর্কে সিলমোহর পড়েনি। অপরদিকে ছেলেমেয়েদের দায়িত্ব নিতে অরাজি হন জুনের স্বামী। তখন থেকেই শুরু হয় সিঙ্গল মাদার হিসেবে জুন মালিয়ার লড়াই। সম্পর্ক শেষ করতে চেয়েছিলেন তিনি। অপরদিকে বিয়ের প্রতি বিশ্বাস হারায়নি তাঁর (June Malia)। তিনি নিজে কথা দিয়েছিলেন, ছেলে-মেয়েরা যতদিন না বড় হচ্ছে, না প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে তিনি নিজের জীবন নিয়ে ভাববেন না। সেই কথামতো শিবেন-শিবাঙ্গিনী বড়ো হওয়ার পরেই ২০১৯ সালে দ্বিতীয়বার বিবাহ করেন জুন মালিয়া। দীর্ঘদিনের প্রেমিক সৌরভ চ্যাটার্জির সাথে গাঁটছড়া বাঁধেন অভিনেত্রী। নেটদুনিয়ায় ছড়িয়ে পড়লে বাহবা ঝড় বয়ে যায়। বর্তমানে দ্বিতীয় স্বামীর সাথে সুখ দুঃখকে সঙ্গী করে বাঁচছেন ‘নীল নির্জন’ ছবির সাহসী জুন মালিয়া।